চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

উন্নয়নের অনন্য নজির রাউজানে

জাহেদুল আলম

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ৩:১৬ অপরাহ্ণ

অভূতপূর্ব অবকাঠামো উন্নয়নে এগিয়ে চলছে রাউজান। সমৃদ্ধ রাউজান ও স্বপ্নের মডেল উপজেলা গড়ার লক্ষ্যে বিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলছে এ উপজেলায়। বর্তমান সরকারের আমলে রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালভার্ট, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা-সংস্কৃতি, বিদ্যুৎ, সামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে এ উপজেলায় হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ইতিপূর্বে বহু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। চলমান রয়েছে আরো হাজার হাজার কোটি টাকার অসংখ্য ছোট, বড় উন্নয়ন প্রকল্প। স্থানীয়রা বলছেন, এলাকার সাংসদ, রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী রাউজানকে যে মডেল উপজেলায় পরিণত করার স্বপ্ন লালন করছেন, তার ইতিপূর্বে নানা উন্নয়ন কর্মকান্ডে বহুদূর এগিয়ে গেছে। বাস্তবায়িত দৃশ্যমান বড় বড় প্রকল্পের মাধ্যমে রাউজান এখন চট্টগ্রাম এবং সারাদেশে অন্যরমক এক উপজেলার পরিচিতি লাভ করেছে। স্থানীয়রা বলেন ‘রাউজান এখন সন্ত্রাসীদের দাপুটে এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। খুন, চাঁদাবাজি, অপহরণ, ডাকাতিসহ নানা অপরাধের কারণে ভীতিকর জনপদ ছিল রাউজান। এক সময় অপরাধীদের নিরাপদ অভায়রণ্য বলা হতো এ উপজেলাকে। সেই ১৯৯৬-৯৭ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে সেই অশান্ত জনপদটি শান্তির জনপদে পরিণত হয়েছে। রাউজানের মধ্যে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)’র অবস্থান হওয়ায় এ উপজেলার মান-মর্যাদা, পরিচিতি সারাদেশে আরো বিস্তৃত হয়েছে। রাউজান উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দেশের একমাত্র মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদার মৎস্য ভান্ডার পরিচিতি আরো বাড়িয়েছে।

 

এলাকার সাংসদ এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন বরাদ্দ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়ে আসার পাশাপাশি নিজের ক্যারিশমোটিক নেতৃত্ব দিয়ে রাউজানকে নানাভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। রাউজানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, অবকাঠামো, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, কৃষিখাতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতা নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেছেন। তার মতে মডেল রাউজান বাস্তবায়নের কাজ বেশির ভাগই হয়ে গেছে এ উপজেলায়। বাকি বাস্তবায়নাধীন ৩০-২০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হলেই রাউজানের চেহেরা আরো পাল্টে যাবে।

 

বিভিন্ন তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, রাউজান ও পার্বত্য এলাকার মানুষের শহর-গ্রাম যাতায়তের বড় মাধ্যম চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়ক ফোর লেনে উন্নীতকরণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ খাতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৬শ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে রাউজান সদর টু পাহাড়তলী হাফেজ বজলুর রহমান সড়ক প্রশস্তকরণ, অদুদিয়া সড়ক, শহীদ জাফর সড়ক, দোস্ত মোহাম্মদ সড়কসহ বড় সড়ক। যাতে ব্যয় হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা।

 

আবাসন খাতকেও গুরুত্ব দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ পাশে দুটি পিংক সিটি। সেখানে প্রায় ৮শ প্লট বরাদ্দপ্রাপ্তদের হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

জানা যায়, রাউজানে নির্মিত হয়েছে আলাদা ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র (আরপিসিএল), রাউজান ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, নতুন থানা ভবন, নতুন হাইওয়ে থানা ভবন, উপজেলা সার্ভার সেন্টার, ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদের নতুন কার্যালয় (ভবন), উপজেলা পরিষদের নতুন ভবন, শিল্পকলা একাডেমি, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, নবীন সেন কমপ্লেক্স, মাস্টার দা সূর্যসেন কমপ্লেক্স, মাস্টার দা সূর্যসেন স্মৃতি ভবন, পাঠাগার ও চত্বর, ২০-৩০টি নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাউজান কলেজ ও রাউজান আর.আর.এ.সি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ, একেএম ফজলুল কবির চৌধুরী অডিটোরিয়াম ভবন নির্মাণ, আধুনিক সুবিধা সংবলিত ডাক বাংলো, রাউজান মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, উপজেলা স্মৃতি সৌধ, রাউজান পৌরসভা ভবন, বেনবেইস ভবন, শেখ কামাল কমপ্লেক্স প্রায় দুই হাজার পাকা সড়ক, হালদা ব্রিজসহ ৮টি বড়  ও শতাধিক ব্রিজ, কালভার্ট, বঙ্গবন্ধু আইসিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, হালদা নদী নিয়ে শত শত কোটি টাকার প্রকল্প ও বিপুল পরিমাণ মাছের পোনা অবমুক্তকরণ, প্রবাসী কল্যাণ ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, হাফেজ বজলুর রহমান সড়কে ১৬ টি ব্রিজ নির্মাণ, চুয়েট বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন সম্প্রসারণ, ৩১ শয্যা বিশিষ্ট সুলতানপুর ভবন সম্প্রসারণ, ১২টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপজেলা সরকারি ষ্টেডিয়াম নির্মাণ ও বিভিন্ন মাঠ সংস্কার, অর্ধশতকের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ, অসংখ্য গভীর ও অগভীর নলকূপ স্থাপন, ১৭ সালে ১ ঘন্টায় ৪ লাখ ৮৭ হাজার ফলদ চারা রোপণ, ৫৫০০ স্কাউট এবং গার্ল গাইটসের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা, রাউজান উপজেলাকে স্কাউটিং উপজেলা হিসেবে রূপান্তর, শত শত সোলার সড়ক বাতি স্থাপন, শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিতকরণ, গহিরায় বঙ্গবন্ধু পাঠাগার ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ, পূর্বগুজরা তদন্ত কেন্দ্র, চিকদাইর পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ, বিভিন্ন স্নাতক পর্যায়ের মহাবিদ্যালয়কে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে উন্নীতকরণ, চুয়েটে আইটি পার্ক স্থাপন, রাউজান কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপন, রাউজান টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন, কদলপুরে ১০ শয্যা হাসপাতাল, বিভিন্ন ভূমি অফিসের নতুন ভবন নির্মাণ, রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের কার্যালয় স্থাপন   (বাস্তবায়নাধীন), গহিরা বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, রাউজান পিংক সিটির এম.ভি.এ বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র স্থাপন, রাউজান (পূর্বগুজরা) গ্রিড উপকেন্দ্র স্থাপন, গহিরায় বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন (বাস্তবায়নাধীন), অটিজম কেন্দ্র, শিশু শোধানাগার, উপজেলা মডেল মসজিদ প্রকল্প, রাউজান ঢালারমুখ এলাকায় শিল্পনগরী, ট্রমা সেন্টার। এছাড়া বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম থেকে চুয়েট, কাপ্তাই পর্যন্ত রেল লাইন প্রকল্প, চুয়েটে আইটি ভিলেজ,

 

সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, মুক্তমঞ্চ, লাইব্রেরী, অডিটোরিয়া প্রকল্প, উপজেলা স্পোটর্স একাডেমি, দক্ষিণ রাউজান থানা, দক্ষিণ রাউজান খাদ্য গুদাম, রাউজান ইকোপার্ক, দক্ষিণ রাউজান হাইওয়ে থানা, দক্ষিণ রাউজান ফায়ার বিগ্রেড ট্রেনিং সেন্টার, রাউজান হিমাগার, কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, হালদা নদীর উপর রেল সেতু, বিআইএএম প্রকল্প, ১শ একর জমির উপর বীজ উৎপাদন খামার প্রকল্প, দক্ষিণ রাউজানে শিশু-কিশোর সংশোধানাগার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ নতুন অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।

 

এ প্রসঙ্গে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি বিভিন্ন জনসভায় বলেছেন ‘রাউজানকে একটি মডেল উপজেলা গড়াই আমার স্বপ্ন। এ লক্ষ্যে নিয়ে কাজ করছি। উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল বলেন ‘এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির সুদক্ষ নেতৃত্বে রাউজানের চেহেরা পাল্টে গেছে।’

 

রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবদুল ওহাব বলেন ‘ফজলে করিম এমপির নেতৃত্বে রাউজান আওয়ামী লীগ  সুসংগঠিত। তার উন্নয়ন কর্মকান্ডের সারথি রাউজান আওয়ামী লীগ।’

 

পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ বলেন ‘ফজলে করিম এমপির নেতৃত্ব, পরামর্শ, দিক নির্দেশার কারণে রাউজান পৌরসভা এখন নান্দনিক পৌরসভায় পরিণত হয়েছে। মানুষ এখন যেখানে, সেখানে ময়লা ফেলার অভ্যাস বদলে ফেলেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুস সামাদ সিকদার বলেন ‘এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির দিক নির্দেশায় রাউজান এখন অনেক সুন্দর।’

 

ক্রীড়া সংগঠক সুমন দে বলেন ‘ক্রীড়া ক্ষেত্রেও রাউজান এখন মডেল। প্রতিটি স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠানে খেলার যথেষ্ট মাঠ রয়েছে।’         

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট