চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫

সর্বশেষ:

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মিলছে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা

নিজস্ব সংবাদদাতা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১২:৪৪ অপরাহ্ণ

উপজেলা পর্যায়ে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবায় বদলে গেছে ৫০ শয্যার পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। একসময় হাসপাতালের অভ্যন্তরে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য থাকলেও ব্যবস্থাপনা কমিটির কঠোর পদক্ষেপের কারণে এখন আগের মতো দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য নেই। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, সন্ধ্যা নামলেই মাদক সেবীদের আনাগোনাসহ নানা বিশৃঙ্খলায় জর্জরিত ছিল হাসপাতালের চিত্র। সেটিও কমে গেছে এখন।

সংশ্লিষ্টরা জানান- পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত, সার্বিক নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু পরিচালনায় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। স্থানীয় রাজনৈতিক ও সমাজসচেতন ব্যাক্তিদের নিয়ে গঠন করেন হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি। পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান উন্নয়নে নিয়মিত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়।

 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পটিয়া উপজেলাসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলা থেকে চিকিৎসা সেবা গ্রহণে ৫০ শয্যার পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন রোগীরা। বহিঃবিভাগে দৈনিক গড়ে ৫ শত রোগী ও জরুরি বিভাগে গড়ে ১৪০ জন রোগী সেবা নেয়। বেড অকুপেন্সি রেইট ১৪৩। উন্নত মানের প্যাথলজি, এক্স-রে, সাতটি বিভাগে নিয়মিত কনসালটেন্সি সেবা ও নিয়মিত সিজার অপারেশন, নরমাল ডেলিভারির সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

 

সরকারিভাবে সরবরাহকৃত ওষুধ বৃদ্ধি ও অন্তঃবিভাগে ভর্তি রোগীর খাবারের মান, নিয়মিত অক্সিজেন সরবরাহসহ নানামুখী স্বাস্থ্য সেবায় অবদান রেখে চলেছে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। পটিয়ার সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত সেবামূলক সংগঠন ‘পটিয়া ফাউন্ডেশন’ এর অর্থায়নে হাসপাতাল গেইটে সার্বক্ষণিক একজন সিকিউরিটি গার্ড, অন্তঃবিভাগে একজন আয়াসহ ৪ জন জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

 

এছাড়া জরুরি বিভাগে সার্বক্ষণিক সেবা প্রদানের সুবিধার্থে একটি আইপিএস প্রদান করা হয়েছে। হাসপাতালের সার্বিক নিরাপত্তায় সিসি ক্যামরা স্থাপন ও সৌন্দর্যবর্ধনে দৃষ্টিনন্দন ফুল বাগান করা হয়েছে। বেসরকারি আধুনিক এম্বুল্যান্স দিয়ে গ্রাম থেকে রোগী আনা নেওয়া করা হচ্ছে। এজন্য পটিয়া ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে একজন এম্বুল্যান্স চালক নিয়োগ করা হয়েছে। বর্তমানে ৫০ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১০০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার জন্য স্থাপনা নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বহিঃবিভাগের বর্তমান ৩ তলা ভবনটি ৬ তলা নির্মাণ করা হবে।

সরকারি এ হাসপাতালের পাশাপাশি পটিয়ার মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় রয়েছে তিনটি আধুনিক বেসরকারি হাসপাতাল। এছাড়াও গত ২২ বছর ধরে ডায়াবেটিস রোগীদের সহজে এবং স্বল্পমূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে পটিয়া ডায়াবেটিস হাসপাতাল। এর মধ্যে মুন্সেফ বাজারস্থ সেন্ট্রাল হাসপাতাল, পটিয়া হাসপাতালের বিপরীতে পটিয়া জেনারেল (পিজি) হাসপাতাল ও শেভরন হাসপাতাল রয়েছে।

 

এছাড়া পৌরসভার বিওসি রোডে পটিয়া ডায়াবেটিস হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন ডায়াবেটিস রোগী কম খরচে চিকিৎসাসেবা সেবা নিচ্ছেন। এ হাসপাতালে ব্লাড সুগার, সিরাম কোলেস্টেরল, সিরাম বিলিরুবিন, লিপিড প্রোপাইলসহ ডায়াবেটিস রোগীদের অন্তত ১৫টি পরীক্ষা করা হয় খুব কম খরচে; মাত্র ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। প্রতিদিন দুজন চিকিৎসকসহ ১৫ জনের কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি দল রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন।

 

পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সব্যসাচী নাথ বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সেবার মান অন্য সময়ের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালের যেকোনো ধরনের সমস্যা সমাধান ও স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছেন।

 

তিনি আরো বলেন, সেবাখাতসহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো দেখা-শুনা করার দায়িত্ব সরকারের একার নয়। এতে স্থানীয় ও সচেতন মহল নানাভাবে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারে। এতে স্বাস্থ্যসেবার অগ্রগতি হয়। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরোও বলেন, আইভিশন সেন্টারে ট্রেনিং প্রাপ্তরা টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে চক্ষু, চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ নেই। এখানেও দুজন চিকিৎসক দেওয়া হলে হাসপাতালের সেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে।

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট