চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জেনে নিন লাল কাপড়েই কেনো ঢাকা থাকে বিরিয়ানির হাড়ি

অনলাইন ডেস্ক

২১ আগস্ট, ২০১৯ | ৪:৪৭ অপরাহ্ণ

বেশির ভাগ বাঙালিরই প্রথম প্রেম বিরিয়ানি। বিরিয়ানির প্রথম প্রচলন শুরু হয় দিল্লি এবং লক্ষ্মৌতে, মোগলাই এবং অওধি ক্যুইজিন হিসেবে। কিন্তু এই বিরিয়ানি সমগ্র বাঙালি জাতির মন জয় করে নিয়েছে খুব সহজেই। আর এখন মফস্বল হোক কিংবা শহর, সব জায়গাতেই বিরিয়ানির দোকান রয়েছে।

যারা বিরিয়ানির ভক্ত, তারা কি কখনো একটি বিষয় খেয়াল করেছেন? বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল কাপড় পেঁচানো থাকে কেন? হয়তো খেয়াল করেও বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাননি। আসুন তবে জেনে নেই লাল কাপড়ের রহস্য কী?

বিরিয়ানি বিরিয়ানি মোগলাই খাবার। বিরিয়ানির প্রথম প্রচলন হয় দিল্লি এবং লক্ষ্মৌতে। এখন তা ভারত-বাংলাদেশের মফস্বল থেকে শুরু করে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। চিকেন বিরিয়ানি, মাটন বিরিয়ানি, ডিম বিরিয়ানি, আলু বিরিয়ানি বা ভেজ বিরিয়ানি রয়েছে পছন্দের তালিকায়। কিন্তু কথা হচ্ছে বিরিয়ানির হাঁড়ি লাল কাপড়ে পেঁচানো থাকে কেন?

বিরিয়ানিতে লাল কাপড় মুঘল আমলের রীতি অনুযায়ী খাবার পরিবেশনে লাল কাপড় ব্যবহারের কারণে এখনো বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল কাপড় ব্যবহার করা হচ্ছে। সুতরাং বলা যায় আভিজাত্য বা ঐতিহ্য রক্ষার জন্যই বিরিয়ানির হাড়িতে লাল কাপড় ব্যবহৃত হয়ে আসছে।                                                                                 

লাল কাপড় মুখের ভাষার মতো রঙেরও ভাষা আছে। মানুষের চিন্তায় রঙ প্রভাব ফেলে। পৃথিবীর সব দেশেই রঙের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ ও ব্যবহার রয়েছে। লাল রঙের ব্যবহার একেক দেশে একেক রকম। বিদেশি অতিথি যখন আসেন তখন তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। মাজার, উরস শরিফে বাঁশের মাথায় লালসালুর পতাকা ঝোলে। বিরিয়ানি, হালিমের ডেগেই লাল কাপড়। পান ও পনিরওয়ালারাও লালসালু ব্যবহার করেন।

লাল রঙের অর্থ কোনো দেশে লাল শৌর্য, আক্রমণ, বিপদ অর্থে ব্যবহৃত হয়। আবার ট্রেনে বা রাস্তার সিগনালে লাল ব্যবহার করা হয়। ফুটবল খেলার মাঠে রেফারি প্রথমে সতর্কতা হিসেবে হলুদ পরে বিপজ্জনক আচরণের জন্য লাল কার্ড ব্যবহার করেন। তবে লাল রঙকে সাধারণত ধরা হয় সৌভাগ্য, উষ্ণতা, আনন্দ-উৎসব ও ভালোবাসার আবেগের প্রতীক। হৃদয়ের রঙ লাল। উষ্ণ অভ্যর্থনা প্রকাশের ক্ষেত্রেও হৃদয়ের লাল রঙ ব্যবহার হয়।                                                                                                                                                                 

ইতিহাস মুঘল সম্রাট হুমায়ুন যখন রাজ্য হারিয়ে ইরানে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তখন তাকে পারস্য সম্রাট লালগালিচার উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন। খাবার পরিবেশনে দরবারি রীতিগুলোতে রূপালি পাত্রের খাবারগুলোর জন্য লাল কাপড় আর ধাতব ও চিনামাটির জন্য সাদা কাপড় দিয়ে ডেকে নিয়ে আসা হতো, যা মুঘলরাও তাদের দরবারে চালু করেন। শুধু তাই নয়, সম্মানিত ব্যক্তি বা আধ্যাত্মিক সাধকদের জন্য ছিল লাল পাগড়ির ব্যবস্থা।

শেষকথা বিরিয়ানি ভারতবর্ষে পা রাখে মুঘল আমলে। খাবার পরিবেশনে এই প্রথা ও রঙের ব্যবহার শহর লক্ষ্মৌয়ের নবাবরাও অনুসরণ করতেন। সমাজ জীবনে তাই অভিজাত্য, বনেদি, উষ্ণতা প্রকাশে লাল বা লালসালুর ব্যবহার চলে আসছে যুগ যুগ ধরে।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/ময়মী

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট