চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

পর্যাপ্ত পানি পাওয়ায় আগাম বীজতলা তৈরি

গুমাই বিলে বোরো আবাদ শুরু

৩৪৩৫ হেক্টর জমিতে ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবার আশা

ইসলাম জিগার, রাঙ্গুনিয়া

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৬:৪৬ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের শস্য ভাণ্ডার খ্যাত রাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিলে বোরো ধানের চারা রোপণে বেড়েছে কৃষকের ব্যস্ততা।

উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার একাংশ জুড়ে তিন হাজার পাঁচশ হেক্টরের বিশাল এ মাঠের অবস্থান। এই বিল থেকে আমন ঘরে তোলার পর শীত উপেক্ষা করে বোরো চাষে নতুন করে স্বপ্ন বুনতে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা।

 

কৃষকরা জানান, পর্যাপ্ত পানি পাওয়ায় কৃষকরা এবার আগাম বীজতলা তৈরি করেছিলেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গুমাই বিলে এবার বীজতলার কোনো ক্ষতি হয়নি। চারা রোপণ শুরু হয় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেকটা আগেভাগেই। তাই বিলে চলছে বোরো ধানের চারা রোপণের মহোৎসব।

কৃষকরা জানায়, বোরো চাষের গুরুত্বপূর্ণ সময় পৌষ-মাঘ। এ দুই মাস বোরো জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে হয়। চারা রোপণে কুয়াশা চাষীদের দমাতে পারে না। তাই সারাদেশের মত গুমাই বিলের কৃষকরাও ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করছেন। গুমাই বিলের কদমতলী, পূর্ব ও মধ্য মরিয়মনগর এবং চন্দ্রঘোনা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শীতের সকালের মিঠে-কড়া রোদে বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন কৃষক। পাশের জমিতে চলছে রোপণ, কেউ কেউ জমির আইল বাঁধছেন।

 

পানির সেচের পর জমি প্রস্তুত করছেন কেউ কেউ। জমিতে বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কথা হয় চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের হাবীবের গোট্টা এলাকার বাসিন্দা গুমাই বিলের কৃষক আবদুস সালাম সওদাগরের সাথে। তিনি বলেন, ‘এবার পর্যাপ্ত পানি পাওয়ার কারণে অনেকটা আগাম চারা রোপণ করা সম্ভব হয়েছে। এখনো পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে সেচযন্ত্র পুরোদমে চলছে। আমার দুই কানি ৭ গণ্ডা জমির প্রায় পুরোটায় চারা রোপণ হয়ে গেছে।

এবার বাম্পার ফলনের আশা করছি।’ গুমাইবিল পানি ব্যবস্থাপনা এসোসিয়েশনের সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে পানি সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে না। পর্যাপ্ত পানিতে সেচের ফলে এবার বোরো ফলন ভালো হবে। কম পানিতে সেচের কারণে চাষাবাদে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সেজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা সবসময় তদারকি করছেন।

 

গত বছরের চেয়ে এবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তৎপরতা বেশি। তিনি আরো বলেন, বিলে পাকা স্থাপনা নির্মাণ রোধ করা গেলে পানি সেচের জন্য পানি নিষ্কাশনে বাধা থাকবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়ায় ৫২ কিলোমিটার খাল খননে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এই বরাদ্দে গুমাই বিলের উন্নয়নে রাস্তা, কালভার্ট নির্মাণের পাশাপাশি খাল খননের ফলে গুমাই বিল পাল্টে যাবে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার বলেন, গেল মৌসুমে তিন হাজার চারশত পঁয়ত্রিশ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। 

এবারও তা-ই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ বিলে চাষ করেন প্রায় আট হাজার কৃষক। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কারিমা আক্তার বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গুমাই বিলে এবার বীজতলা ভালো হয়েছে। কৃষকরা প্রণোদনার বীজের চারাও সব রোপণ করেছে। তাছাড়া পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ হচ্ছে। উন্নতজাতের ধানের বীজ ব্যবহার করায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে আশা করছি।

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট