চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

পূর্ব জোয়ারাতে নান্দনিক সুউচ্চ বুদ্ধমূর্তি

নিজস্ব সংবাদদাতা

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১:১১ অপরাহ্ণ

ভ্রমণপ্রিয় বাংলাদেশিরা ছুটি পেলেই ছুটে চলেন প্রকৃতির কোলে, আনন্দে মেতে ওঠেন দেশের সেরা পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে। প্রকৃতির অপরূপের মাঝে চন্দনাইশের পূর্ব জোয়ারাতে দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ বুদ্ধমূর্তি তৈরি হচ্ছে।

 

২০০৩ সালে পূর্ব জোয়ারা গ্রামের উত্তর বিলে বৌদ্ধদের অন্যতম মেডিটেশন শিক্ষা কেন্দ্র বিদর্শন ভাবনা পরিবেন প্রতিষ্ঠিত হয়। হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে প্রতিষ্ঠানটি এখন বিশাল ভাবনা কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর ৪টির অধিক বিদর্শন ভাবনা অনুষ্ঠিত হয়। ১০ দিনব্যাপী প্রতিটি ভাবনায় ৫০-৬০ জন অংশ নেন। এ ভাবনা কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠানের কল্যাণ মিত্র জিনপাল মহাস্থবিরের ঐকান্তিক অনুপ্রেরণায় ও প্রচেষ্ঠায় ভক্তদের সার্বিক সহযোগিতায় ৪ একর জমির উপর ভাবনা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। দৃষ্টি নন্দন নাগরাজ বেষ্টিত দক্ষিণ এশিয়ার সুউচ্চ বুদ্ধমূর্তি নির্মিত হচ্ছে এ কেন্দ্রে। অপরূপ কারুকার্যম-িত অনন্য স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন নাগরাজ বেষ্টিত বুদ্ধমূর্তিটি দ-ায়মান দেশের সর্ববৃহৎ বুদ্ধমূর্তি হিসেবে। ২০১৬ সালে এ বুদ্ধমূর্তিটি নির্মাণকাজ শুরু করে এখনো চলমান রয়েছে। ভারত, বার্মা, থাইল্যান্ডের ২০ জনের অধিক শিল্পীর শৈল্পিক ছোঁয়ার কাজ চলছে বিরামহীনভাবে।

 

সংশ্লিষ্টরা জানালেন, আরো কয়েকবছর লাগবে ৮০ ফুট উচ্চতাসম্পন্ন বুদ্ধমূর্তির কাজ সম্পন্ন হতে। স্থানীয় ব্যবসায়ী বিধান বড়–য়ার আর্থিক সহায়তায় সুউচ্চ নান্দনিক নাগরাজ বুদ্ধমূর্তিটি তৈরি করতে কোটি টাকার অধিক ব্যয় হচ্ছে বলে জানালেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি এ কেন্দ্রে গৌতম বুদ্ধের বিভিন্ন আঙ্গিকে গড়া ২৮টি বুদ্ধমূর্তি স্থাপন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১৪টি বুদ্ধমূর্তি বিভিন্ন ডিজাইনের দৃষ্টিনন্দন আকারে স্থাপন করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই ১৭০ ফুট লম্বা শোয়ানো অবস্থায় বুদ্ধমূর্তি স্থাপন করবেন বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রের অন্যতম ভিক্ষু মৈত্রী পাল থেরো। শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে চন্দনাইশ পৌরসভা সদরে পূর্ব জোয়ারা গ্রামে দৃষ্টিনন্দন সুউচ্চ এ বুদ্ধমূর্তিটি স্বর্ণাভাব দ-ায়মান মূর্তিটি পুরো এলাকাকে সৌন্দর্যম-িত করে তুলেছে।

 

চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ নজরুল ইসলাম চৌধুরী প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। একইভাবে এ ভাবনা কেন্দ্রেও বিভিন্নরকম সহযোগিতা দিয়েছেন এবং আগামীতে আরো বড় আকারের অনুদান প্রদানের আশ্বাস দেন। ভাবনা কেন্দ্রটি এখন শুধু বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের কাছেই নয়, এটি এখন পর্যটকদের কাছেও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠেছে। মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশের নির্মাণশৈলীর আদলে এদেশে বহুসংখ্যক বৌদ্ধবিহার ও মূর্তি নির্মাণ করা শিল্পীরা নাগরাজ বেষ্ঠিত বুদ্ধমূর্তি নির্মাণ কাজ করছেন। এটি শুধু পুণ্য লাভের স্থানই হবে না, সেই সাথে পর্যটকদের কাছেও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। একদিকে পূণ্য লাভ অন্যদিকে চন্দনাইশের সৌন্দর্যকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে স্বপ্ন থেকে এ বাস্তবায়ন বলে জানিয়েছেন, ভাবনা কেন্দ্রের অন্যতম কল্যাণ মিত্র জিনপাল মহাস্থবির।

লেখক: নিজস্ব সংবাদদাতা, চন্দনাইশ

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট