কক্সবাজারের পেকুয়ায় মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে গিয়ে সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ নুরীকে (৩৭) হত্যাচেষ্টা চালিয়েছে দুবৃর্ত্তরা। এ সময় হামলায় ওই আওয়ামী লীগ নেতাসহ ২ জন আহত হয়েছে। পুলিশের জাতীয় সেবা ত্রিপল নাইনে ফোন করে বাঁচানোর আকুতি জানালে মুহূর্তের মধ্যে পেকুয়া থানা পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা দ্রুত সটকে পড়ে।

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরিণাফাড়ি কবরস্থান সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

আহতরা হলেন- হরিণাফাড়ি গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড শাখার বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ নুরী (৩৭) ও একই এলাকার মৃত বজল আহমদের ছেলে জামাল হোসেন (৪৮)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন দুপুরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ নুরীকে ফোন করে ডেকে আনেন একই ইউনিয়নের সিকদারপাড়ার মৃত শামশুল আলমের ছেলে তারেকুল ইসলাম। এ সময় মামুনুর রশিদ নুরী কলেজ গেট চৌমুহনীতে নিজ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নুরী এন্টারপ্রাইজ নামক কম্পিউটারের দোকানে বসেছিলেন। তারেকের ফোন পেয়ে মামুনুর রশিদ চৌমুহনী থেকে হরিণাফাড়িতে পৌঁছেন। এ সময় অতর্কিত তার ওপর হামলাসহ প্রাণনাশের চেষ্টা চালানো হয়। তার আর্তচিৎকারে প্রত্যক্ষদর্শী হরিণাফাড়ির বজল আহমদের ছেলে জামাল হোসেন উদ্ধার করতে যান। তারেকসহ ১৫-২০ জন দুবৃর্ত্ত তাকেও পিটিয়ে আহত করে।

আহত মামুনুর রশিদ নুরী জানান, ত্রিপল নাইনে ফোন করলে পুলিশ এসে আমাকে প্রাণে রক্ষাসহ উদ্ধার করে। তারেকের নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে। কিশোর গ্যাং নিয়ে তারেক দীর্ঘদিন ধরে এখানে চাঁদা আদায় ও দখল বেদখলে লিপ্ত রয়েছে। জমিদার বাড়ির রিদুয়ানুল হক তারেকের বিরুদ্ধে দুটি চাঁদাবাজি মামলা রুজু করে। একটির তদন্ত করছে পিবিআই। আমি এ একটি মামলার স্বাক্ষী। স্বাক্ষীকে খুনের মিশনে নেমেছে তারেক। হাতে কাটা বন্দুক নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়। দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলিও বর্ষণ করে।

৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি দিদারুল হক সিকদার বলেন, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীর হামলার শিকার হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা মামুনুর রশিদ নুরী।

মামুনের স্ত্রী উম্মে হাবিবা বলেন, তারেকের বিরুদ্ধে নাশকতা, হত্যা ও ধর্ষণ চেষ্টা, চাঁদাবাজিসহ অনেক মামলা আছে। একটি মামলায় স্বাক্ষী হওয়ায় আমার স্বামীকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়।

মামুনের মা আয়েশা বেগম জানান, আমার ছেলেকে লোকজনসহ পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে।

সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজম খান জানান, বিষয়টি আমরা রাজনৈতিকভাবে উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দসহ প্রশাসনকে জানিয়েছি। এটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। হামলাকারীদের অবশ্যই দ্রুত সময়ে আইনের আওতায় নিয়ে আসাসহ অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি করছি।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর হায়দার জানান, বিষয়টি জেনে পুলিশ পাঠিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্বকোণ/জাহেদ/মামুন/পারভেজ