চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জিলহজ্ব মাসের ৫টি বিশেষ আমল

অনলাইন ডেস্ক

১১ জুলাই, ২০২১ | ১১:২৩ অপরাহ্ণ

১. প্রথম ১০ দিনে নফল রোযা ও রাতে ইবাদত করা
২. চুল-নখ না কাটা
৩. আরাফার দিন রোজা রাখা
৪. তাকবীরে তাশরীক বলা
৫.স্বচ্ছল ব্যক্তির জন্য কুরবানী করা৷

বিস্তারিত হাদীস সমুহ
১. প্রথম ১০ দিনে নফল রোযা ও রাতে ইবাদত করা:
জিলহজ্ব মাসের চাঁদ উদিত হওয়ার পর থেকে দশ তারিখ পর্যন্ত দিনে সম্ভব হলে নফল রোযা রাখা (কুরবানির দিনে রোযা নয়) আর রাতের বেলা বেশি বেশি ইবাদত করা, যথা: নফল নামায, কুরআন তিলাওয়াত, তাসবীহ-তাহলীল, তাওবা-ইস্তিগফার ও রোনাজারী ইত্যাদি ইবাদতের মাধ্যমে রাত কাটানো।

ফযীলত:
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জিলহজ্বের দশ দিনের ইবাদত আল্লাহর নিকট অন্য দিনের ইবাদতের তুলনায় বেশি প্রিয়, প্রত্যেক দিনের রোযা এক বছরের রোযার ন্যায় আর প্রত্যেক রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের ন্যায়। (তিরমিজী শরীফ, সিয়াম অধ্যায়, দশ দিনের আমল পরিচ্ছেদ, ১ম খন্ড, ১৫৮ পৃষ্ঠা)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, এই দশ দিনের আমল অপেক্ষা অন্য দিনের আমল প্রিয় নয়। (বুখারী শরীফ, দুই ঈদ অধ্যায়, আইয়ামে তাশরীক পরিচ্ছেদ, ১ম খন্ড, ১৩২ পৃষ্ঠা)

চুল-নখ না কাটা:
যারা কুরবানী করবে তাদের জন্য যিলহজ্বের চাঁদ উঠা থেকে কুরবানী করা পর্যন্ত চুল ও নখ না কাটা মুস্তাহাব।

হযরত উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল (স.) বলেন, তোমাদের মধ্যে যারা কুরবানী করবে, তারা যেন (এই ১০ দিন) চুল ও নখ না কাটে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, কুরবানী অধ্যায়, যে কুরবানী করবে তার জন্য চুল- নখ না কাটার বর্ণনার অধ্যায়, পৃষ্ঠা-২২৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫২৩৩)

আরাফার দিন রোজা রাখা
প্রথম নয় দিন বিশেষ করে আরাফার দিন অর্থাৎ নয় জিলহজ্বে নফল রোযা রাখা। (তবে আরাফায় উপস্থিত হাজি সাহেবদের জন্য নয়)

ফযীলত:
হযরত আবু কাতাদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল (স.) ইরশাদ করেন, আরাফার দিনের রোযার ব্যাপারে আমি আশাবাদী যে, আল্লাহ তাআলা তার (রোযাদারের) বিগত এক বৎসরের ও সামনের এক বছরের গোনাহ মাফ করে দিবেন। (তিরমিজী শরীফ, সাওম অধ্যায়, আরাফার দিনে রোযার ফযীলত পরিচ্ছেদ, ১ম খন্ড, ১৫৭ পৃষ্ঠা, সুনানে ইবনে মাজাহ, ১২৪ পৃষ্ঠা)

তাকবীরে তাশরীক বলা
জিলহজ্বে মাসের ৯ তারিখের ফজর থেকে ১৩ তারিখের আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাযের পর একবার তাকবীর বলা ওয়াজিব। পুরুষের জন্য আওয়াজ করে, আর মহিলাদের জন্য নীরবে। তাকবীর হল-
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা-ইলাহা ইল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ”।

(ফাতওয়া শামী-তৃতীয় খন্ড, ৬১ পৃষ্ঠা, সালাত অধ্যায়, ঈদ পরিচ্ছেদ, ইলাউস সুনান, সালাত অধ্যায়, তাকবীরাতুত তাশরীক পরিচ্ছেদ, ৮ম খন্ড, ১৪৮ পৃষ্ঠা)

স্বচ্ছল ব্যক্তির জন্য কুরবানী করা
১০, ১১ অথবা ১২ ই যিলহজ্বের যে কোন একদিন, কোন ব্যক্তির মালিকানায় যদি নিত্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ, অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা বা এর সমমূল্যের সম্পদ থাকে,তাহলে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। পুরুষ-মহিলা সকলের উপরই এ বিধান প্রযোজ্য। (ফাতওয়া শামী-৯/৪৫৩, ৪৫৭ ফাতওয়া আলমগীরী-৫/২৯২, সুনানে ইবনে মাজাহ-২২৬)

ফযীলত
যায়েদ বিন আরকাম রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবা রা. গণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! এ সকল কুরবানীর ফযীলত কি? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন-তোমাদের জাতির পিতা ইবরাহীম আ. এর সুন্নাত। তারা (রা.) পুনরায় আবার বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! তাতে আমাদের জন্য কী সওয়াব রয়েছে? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন-কুরবানীর পশুর প্রতিটি চুলের বিনিময়ে একটি সওয়াব রয়েছে। তারা (রা.) আবারো প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ভেড়ার লোমের কি হুকুম? (এটাতো গণনা করা সম্ভব নয়), তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন-ভেড়ার লোমের প্রতিটি চুলের বিনিময়ে একটি সওয়াব রয়েছে। (সুনানে ইবনে মাজাহ-২২৬)

কঠোর হুশিয়ারী:
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি সক্ষমতা থাকা সত্বেও কুরবানী করলো না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটেও না আসে। {সুনানে ইবনে মাজাহ-২২৬}

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা যেন আমাদের সবাইকে আমলগুলো করার তৌফিক দান করেন, আমিন।

পূর্বকোণ/মামুন/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট