যে ভবনে পটিয়া ‘চৌকি আদালতের’ কার্যক্রম চলছে সেটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে ৩৭ বছর আগে। বাঁশের বেড়া, টিনের ছাউনি ও কিছু অংশের পলেস্তার খসে পড়া অর্ধপাকা দেওয়ালের সেই ১৪০ বছরের পুরোনো জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি গণপূর্ত বিভাগ ১৯৮৫ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও এ ভবনেই বিচারকাজ পরিচালনা করেন বিচারক, আইনজীবীসহ আদালতের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। গত কয়েক বছর ধরে নতুন ভবন নির্মাণের কথা শোনা গেলেও ভবন হচ্ছে, হবে এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ এখনো।
১৪০ বছর আগে ১৮৮২ সালে ব্রিটিশ সরকার দক্ষিণ চট্টগ্রামের মহকুমা শহর পটিয়ায় এ ‘চৌকি’ আদালত প্রতিষ্ঠা করে বিচার কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে এটি পটিয়া যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত হিসেবে পরিচিত। পটিয়াসহ মোট ছয়টি আদালতের মধ্যে পটিয়া প্রথম, দ্বিতীয় অতিরিক্ত আদালত এবং বোয়ালখালী, চন্দনাইশ, আনোয়ারা এলাকার মানুষের বিভিন্ন মামলার বিচারকাজ হয় এ আদালতে। ১৯৮৫ সালে গণপূর্ত বিভাগ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। এরপরও ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনেই বিচারকাজ পরিচালনা করে আসছেন বিচারক, আইনজীবীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকারের আমলে তৎকালীন আইনমন্ত্রী ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আদালত ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
তবে সে সময়ের যোগাযোগমন্ত্রী কর্নেল অলি আহমদ (বীরবিক্রম) ওই বরাদ্দ বাতিল করে তাঁর নিজের এলাকা চন্দনাইশের গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের ভবনের জন্য নিয়ে যান। এরপর ২০১০ সালে ২০ কোটি টাকায় ৬ তলা ভবন নির্মাণের একটি প্রস্তাব যায় মন্ত্রণালয়ে। পরে সেটি ১০ কোটি টাকায় তিনতলা ভবন বরাদ্দ হলেও অদৃশ্য কারণে অর্থ মন্ত্রণালয়ে ফাইল আটকে যায়। এ কারণে ভবন নির্মাণকাজ আর শুরু হয়নি।
পটিয়া আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি দীপক কুমার শীল পূর্বকোণকে জানান, জরাজীর্ণ আদালত ভবন সরিয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করার দাবি জানিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট গিয়েছি। বর্তমানে দীর্ঘ জটিলতার অবসান ঘটিয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এর মাধ্যমে আমরা নতুন ভবন পেতে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে ভবনের নকশা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আশাকরি দ্রুততম সময়ে নতুন ভবনের কাজ শুরু হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গণপূর্ত বিভাগ চট্টগ্রামের উপ-সহকারী প্রকৌশলী লিটন মজুমদার পূর্বকোণকে জানান, গত মে মাসে সংশ্লিষ্ট আইন মন্ত্রণালয়ে নতুন ভবন নির্মানের জন্য প্রাথমিক তথ্য পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প প্রস্তুত করা হচ্ছে। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় নতুন ভবন নির্মাণ সংক্রান্তে সিদ্ধান্ত নেবেন।
লেখক : নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া
পূর্বকোণ/জেইউ