চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মুস্তাফিজের প্রথম বিশ^কাপ স্মরণীয় করে রাখার মিশন

স্পোর্টস ডেস্ক

১৮ মে, ২০১৯ | ১:৪৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের হয়ে প্রথম বিশ^কাপ খেলবেন মুস্তাফিজুর রহামন। লাল-সবুজ জার্সিতে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া বাকি ছয় ক্রিকেটারের সঙ্গে মুস্তাফিজ একজন। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর আইসিসির দুটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে খেলেছেন তিনি। ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরের বছর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ঝলক দেখিয়েছেন মুস্তাফিজ। তবে ওয়ানডে বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে এবারই প্রথম খেলবেন সাতক্ষীরার এ পেসার। ক্রিকেট ম্যাচ জিততে হলে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়েও জাদু দেখাতে হয়। আর বিশ্বকাপের মতো টানটান উত্তেজনার টুর্নামেন্টে ম্যাচ জেতার জন্য যেকোনো দলের বোলিং লাইনে থাকতে হয় উইকেট নেওয়ার মতো বোলার। বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে বাজির ঘোড়া হিসেবে তাদের ব্যবহার করতে চান অধিনায়করা। চাপের মুহূর্তে অথবা দলের প্রয়োজনের সময় মাথা ঠান্ডা রেখে বোলিং করে দলকে ম্যাচ জেতান দলের সেরা বোলাররাই। আসন্ন ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের বোলিং লাইনেও ম্যাচ জেতানোর মতো তেমনই এক বোলিং ভরসার নাম মুস্তাফিজুর রহমান। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেকের পর চারদিকে হইচই ফেলে দেন মুস্তাফিজ। ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত স্লোয়ার- কাটার, দুরন্ত গতিসহ সর্পিল সুইংয়ে পাঁচ উইকেট নিয়ে সব আলো নিজের দিকে টেনে নেন মুস্তাফিজ। ২০১৬ সালে আইপিএলে অসাধারণ বোলিংয়ে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ শিরোপা জেতাতে রাখেন অগ্রণী ভূমিকা। একই বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আগুনঝরা বোলিং করেন। ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে দলকে ফাইনালে তুলতে অসামান্য অবদান রাখেন এ কাটার মাস্টার। মুস্তাফিজের বোলিংয়ের বড় শক্তি বৈচিত্র্য। তার স্লোয়ার বলগুলো মর্ডান ক্রিকেটের অন্যতম সেরা। ব্যাটসম্যানদের স্লোয়ার বল বুঝতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়। নতুন বলে তার সুইং দুর্দান্ত, এ্যাকুরেসি অনস্পট। সব মিলিয়ে ধ্রুপদী অস্ত্র নিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বোলিংয়ের বড় শক্তি মুস্তাফিজ। তবে সময়ের ব্যবধানে অভিষেকের মুস্তাফিজ আর বর্তমান মুস্তাফিজে অনেক পার্থক্য। ‘হানিমুন পিরিয়ড’ পাড় করে মুস্তাফিজ এখন পাচ্ছেন দৃঢ় প্রতিরোধ। তাকে নিয়ে এখন চর্চা করা হয়। প্রতিপক্ষ দলের ‘পরীক্ষাগারে’ থাকে তার বোলিং ভিডিও। তার স্টক বলের সমাধান খোঁজা হয়। ধূমকেতুর মতো তার আবির্ভাব হয়েছিল। কিন্তু বারবার ইনজুরিতে পড়ে মুস্তাফিজ যেন নিজেকে হারিয়ে খুচ্ছেন বারবার। ইনজুরি আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আগের ধার যেন কিছুটা কমে গেছে। তবুও পূর্বের তেজ এখনো ফোরায়নি। ফোরায়নি বলেই তো ২০১৮ সালের আইসিসি বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন বাঁহাতি পেসার। আশার বিষয় হচ্ছে বিশ্বকাপের ঠিক আগেই চেনারূপে দেখা যাচ্ছে মুস্তাফিজকে। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজের সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন। ভয়ংকর কাটার, মায়াবী স্লোয়ারের সঙ্গে উইকেট ও ব্যাটসম্যানদের বুঝার চেষ্টা করছেন ২৩ বছর বয়সি তারকা। সময়ের সঙ্গে পরিণত এ বোলিং তারকা শেষ দুই ম্যাচেই পেয়েছেন ৬ উইকেট। তার বর্তমান ফর্ম বিশ্বকাপের আগেই উজ্জীবিত করতে পারে টাইগার ভক্তদের। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং বিভাগের প্রধান শক্তি মুস্তাফিজ। বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৫টি ওয়ানডে খেলেছেন। ৪.৮১ ইকোনমিতে বিস্ময়বালকের উইকেট সংখ্যা ৮৩। বিশ^কাপে তার উপর প্রত্যশা পুরো দেশে। ২২ গজে ব্যাটসম্যানদের বধ্যভূমি পরিণত করবেন এমনটাই চাওয়া পুরো বাংলাদেশের।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট