চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সুখের মূল চাবিকাঠি রয়েছে নিজের হাতেই

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:১৫ পূর্বাহ্ণ

অনেকেই আমরা জানি না সুখের মূল চাবিকাঠি রয়েছে আমাদের নিজেদের হাতেই। নিজের চেষ্টাতেই সুখী হওয়ার পথটা তৈরি করে নেয়া সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান এবং কগনিটিভ বিজ্ঞান বিভাগের জনপ্রিয় অধ্যাপক লরি স্যান্টোস বলেছেন, বিজ্ঞানে এটা প্রমাণ হয়েছে যে সুখী হতে হলে সচেতন প্রচেষ্টার প্রয়োজন। তার মতে, সুখী হওয়ার চেষ্টা করাটা খুব একটা সহজ কাজ নয়, এজন্যে সময় লাগবে। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১৬ বছরের ইতিহাসে তার ক্লাস শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে

জনপ্রিয়। ক্লাসে প্রায় ১,২০০ ছাত্রছাত্রী রয়েছে। এই কোর্সটা মনোবিজ্ঞানেরই একটি শাখা যেখানে সুখ এবং আচরণগত পরিবর্তনের বিষয়ে পড়ানো হয়। অধ্যাপক স্যান্টোস বলেন, সুখী হওয়া বিষয়টি এমন নয় যে এটা আপনা আপনি হয়ে যায়। সুখী হওয়ার জন্য আপনাকে এটা চর্চা করতে হবে। এটা অনেকটা ভালো সঙ্গীত শিল্পী বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠার মতোই, সাফল্যের জন্যে তাদেরকে যেমন চর্চা করতে হয় সুখী হওয়ার ব্যাপরেও আপনাকে সেটা করতে হবে।

এখান রয়েছে তার দেয়া পাঁচটি টিপস :
১. কৃতজ্ঞতার একটি তালিকা তৈরি করুন : অধ্যাপক স্যান্টোস তার শিক্ষার্থীদের বলেন, প্রত্যেক রাতে তারা যাদের কাছে বা যেসব জিনিসের কাছে কৃতজ্ঞ তার একটি তালিকা তৈরি করতে। এটা শুনতে খুব সহজ মনে হতে পারে, কিন্তু আমরা দেখেছি যেসব শিক্ষার্থী নিয়মিতভাবে এটা চর্চা করেন তাদের সুখী মনে হয়, বলেন অধ্যাপক স্যান্টোস।
২. আরও বেশি করে ও নিশ্চিন্তে ঘুমাতে চেষ্টা করুন : এই কাজটা করা সবচেয়ে সহজ বলে মনে হয়, কিন্তু আসলে এই কাজটা করা খুব কঠিন, বলেন অধ্যাপক। এখানে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, প্রতি রাতে ৮ ঘণ্টা করে ঘুমানো। এবং এই কাজটা করতে হবে এক সপ্তাহ ধরে।
তিনি আর বলেন, আমরা সবাই জানি যে বেশি ঘুমাতে পারলে এবং নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারলে বিষণœতায় ভোগার সম্ভাবনা কম থাকে। এর ফলে ইতিবাচক মনোভাবও তৈরি হয়।
৩. ধ্যান করুন : প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট করে ধ্যান করা চেষ্টা করতে হবে, কারণ এটি মানুষকে সুখী হতে সাহায্য করে। অধ্যাপক স্যান্টোস বলেন, তিনি যখন ছাত্রী ছিলেন তখন তিনি নিয়মিত ধ্যান করতেন এবং দেখেছেন সেটা করলে মন ভালো থাকে। এখন তিনি তার শিক্ষার্থীদের শেখাচ্ছেন কিভাবে ধ্যান করতে হয়।
৪. পরিবার ও বন্ধুদের সাথে আরও সময় কাটান : অধ্যাপক স্যান্টোস বলেছেন, গবেষণায় পরিষ্কার একটি বিষয় দেখা গেছে যে, পরিবার ও বন্ধুদের সাথে ভালো সময় কাটালে আপনি সুখী হবেন। আপনার যদি ভালো বন্ধুত্ব থাকে এবং সামাজিক যোগাযোগ থাকে এবং তাদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ হয় তখন তারা উল্লেখযোগ্য রকমের ভালো বোধ করেন। এজন্য যে খুব বেশি কিছু করতে হবে তা নয়, স্যান্টোস বলেন, শুধু এটা নিশ্চিত করুন যে আপনি এই সময়ে বেঁচে আছে, মনে করুন যে আপনারা একসাথে বর্তমান সময় কাটাচ্ছেন এবং আপনি কিভাবে আপনার সময় কাটাচ্ছেন সে বিষয়ে একটু সচেতন থাকুন।
৫. সোশাল মিডিয়ায় যোগাযোগের পরিবর্তে বাস্তব যোগাযোগ বৃদ্ধি করুন : অধ্যাপক স্যান্টোস মনে করেন, সোশাল মিডিয়া থেকে সুখের বিষয়ে মিথ্যা যেসব ধারণা পাওয়া যায় সেসবে ভেসে যাওয়া উচিত নয়। সবশেষ গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সামাজিক নেটওয়ার্কের মাধ্যম ব্যবহার করেন তারা, যারা এটা খুব বেশি ব্যবহার করেন না তাদের চাইতে কম সুখী।
তাই আপনি যদি সত্যিই জীবনে সুখী হতে চান, তাহলে কৃতজ্ঞ হতে শুরু করুন, পরিবারের সাথে আরও বেশি সময় কাটান, বন্ধুদের সাথে মেলামেশা করুন, দিনের একটা সময়ে কিছুক্ষণের জন্যে নিজেকে সবকিছু থেকে সরিয়ে ধ্যানে মগ্ন হউন, সোশাল মিডিয়া থেকে দূরে সরে এসে আরও একট বেশি ঘুমাতে চেষ্টা করুন। [সূত্র : ইন্টারনেট] – শর্মী দাশ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট