চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মেরামত করা না গেলে নির্মূলের দাবি ৪ ইউনিয়নবাসীর

সীতাকুণ্ডে অকেজো স্লুইস গেটে জনভোগান্তি

সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকুণ্ড

২৫ নভেম্বর, ২০২২ | ৬:৩৯ অপরাহ্ণ

স্লুইস গেটটি নির্মাণ করা হয়েছিলো বর্ষা মৌসুমের পানি আটকে রেখে শুকনো মৌসুমে চাষের জমিতে পানি সরবরাহ করতে। কিন্তু সেই স্লুইস গেট দেড় যুগ ধরে অকেজো।

মাটি থেকে কিছুটা উপরে উঠে গেটটি অকেজো হয়ে যাওয়ায় পানি আটকানো যায় না। আবার অতিরিক্ত ঢলের সময় দ্রুত পানি সাগরের দিকে নামতেও পারে না। পানি বাধা পেয়ে উপচে পড়ে সৈয়দপুর, বারৈয়াঢালা, মুরাদপুর ও পৌরসভার শিবপুরসহ বিভিন্ন এলাকায়। এতে চারটি ইউনিয়নের হাজার হাজার ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়ে লাখো মানুষ।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে এলজিইডি’র উদ্যোগে উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের বসরতনগর ছোটকুমিরা খালের উপর নির্মাণ করা হয় স্লুইস গেট। সেসময় এতে ব্যয় হয়েছিল ১৯ লাখ ২১ হাজার ৫৯৬ টাকা। এটি নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিলো ঐ খাল দিয়ে বর্ষার শেষ দিকে পাহাড়ি ঢলের পানি আটকে রেখে শুকনো মৌসুমে সেই পানি আশপাশের হাজার হাজার একর কৃষি জমিতে সরবরাহ করা। সরেজমিনে ঐ খাল এলাকায় গিয়ে এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই একটি স্লুইস গেট এখন চারটি ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগের কারণে পরিণত হয়েছে।

সৈয়দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম নিজামী বলেন, ছোটকুমিরা খাল দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি সাগরে চলে যেত। শুকনো মৌসুমে এই এলাকায় পানির অভাবে ধান-সবজি কিছুই চাষ করা যেতো না। তাই বর্ষায় পানি আটকে শুকনো মৌসুমে কৃষিজমিতে সরবরাহের জন্যই এ স্লুইস গেটটি নির্মাণ করা হয়েছিলো। কিন্তু এখন হয়েছে উল্টোটা।

 

মাটি থেকে কিছুটা উপরে উঠে গেটটি অকেজো হয়ে যাওয়ায় পানি আটকানো যায় না। আবার অতিরিক্ত ঢলের সময় দ্রুত পানি সাগরের দিকে নামতেও পারে না। পানি বাধা পেয়ে উপচে পড়ে সৈয়দপুর, বারৈয়াঢালা, মুরাদপুর ও পৌরসভার শিবপুরসহ বিভিন্ন এলাকায়। আমরা বহুবার এই স্লুইস গেটের কথা বলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না।

গেটের পাশের এক কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, এই স্লুইস গেটটি এখন আমাদের কান্নার প্রধান কারণ। প্রতি বর্ষায় গেটে বাধা পেয়ে পানি ফসলি জমি তলিয়ে বাড়িঘরে ঢুকে যায়। এতে জীবনযাত্রা দুর্ভোগে ভরে উঠে। আর শুকনো মৌসুমে কোন পানি থাকে না। চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম ও কৃষক নজরুল দু’জনেই দাবি করেন এই গেটটি মেরামত করা না গেলে অন্তত তুলে নিয়ে যাক। তাহলে অন্তত বর্ষায় পানি নেমে যেতে কোথাও বাধা পেত না। এই উপকারটুকু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

 

সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলম বলেন, স্লুইস গেটটির কুপ্রভাবে পৌরসভার প্রচুর মানুষ ভুক্তভোগী। বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হন এলাকার কৃষক ও পাশের সাধারণ মানুষ। সবাই চায় এই গেটটি হয়ত সংস্কার হোক, না হয় এটি তুলে নিয়ে যাক।

উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি শুনেছি স্লুইস গেটটি অকেজো। তবে আমি সেখানে কোনদিন যাইনি। আমি সরেজমিনে গিয়ে সেটির অবস্থা দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে একটি ব্যবস্থা নেব।

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট