চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ঝিলংঝায় পাহাড় কেটে ছড়া ভরাট, স্থাপনা নির্মাণ

আরফাতুল মজিদ, কক্সবাজার

২৭ মে, ২০২২ | ৯:২১ অপরাহ্ণ

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংঝা ইউনিয়নের জেল গেট এলাকায় পাহাড় কেটে শত বছরের পুরনো ছড়া ভরাট চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ইতিমধ্যে ছড়ার ওপর স্থাপনাও নির্মাণ করা হয়েছে। পরিবেশ আইনে পাহাড় কাটা এবং ছড়া ভরাট নিষিদ্ধ। কিন্তু এসবের তোয়াক্কা না করে চলছে পাহাড় কেটে ছড়া ভরাট।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, শত বছরের পুরনো ছড়াটি কেউ পাহাড় কেটে মাটি ফেলে আবার কেউ সীমানা পিলার দিয়ে দখল করে সংকুচিত করে ফেলেছেন। এতে পানি চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

এলাকাবাসী আরো জানায়, বর্তমানে জামাল উদ্দিন বাবুল, রিয়াদ, হামিদ, ভুলু, খসরু, নাজিম উদ্দীন ও ফরহাদসহ ৮/৯ জন ব্যক্তি ছড়াটি বিভিন্ন কায়দায় দখল অব্যাহত রেখেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার ঝিলংঝা ইউনিয়নের জেলগেট এলাকায় শত বছরের পুরনো ছড়া ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকাজ চলছে। ইতিমধ্যে পাহাড়ের অর্ধেক অংশ কেটে মাটি ফেলে ছড়াটি প্রায় ভরাট করে ফেলেছে। সেখানে ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক পাহাড় কেটে মাটি সরানো ও নির্মিতব্য ভবনের প্রথম তলার ছাদ ঢালাই দেয়ার জন্য কাজ করছেন।

মাটি কাটার ফাঁকে কথা হয় এক শ্রমিকের সঙ্গে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিক বলেন, জামাল উদ্দিন বাবুলের নির্দেশে এসব মাটি কাটা হচ্ছে। তিনি এখানে একজন মাঝি (শ্রমিকদের প্রধান) ঠিক করেছেন। দৈনিক হিসেবে তারা কাজ করছেন। দিন শেষে পারিশ্রমিক পান।

জামাল উদ্দিন বাবুল জানান, বসবাসের জন্য তিনি পাহাড়ের একাংশ কেটে পাকা বাড়ি নির্মাণ করছেন। ছড়ায় ফেলা মাটি তুলে নেবেন। তিনি একা নন, পাশের অনেকেই ছড়া দখল করেছেন। এছাড়া তিনি জায়গাটি কিনে নিয়েছেন বলে দাবি করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইউনুস জানান, ২৫-৩০ ফুট প্রস্থের ছড়াটি এখন মাত্র ৫ ফুট অবশিষ্ট আছে। সেখানে গত এক মাস ধরে বাবুল নামের এক ব্যক্তি পাহাড় কেটে মাটি ফেলে ছড়াটি ভরাট করে পাকা দালান নির্মাণ করছেন। তাকে বাধা দিলেও তিনি তা আমলে নিচ্ছে না বলে জানান তিনি।

পরিবেশবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’ এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ বলেন, ‘এলাকাবাসীর মৌখিক অভিযোগ পাওয়ার পর দুই দফা পরিদর্শন করে পাহাড় কেটে মাটি ফেলে ছড়া ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ, বস্তা ফেলে, সীমানা খুঁটি ও সীমানা প্রাচীর দিয়ে ছড়া দখলের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শেখ মো. নাজমুল হুদা জানান, পাহাড় কেটে মাটি ফেলে ছড়া ভরাট করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে সদরের উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, দ্রুত সময়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ জানান, ছড়া দখলের বিষয়টি অবগত হয়ে এসি (ল্যান্ড) কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট