উপজেলায় মিষ্টি পানের চাষ ও কদর দিনদিন বাড়ছে। সেইসাথে চাষিরাও মিষ্টি পান চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। পর্যটন ও সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের শত শত পরিবার শুধু পান চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করছে।

বছর দু’য়েক আগে যে মিষ্টি পান অন্য জেলা ও উপজেলা থেকে এনে বিক্রি করা হতো, সেই মিষ্টি পানের চাষ এখন টেকনাফ জুড়েই হচ্ছে। এখানকার মাটি এবং পরিবেশ অনুকূল হওয়ায় মিষ্টি জাতের পান চাষে সীমান্তের কৃষকরা সফলতার মুখ দেখছেন। আশানুরূপ দাম থাকায় কৃষকগণ লাভবানও হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয়রা ঝাল পান খেয়ে অভ্যস্ত বলেই টেকনাফের চাষিগণ সনাতন পদ্ধতিতে যুগ যুগ ধরে ঝাল পান বা গাছ পানের চাষ করে আসছেন। পর্যটন এলাকা হওয়ায় বছরজুড়ে টেকনাফে বিভিন্ন জেলার মানুষ আসেন। পর্যটক বা অন্য জেলার বাসিন্দাদের কাছে মিষ্টি পান খুবই জনপ্রিয়। তারা পান হিসেবে সাধারণত মিষ্টি পানই খেয়ে থাকেন।

অনুকূল পরিবেশ এবং চাহিদা বাড়ায় এ বছর মিষ্টি পানের চাষ করে সীমান্তের অনেক কৃষক লাখপতি হয়েছেন। কৃষকরা জানান, চারা রোপণের ৫০-৬০ দিনে পরিপূর্ণ পানপাতা পাওয়া যায় এবং গাছ থেকে কৃষকরা সারা বছরই পান বিক্রি করতে পারেন। ঝাল পানের গাছ এক মৌসুমেই শেষ হয়ে যায়। কিন্তু মিষ্টি পানের গাছ কয়েক বছর একই বরজে রাখা যায়।

তবে চরাঞ্চলের চেয়ে পাহাড়ি এলাকায় মিষ্টি পানের গাছ বাঁচে দীর্ঘমেয়াদী। সুবিধা হচ্ছে ঝাল পানের চেয়ে মিষ্টি পানের দাম একটু বেশি। সপ্তাহ পরপর সেচ এবং আধুনিক পদ্ধতিতে সহজে চাষ করা যাচ্ছে বলেই অন্য কৃষকরাও মিষ্টি পান চাষের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর টেকনাফে ৫৬০ হেক্টর জমিতে পানের চাষাবাদ হয়েছে। এক যুগের বেশি সময় ধরে মিষ্টি পানের বরজ করা উপজেলার হ্নীলা রঙিখালী এলাকার চাষি জাফর আলম বলেন, আগে আমরা স্থানীয় জাতের ঝাল পানের বরজ করতাম। গত বছর থেকে মিষ্টি পানের বরজ করে বেশ লাভবান হয়েছি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা পেলে এই অর্থকরী ফসল চাষে কৃষকরা আরো বেশি উদ্বুদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি পানের চাহিদা পূরণে এখানকার কৃষকরা ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন বলে আমার বিশ্বাস।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. ভবসিন্দু রায় বলেন, পান টেকনাফের অর্থকরী ফসল। উন্নত পদ্ধতিতে পান চাষে কৃষকদের আগ্রহী করা হচ্ছে। আশানুরূপ ফলন পেতে পানের বিভিন্ন রোগ ও পোকামাকড় সম্পর্কে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ