চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নির্মাণ কাজ শুরু হল না কালুরঘাট সেতুর

নিজস্ব প্রতিবদক

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১২:০৫ অপরাহ্ণ

বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসনের বর্ষীয়ান পার্লামেন্টারিয়ান মাঈনুদ্দিন খান বাদলের পর কালুরঘাট সেতুর কথা বলতে বলতে ইহকাল ত্যাগ করলেন একই আসনের সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদও। গত রবিবার রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। কালুরঘাটে নতুন সেতু দেখা হল না এই দুই সাংসদের।

 

২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাদলের মৃত্যুর পর ওই আসনে সাংসদ নির্বাচিত হন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমদ। কালুরঘাটে নতুন সেতুর কাজ শুরু না হলে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন বাদল।

 

সেই সেতু দেখে যেতে পারেননি এই জাসদ নেতা। মৃত্যুর পর বাদলের এই ‘শেষ ইচ্ছা’র কথা চট্টগ্রামে তার রাজনৈতিক বন্ধু-প্রতিপক্ষ এমনকি সাধারণ মানুষের আলোচনায় ছিল। প্রায় ৯০ বছরের বেশি বয়সী বর্তমান সেতুর স্থলে একটি নতুন সেতুর দাবিতে সংসদে সোচ্চার ছিলেন বাদল। সেতু নির্মাণের দাবিতে আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে এবং বিভিন্ন সময় নানা বক্তব্য দিয়ে তিনি নিজের ক্ষোভ-আক্ষেপের কথাও জানাতেন।

 

২০১৯ সালের ৮ অক্টোবর বায়েজিদ সবুজ উদ্যান উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে বাদল বলেছিলেন, কালুরঘাট নিয়ে বলতে বলতে আমার গলা বন্ধ হয়ে গেছে। নেত্রী ডেকেছিলেন, আমরা দু’জনই গিয়েছিলাম। ‘নেত্রী বললেন- আমি করব, করব, করব। আমি বললাম- আমি এটা বলতে পারব না, আমার কথা মানুষ বিশ্বাসও করে না। নেত্রী বললেন, মোশাররফ সাহেব আপনি যান। আপনি গিয়ে বলেন এই ব্রিজটা আমি করে দিব।’

 

ওই অনুষ্ঠানে বাদল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কেন কালুরঘাট সেতু প্রায়োরিটি কনর্সান পেল না। বাংলাদেশে এমন ব্রিজও হয়েছে যেটার উপর দিয়ে গরুর গাড়িও যায় না। এটাতে চোখ পড়ল না কেন? ভেরি ইমর্পটেন্ট স্ট্র্যাটেজিক ব্রিজ। আমাদের সমস্যা দক্ষিণ দিক থেকে।

 

রোহিঙ্গারা মুখ ভেঙচায়। মিয়ানমার মুখ ভেঙচায়। এই ব্রিজটা থাকলে আওয়ার ফোর্সেস ক্যান স্মুথলি মুভ। কেন এটা পরিকল্পনায় আসে না?’ তবে ডিসেম্বরে আর সংসদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়নি বাদলকে। তার আগে তিনি পৃথিবী থেকেই পদত্যাগ করেছেন।

 

২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে উপ-নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে প্রথমবারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মোছলেম উদ্দিন আহমদ। নির্বাচনের আগে তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা ছিল, নির্বাচিত হলে এক বছরের মধ্যেই কালুরঘাট সেতুর নির্মাণ কাজ করা শুরু করবেন তিনি।

 

এমনকি গত বছরের ৪ ডিসেম্বর পলোগ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরুর দাবি জানিয়ে সেতুটির নাম বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের নামে নামকরণের দাবিও জানান তখন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, রেল মন্ত্রণালয়ে ব্যাপক দৌড়ঝাঁপের পরও সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। বরং সেতুটির ওপর দিয়ে কক্সবাজারে ট্রেন নিতে এখন সংস্কারের দিকে যাচ্ছে রেলওয়ে।

এদিকে, সংস্কার কাজ শুরুর আগেই কালুরঘাট সেতুর ওপর চাপ কমাতে কর্ণফুলী নদীতে যানবাহন পারাপারের জন্য দু’টি ফেরি চালুর কাজ এগিয়ে নিচ্ছে সওজ। গত বছরের আগস্টে কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান নতুন সেতুর একটি নকশা তৈরি করে, যাতে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দেন। নতুন এই নকশা চূড়ান্ত হলেও ২০২৫ সালের আগে নির্মাণকাজ শুরুর সম্ভাবনা নেই।

 

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট