চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

ব্যাপক সুফল মিলছে রাঙ্গুনিয়ার কৃষকের

তিন রাবার ড্যামে ভাগ্যবদল

নিজস্ব সংবাদদাতা

১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া, শিলক ও পদুয়া ইউনিয়নে স্থাপিত তিনটি রাবার ড্যাম বদলে দিয়েছে এসব এলাকার কৃষকের ভাগ্য। হাজার হাজার একর অনাবাদি জমি বছরের ১২ মাস এখন চাষাবাদ হচ্ছে। এ ছাড়াও রাবার ড্যামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন মানুষ। এসব রাবার ড্যামের ফলে মৎস্যচাষের অপার সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছে। রাঙ্গুনিয়ার সাংসদ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বিশেষ উদ্যোগে এসব রাবার ড্যাম স্থাপিত হয়েছে।

পারুয়া রাবার ড্যাম : ২০১৫ সালে পারুয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সৈয়দনগর এলাকায় প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে রাবার ড্যাম প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়। রাবার ড্যাম নির্মিত হওয়ার পূর্বে উত্তর রাঙ্গুনিয়ার ৫টি ইউনিয়নের দুই হাজার একর জমি অনাবাদি থাকত। এসব এলাকার জমিতে চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত ছিল ৫ হাজারেরও বেশি কৃষক। এখন অনাবাদি জমিতে কৃষিকাজ ও সবজি চাষাবাদে এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে এই রাবার ড্যাম। এ ছাড়াও রাবার ড্যামের ব্রিজের কারণে পারুয়া ইউনিয়নের সাথে স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া, হোছনাবাদ, লালানগর, ইসলামপুর ও রাজানগর ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়েছে। এর সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য নির্মিত হওয়ার পর থেকে দূর-দূরান্ত থেকে শত শত নারী পুরুষ ছুটে যাচ্ছে।

পদুয়া নাপিত পুকুরিয়া রাবার ড্যাম : উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের বান্দরবান সড়ক ঘেঁষে নাপিত পুকুরিয়া এলাকায় স্থাপিত রাবার ড্যামের সুফল পাচ্ছেন সাধারণ কৃষকরা। ২০১৩ সালে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শিলক খালের পদুয়া ব্রিজঘাটা এলাকায় এই রাবার ড্যাম প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। এর ফলে নাপিত পুকুরিয়া বিল, কইয়াতলা বিল ও দুধপুকুরিয়া বিলের অনাবাদি জমি চাষাবাদ হচ্ছে। ড্যামের আওতায় তিন-চারশ’ একর জমিতে প্রায় একহাজার কৃষক চাষাবাদ করে থাকেন। পানি সঙ্কট না থাকায় বছরের দুই মৌসুমে ধান উৎপাদন করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। এছাড়াও বান্দরবানগামী পর্যটকরা যাত্রাপথে এই রাবার ড্যামের সৌন্দর্য উপভোগে নেমে পড়েন নাপিত পুকুরিয়া রাবার ড্যামে।

শিলক রাবার ড্যাম : উপজেলার শিলক ইউনিয়নের শিলক খালের মুখ এলাকায় ২০০৭ সালে রাবার ড্যাম প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। পানির অভাবে শিলক ও পদুয়া ইউনিয়নে তৈলাভাঙা বিল, নারিশ্চা বিলসহ শতশত হেক্টর জমি শুষ্ক মৌসুমে অনাবাদি পড়ে থাকত। রাবার ড্যামের কারণে এসব অনাবাদী বিল এখন আবাদের আওতায় এসেছে। বছরের দুই মৌসুমে কৃষকরা রাবার ড্যামের পানিতে চাষবাদ করতে পারছে। শতশত একর অনাবাদি জমি চাষযোগ্য হয়েছে। সঠিক সময়ে পানি সেচ সরবরাহ করায় কৃষি ফলন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাবার ড্যাম স্থাপিত হওয়ার পর ওই এলাকার কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটতে শুরু করছে। এর সৌন্দর্য উপভোগেও দূর-দূরান্তের মানুষ ছুটে আসেন এই রাবার ড্যামে।

 

লেখক : নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গুনিয়া

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট