চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

আত্মসমর্পণকারী ১০১ ইয়াবা কারবারির মামলার রায় আজ

হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ

২৩ নভেম্বর, ২০২২ | ১২:০৫ অপরাহ্ণ

টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠে আত্মসমর্পণ করা ১০১ জন ইয়াবাকারবারির বিরুদ্ধে দায়ের করা ২টি মামলার রায় আজ বুধবার (২৩ নভেম্বর)। কক্সবাজারের সিনিয়র  জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে মামলা ২টির রায় ঘোষণা করা হবে।

 

একই আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এসএম আব্বাস উদ্দিন এ তথ্য জানিয়ে  বলেন, ‘গত ১৫ নভেম্বর বিজ্ঞ বিচারক মামলা ২টির যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন। একইদিন এ মামলা ২ টিতে হাজিরা দেওয়া ১৭ জন আসামির হাজিরা আবেদন না মঞ্জুর করে তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। একইসাথে মামলার অবশিষ্ট ৮৪ জন আসামির জামিন বাতিল করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়’।

 

২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি  টেকনাফ পাইলট হাইস্কুল মাঠে ১০২ জন ইয়াবাকারবারি আত্মসমর্পণ করে। আত্মসমর্পণকৃত ১০২ জন আসামির মধ্যে একজন কারাগারে মৃত্যুবরণ করে।

 

কক্সবাজারের তৎকালীন পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম (বার) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি প্রধান অতিথি, তৎকালীন আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারী, কক্সবাজারের ৪ জন সংসদ সদস্য, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘদিন প্রতিশ্রুতির পর বেশ ঢাকঢোল পিটিয়ে এ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান করা হয়। কিন্তু আত্মসমর্পণের পর তাদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা এবং ৩০টি দেশীয়  তৈরি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করে আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে ওসি (তদন্ত) এ.বি.এম.এস দোহা বাদী হয়ে পৃথক ২ টি মামলা দায়ের করেন। ইয়াবা ও অবৈধ অস্ত্র সমূহ টেকনাফের মহেশখালীয়া পাড়াস্থ বিচ হ্যাচারি নামক একটি পরিত্যক্ত হ্যাচারি থেকে উদ্ধার করা হয় বলে মামলা ২ টির এজাহারে উল্লেখ করা হয়। আত্মসমর্পণের আগের রাতে এসব ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলে এজাহারে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। সারেন্ডারকারিদের মুক্তি পেতে রাষ্ট্র সব ধরনের আইনি সহায়তা দেবে বলে সারেন্ডারের আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের আশ্বস্ত করেছিল।  এ ২টি মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ এবং আসামিদের পক্ষে সাক্ষীদের জেরা করা হয়। মামলায় আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষা ফলাফল যাচাই, আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়।

 

মামলাটির সকল বিচারিক কার্যক্রম গত ১৫ নভেম্বর শেষ হয় বলে একই আদালতের পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ জানিয়েছেন।

 

আসামিদের পক্ষে আদালতে ২ জন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তারা হলেন- টেকনাফের বাহারছরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আজিজ উদ্দিন এবং টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার মৃত মমতাজ উদ্দিনের পুত্র সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন ভুলু। 

 

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা ২টি পরিচালনা করেন পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম ফরিদ। আসামিদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাবেক পিপি এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, এডভোকেট মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী, এডভোকেট সলিমুল মোস্তফা, এডভোকেট আমিন উদ্দিন প্রমুখ।

 

মামলায় কারাগারে থাকা আসামিরা হল- নুরুল হুদা মেম্বার (৩৮), শাহ আলম (৩৫), আবদুর রহমান (৩০), ফরিদ আলম (৪২), মাহবুব আলম (৩৪), রশিদ আহমদ খুলু (৫৪), মো. তৈয়ব (৪৬), জাফর আলম (৩৭), মো. হাশেম প্রকাশ আংকু (৩৮), আবু  তৈয়ব, (৩১), আলী নেওয়াজ (৩১), মো. আইয়ুব (৩৫), কামাল হোসেন (২৬), নুরুল বশর প্রকাশ কালাভাই (৪০), আবদুল করিম প্রকাশ করিম মাঝি (৪০), দিল মোহাম্মদ (৩৪) এবং মো. সাকের মিয়া প্রকাশ সাকের মাঝি (২৮)।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট