চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার আসছেন আজ

আরফাতুল মজিদ, কক্সবাজার

৭ ডিসেম্বর, ২০২২ | ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (বুধবার) পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আসছেন। এ উপলক্ষে সৈকতের লাবণী পয়েন্টের কাছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রীর সভামঞ্চকে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বিকালে ভাষণ দেবেন তিনি। মঞ্চসজ্জার কাজও শেষ। নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুরোপুরি নিশ্চিত করা হয়েছে।

 

প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে কেন্দ্র করে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান। পর্যটন শহরসহ মেরিন ড্রাইভ এলাকায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রয়েছে কঠোর নজরদারি। এজন্য কক্সবাজার জেলা পুলিশের বাইরে বিভিন্ন জেলা থেকে পুলিশ সদস্য আনা হয়েছে। একই সঙ্গে অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করছেন।

 

পুলিশ সুপার জানান, বুধবার (আজ) সকালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের ইনানী-পাটোয়ারটেক সৈকতে চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নৌশক্তি প্রদর্শন মহড়া-২০২২-এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন বিকালে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের সফরকে ঘিরে পুরো শহর সাজানো হয়েছে। তাকে স্বাগত জানিয়ে টাঙানো ব্যানার-ফেস্টুন ও বিলবোর্ড-পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহরের বিভিন্ন সড়ক ও উপসড়ক। লাবণী পয়েন্ট সড়কে বসানো হয়েছে বড় বিলর্বোড। ভাঙাচোরা সড়কের সংস্কার, ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, সড়কে লাইটিং ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে সমানতালে। অসম্পন্ন প্রধান সড়কের কাজও কোনমতে শেষ করা হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে শহরের কলাতলীর হাঙর ভাস্কর্য মোড় পর্যন্ত পাঁচ-ছয় কিলোমিটার সড়কে দুই শতাধিক তোরণ তৈরি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনের একদিন আগে থেকেই বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সমাগম শুরু হয়ে গেছে। গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় খণ্ড খণ্ড মিছিল দেখা গেছে। প্রচারণা, মিছিল, শোডাউনে পুরো শহর মেতে উঠেছে। প্রচারণার গাড়িতে চলছে স্বাগত গান।

 

গতকাল (মঙ্গলবার) বিকালে প্যানেল মেয়র মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাগত মিছিল বের করা হয়। বিশেষ করে সন্ধ্যাবেলায় কলাতলী মোড় থেকে বিশাল একটি মিছিল শুরু হয়। যাদের সবার গায়ে লাল গেঞ্জি ও মাথায় ছিল ক্যাপ। তারা বহন করেছে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী ও এমপি জাফর আলমের ছবি সম্বলিত প্লেকার্ড, ব্যানার। মিছিলের বহরটি কলাতলী হয়ে লাবণী পয়েন্ট ঘুরে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

 

প্রকল্প উদ্বোধন :
এদিকে সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগের ২৮টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং ৪টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ২৮ প্রকল্পে এক হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ভিত্তিপ্রস্তরযোগ্য ৪ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৫৭২ কোটি টাকা।

 

কক্সবাজারবাসীর ১১ দাবি :
কক্সবাজার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সংযুক্তিকরণ, কক্সবাজারের সাথে মহেশখালী উপজেলার সংযোগ সেতু ও বাঁকখালী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ, কুতুবদিয়া-মগনামার মধ্যে ফেরি সার্ভিস চালুকরণ, কক্সবাজার পর্যটন গবেষণা ইনস্টিটিউট, চার লেনের মেরিন ড্রাইভ, ছয় লেনের কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কক্সবাজার সিটি কর্পোরেশন, কক্সবাজার সিটি কলেজকে সরকারিকরণ, চকরিয়া উপজেলার মাতামুহুরীকে পৃথক উপজেলা ঘোষণা, ঝিনুক ব্যবসার সাথে জড়িত উচ্ছেদকৃত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন ও স্থায়ী আধুনিক ঝিনুক মার্কেট নির্মাণ।

 

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, সভাস্থলে নৌকা আকৃতির মূলমঞ্চ প্রস্তুত। সঙ্গে প্রস্তুত আছে ৪টি উপমঞ্চ। সেখানে কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা আলাদা অবস্থান নেবেন। একই সঙ্গে উদ্বোধন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য আলাদা মঞ্চ প্রস্তুুত রয়েছে।

 

আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি :
দলীয় সভাপতিকে বরণ করতে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান। তিনি জানান, কেবল সভাস্থল শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম নয়; এর আশপাশে কক্সবাজার শহরজুড়ে হবে জনারণ্য। এবারের জনসভায় ৫ লাখ মানুষের জমায়েত হবে। ফলে শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম ছাড়াও সৈকতের লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, বাহারছড়ার মুক্তিযোদ্ধা চত্বর, হলিডের মোড়, শহীদ সরণী এলাকা, কলাতলীর হোটেল-মোটেল জোন হয়ে কলাতলীর ডলফিন মোড় পর্যন্ত মানুষের জমায়েতের জন্য প্রস্তুত। পুরো এলাকায় দুই শতাধিক মাইকও রাখা হয়েছে।

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট