চট্টগ্রাম বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৩

বর্ষায় জলাবদ্ধতা, সেচ মৌসুমে পানি সংকট

রবিউল আলম ছোটন

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১২:৩৭ অপরাহ্ণ

পটিয়া উপজেলার ১৭ ইউনিয়নে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য খাল পলি পড়ে ও কচুরিপানা জমে ভরাট হয়ে গেছে। এতে খালগুলো পানি নিষ্কাশন ও পানি রাখার ক্ষমতা হারিয়েছে। ফলে বর্ষায় জলাবদ্ধতা ও সেচ মৌসুমে পানি সংকটে ফসল আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর তথ্যমতে পটিয়ায় বর্তমানে ৩৭টি খাল নানা কারণে ভরাট হয়ে গেছে। এর মধ্যে ৮টি খাল অতি গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি ভিত্তিতে পুনঃখনন করা প্রয়োজন।

 

বড়লিয়া গ্রামের কৃষক মো. নুরুল আমিন জানান, গত ৭/৮ বছর পূর্বে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ এস্কেভেটর দিয়ে খালগুলো খনন করেছিল। বর্তমানে খালগুলো ড্রেজিং এর অভাবে গত ৩/৪ বছর ধরে পলি ও কচুরিপানা জমে ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে এলাকায় ফসল আবাদ ব্যাহত হচ্ছে।

বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, পটিয়ায় ভরাট হয়ে যাওয়া ৩৭ খাল গুলো হচ্ছে উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের শিকলবাহা সংযোগ খাল, পৌরসভার চাঁনখালী খাল, কুসুমপুরার গরুলুটা খাল, কোলাগাঁওয়ের মোহাম্মদ খাল, ছনহরার মরা খাল, বড়লিয়ার কাটাখালী খাল, ভাটিখাইনের বগাহাড়া খাল, বড়লিয়া খালদা খাল ও কাজির খাল, হাবিলাসদ্বীপের বাদামতল খাল, পৌরসভার রাজমণ্ডী খাল, জঙ্গলখাইনের নন্দী খাল, উপ-কাজির খাল, চৌধুরী খাল ও মহিউল আলম খাল, আশিয়ার মোহন্দরী খাল ও বাথুয়া কাটাখালী খাল, শোভনদণ্ডীর ডোমখালী খাল, হারগেজী খাল, মোরগখালী খাল, মুহরী খাল ও হরনা খাল, কেলিশহরের নাঘাডা খাল, ইশ্বরখাইন খাল ও সোনাইছড়ি খাল, জিরির মালিয়ারা খাল, কচুয়াইয়ের নতুন খাল, খরনার বিশকুমারী খাল, মরা খাল, তেরিংছড়ি খাল, ছনহরার দোলতিয়া খাল, মুরালী খাল ও যুগী খাল, দক্ষিণ ভূর্ষি খানমোহনা খাল, সৈয়দ খাল ও কেচিয়া পাড়া খাল। যা ৩৭ খালের বিভিন্ন অংশে ৭৩.৫০ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন করতে হবে। এর মধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ ৮ খাল হচ্ছে, কুসুমপুরার শিকলবাহা সংযোগ খাল, গরুলুটা খাল, পৌরসভার চাঁনখালী খাল, কোলাগাঁও মোহাম্মদ খাল, ছনহরা মরা খাল, বড়লিয়া কাটাখালী খাল, ভাটিখাইন বগাহাড়া খাল ও বড়লিয়া খালদা খাল।

 

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) দোহাজারী (সওকা) এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাবেদ হোসেন পূর্বকোণকে জানান, পটিয়ায় বিভিন্ন কারণে ভরাট হওয়া ৩৭ খালের বিভিন্ন অংশে কমপক্ষে ৪০-৫০ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন করতে হবে। বরাদ্দ না থাকার কারণে বর্তমানে এটি সম্ভব হচ্ছে না। তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে পটিয়ার সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী অনাবাদি জমি চাষাবাদের আওতায় আনতে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছেন। আশা করি দ্রুত সময়ে তা বাস্তবায়ন হবে।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পটিয়া উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অপু দেব পূর্বকোণকে জানান, জলাবদ্ধতারোধ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের পটিয়ায় ১ হাজার ১৫৮ কোটি টাকার কাজ শুরু হচ্ছে। এ প্রকল্পের অধীনে চাঁনখালী খাল, আশিয়া কেরেঞ্জা খাল, শ্রীমাই খাল, কাজীর খাল, উপ-কাজির খাল, আলম খাল, মীর বাড়ি খালসহ গুরুত্বপূর্ণ ১১টি খাল পুনঃখনন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চাষাবাদসহ বিভিন্নভাবে পটিয়ার কয়েক লাখ মানুষ উপকৃত হবে।

 

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী পূর্বকোণকে জানান, ‘যেসব কারণে পটিয়ার বিভিন্ন এলাকাজুড়ে চাষাবাদ হচ্ছে না তার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে দীর্ঘদিনের পুরনো খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়া। আমি এ নিয়ে স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলেছি। খাল পুনঃখননসহ চাষাবাদ বাধাগ্রস্ত হওয়ার সকল সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের এবং আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

 

লেখক: নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট