চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

ভারতে খাবি খাওয়া সেই ইমরুল মিথুনই বিধ্বংসী বিপিএলে

স্পোর্টস ডেস্ক

১২ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৩:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রথম ইনিংসে ৫ ছক্কার মারে ৩০ বলে ফিফটি মোহাম্মদ মিথুনের, জবাবে ২ চার ও ৪ ছয়ের মারে ২৯ বলে একই মাইলফলকে পৌঁছলেন ইমরুল কায়েস। সবমিলিয়ে মিথুন অপরাজিত ছিলেন ৪৮ বলে ৮৪ রান করে আর ইমরুল দলকে জেতানো ইনিংসে করলেন ৩৮ বলে ৬১ রান। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধনী ম্যাচের বিজ্ঞাপনই ছিলেন ইমরুল ও মিথুন। যেখানে মিথুনের ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৮৪ রানের ইনিংসটি ছাপিয়ে নিজ দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে জিতিয়েছেন ইমরুল কায়েস। খেলেছেন ২ চার ও ৫ ছক্কার মারে ৩৮ বলে ৬১ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস। অথচ সপ্তাহ তিনেক আগে ভারতের মাটিতে চোখেমুখে রীতিমতো সর্ষেফুল দেখেছেন ইমরুল, মিথুন- দুজনেই। টি-টোয়েন্টিতে ছিলেন না ইমরুল। একটি ম্যাচ খেলে ২৭ রান করেছিলেন মিথুন। কিন্তু এরপর টেস্ট সিরিজে হতশ্রী ব্যাটিং করে নিজেদের সামর্থ্যরে ওপরেই যেন বড় এক প্রশ্নবোধক চিহ্ন জুড়ে দিয়েছিলেন দুজনে। বেশি হতাশাজনক ছিলেন ইমরুলই। তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে তার ওপরে ছিলো ইনিংস সূচনা ও তরুণ ওপেনার সাদমান ইসলামকে সাহস দেয়ার গুরুদায়িত্ব। কিন্তু কিসের কী! দুই টেস্টের ৪ ইনিংসে একবারও দুই অঙ্কে যেতে পারেননি ইমরুল। তার ইনিংসগুলো ছিলো যথাক্রমে ৬, ৬, ৪ ও ৫। রান যতই করুক না কেন, অন্তত ব্যাটিংয়ের ধরনেও ধারণা পাওয়া যায় একজন ব্যাটসম্যানের সামর্থ্য ও যোগ্যতার। কিন্তু চার ইনিংসেই ইমরুলের ব্যাটিং দেখে একবারও মনে হয়নি তিনি একজন অভিজ্ঞ ওপেনার। ভারতীয় পেসারদের বিপক্ষে রীতিমতো টেইলএন্ডারদের মতো ছিলো ইমরুলের ব্যাটিং। একই দশা ছিলো মিথুনেরও। তিনি রান করেছেন ইমরুলের চেয়ে বেশি। কিন্তু মোহাম্মদ শামি, ইশান্ত শর্মা, উমেশ যাদবদের বিপক্ষে কখনোই মনে হয়নি সাবলীল ব্যাটিং করতে পারছেন। ইন্দোরে প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে দুই অঙ্কে (১৩ ও ১৮) যেতে পারলেও, কলকাতায় গোলাপি বলের লড়াইয়ে তার সংগ্রহ ছিলো ০ ও ৬ রান। এ দুজনের এমন পারফরম্যান্সের পর তাদের ভবিষ্যতের ব্যাপারেও মোড়ক বসিয়ে দিয়েছিলেন অনেকে।

কিন্তু দেশে ফিরতেই যেন সকল সমালোচকদের জবাব দিয়ে দিলেন ইমরুল ও মিথুন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের উদ্বোধনী ম্যাচেই দুজন খেললেন ঝকঝকে দুইটি ইনিংস। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের চিরচেনা উইকেটে ম্যাচের প্রথম ইনিংসে বোলারদের ইচ্ছেমতো পিটুনি দিয়েছেন মিথুন। দলের অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার ভিড়ে তিনি ফিফটি করেন মাত্র ৩০ বলে। যেখানে ছিলো না কোনো চারের মার। তবে নাসুম আহমেদের এক ওভারেই ৩ ছক্কাসহ হাঁকান মোট ৫টি ছক্কা। আর ইনিংস শেষে তিনি অপরাজিত থাকেন ৪৮ বলে ৮৪ রান করে। মিথুনের ইনিংসে ভর করে সিলেটের করা ১৬২ রান তাড়া করতে নেমে ইমরুল খেলেছেন ক্যালকুলেটিভ ইনিংস।

সিঙ্গেল-ডাবলসের সঙ্গে বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারির মিশেলে মাত্র ২৯ বলে ২ চার ও ৪ ছয়ের মারে তুলে নেন আসরে নিজের প্রথম ফিফটি। দলের জয় নিশ্চিত করে আউট হওয়ার আগে খেলেন ৩৮ বলে ৬১ রানের ইনিংস। জাতীয় দলের নির্বাচক থেকে কোচ পর্যন্ত সবাই জানিয়ে রেখেছেন, আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে এবারের বিপিএল। আর সেখানেই যদি ইমরুল-মিথুনরা খেলতে থাকেন ধারাবাহিক, যারা কি না দেশের বাইরে গেলেই হয়ে যান টেইলএন্ডারদের মতো ব্যাটসম্যান, তাহলে বড়সড় পরীক্ষার মুখেই পড়তে হবে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজম্যান্টকে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট