দেশের প্রধান দুই নদী পদ্মা ও মেঘনার নামে দুটি বিভাগ করতে যাচ্ছে সরকার। এরই মধ্যে এই দুটি নাম চূড়ান্ত করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বৃহত্তর ফরিদপুরের পাঁচটি জেলা নিয়ে ‘পদ্মা’ এবং বৃহত্তর কুমিল্লার তিনটি ও নোয়াখালীর তিনটি করে মোট ছয়টি জেলা নিয়ে গঠন করা হবে ‘মেঘনা’।
দুই নদীর নামে নতুন বিভাগের নামকরণ করতে আগামী রবিবার (২৭ নভেম্বর) প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) সভায় প্রস্তাব তোলা হবে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গত বছরের অক্টোবরে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা ও মেঘনা নদীর নামে নতুন বিভাগ করবেন বলে ঘোষণা দেন।
ফরিদপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরকে নিয়ে পদ্মা বিভাগ এবং কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলা নিয়ে মেঘনা বিভাগ গঠনের কথা রয়েছে।
এই দুই বিভাগে গঠন হলে দেশে মোট বিভাগের সংখ্যা দাঁড়াবে ১০টিতে।
বৃহত্তর কুমিল্লা ও বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চল নিয়ে নতুন বিভাগ করার বিষয়টি গত কয়েক বছর ধরে আলোচনায় রয়েছে। নতুন বিভাগের নাম কী হবে, তা নিয়ে পাল্টাপাল্টি দাবি রয়েছে কুমিল্লা ও নোয়াখালী জেলার রাজনৈতিক নেতাদের।
গত বছরের ২১ অক্টোবর কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের অফিস ভবনের উদ্বোধনী আয়োজনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “স্বাধীনতা যুদ্ধের ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’ স্লোগানের আদলে নদীর নামে হবে এ বিভাগ দুটির নাম। ফরিদপুর বিভাগের নাম হবে ‘পদ্মা’ আর ‘মেঘনা’ হবে কুমিল্লা বিভাগের নাম।”
কুমিল্লা সদর আসনের এমপি ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ওইদিন কুমিল্লা বিভাগের নাম কুমিল্লাই রাখার জন্য কয়েকবার অনুরোধ করেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার কাছে কাছে।
প্রধানমন্ত্রী তখন বলেন, “ওই কু নাম দেব না আমি। কুমিল্লা দেব না আমি।”
পরে ডিসেম্বর মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায়ও প্রধানমন্ত্রী নদীর নামে নতুন বিভাগ করার কথা বলেন।
নিকার বৈঠকে কুষ্টিয়া জেলার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানাকে ঝাউদিয়া এলাকায় স্থানান্তর করে ‘ঝাউদিয়া থানা’ নামকরণ এবং ‘ঝাউনিয়া পুলিশ ক্যাম্প’ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করে ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ক্যাম্প’ হিসেবে নামকরণের প্রস্তাবও অনুমোদনের জন্য তোলার কথা রয়েছে।
এ ছাড়া সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলায় পৌরসভা গঠন, বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ও বোয়াইল ইউনিয়নের বিরোধপূর্ণ অংশ বিয়োজন করে জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে সংযোজন করে মাদারগঞ্জ উপজেলার সীমানা পুনর্গঠন এবং ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল পৌরসভার সীমানা সম্প্রসারণের প্রস্তাবও রবিবারের নিকারের সভায় ওঠার কথা রয়েছে।
পূর্বকোণ/পিআর