চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অপহরণ করে মুক্তিপণের দাবিতে নির্যাতন করতো তারা

রাউজান সংবাদদাতা

১০ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৮:০০ অপরাহ্ণ

বিভিন্ন কৌশলে মানুষকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবিসহ নির্যাতন করতো একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। এরকমই রাউজানের এক যুবককে অপহরণপূর্বক মুক্তিপণ দাবি, নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় থানায় মামলার প্রেক্ষিতে অভিযানে নামে পুলিশ।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এ চক্রের ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- রাউজান পৌর এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সুলতানপুর এলাকার শাহ আলম কন্ট্রাক্টর বাড়ির শাহ আলম কন্ট্রাক্টরের মেয়ে ইসমত আরা ইনা (২৬), একই উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের এয়াছিননগর এলাকার কারিগর বাড়ির নুরুল আলমের ছেলে মো. রাসেল (৩২), ফটিকছড়ি উপজেলার জাফতনগর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওর্য়াডস্থ ফতেহপুর গুল মোহাম্মদ তালুকদার বাড়ির মৃত আবু তাহেরের পুত্র মো. বেলাল (৩৬)। বেলালের বিরূদ্ধে এর আগেও ফটিকছড়ি থানায় মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

 

জানা যায়, অপহৃত যুবক মো. নুর উদ্দিন খান মুন্না গত ৫ জানুয়ারি বিকাল ৪টার দিকে মাইজভান্ডার দরবার শরীফ যাওয়ার উদ্দেশ্যে রাউজান উপজেলার গহিরা চৌমুহনী সিএনজি স্টেশন থেকে একটি সিএনজি ট্যাক্সিতে উঠেন। কিছু দূর যাওয়ার পর অজ্ঞাতনামা একজন মহিলা উঠেন ওই গাড়িতে। এসময় পরিচিত হওয়ার জন্য মহিলাটি যুবকের সাথে কথা বলতে শুরু করে এবং এক পর্যায়ে মহিলাটি জানতে চায় তিনি কোথায় যাবেন। গন্তব্যের কথা বলার পর মহিলাটিও তার বাড়ি ওইদিকে বলে জানায় এবং পারিবারিক সমস্যার কথা বলে এক পর্যায়ে কৌশলে যুবকের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

সিএনজি ট্যাক্সি আরো কিছু দূর যাওয়ার পর রাউজানের দলইনগর এলাকা থেকে গায়ে জ্যাকেট ও জিন্স প্যান্ট পড়া হালকা-পাতলা গড়নের চক্রের অপর একজন যাত্রীবেশে গাড়িতে উঠে। তখন মহিলাটি তার মোবাইল ফোনে বিভিন্ন লোকের সাথে কথা বলতে থাকে। পরে সিএনজি ট্যাক্সিটি রাউজানের নোয়াজিষপুর ইউপির মো. তকির হাট বাজারের দক্ষিণ পাশে পৌঁছালে পেছন থেকে ৩টি মোটরসাইকেলযোগে অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন এবং সামনে থেকে ৩টি মোটরসাইকেলযোগে অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন এসে সিএনজিট্যাক্সির সামনে ও পেছনে দাঁড়িয়ে গতিরোধ করে যুবকটিকে এলোপাতড়ি কিল, ঘুষি, লাথি মারতে থাকে। এতে তার বুকে, পিঠে, কোমরে, তলপেটে জখম হয়। পরে যুবককে মুখ বেঁধে একটি বাড়িতে নিয়ে আটকে রেখে পুনরায় মারধর করে চক্রের সদস্যরা।

 

রাত ৮টার দিকে চক্রের একজন ফোন কেড়ে নিয়ে ২০ হাজার টাকা বিকাশে আনতে বলে। এতে চাচার সাথে যোগাযোগ করে ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পর পুনরায় মারধর করে এবং ঘটনার কোন প্রকার আইনি ব্যবস্থা নিলে হত্যা করে লাশ গুম করবে বলে ভয় ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেয়। পরে পুলিশ গ্রেপ্তারের পর ৩ আসামিকে শনাক্ত করে ওই যুবক।

তিনি জানান, মহিলাটির সাথে তার বিভিন্ন ছবি তুলে ব্লাকমেইল করবে বলেও ভয় দেখায় তারা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ্ আল হারুন। পূর্বকোণকে তিনি বলেন, ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠনো হয়েছে। চক্রের বাকি সদস্যদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

 

পূর্বকোণ/জাহেদ/মামুন/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট