চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সফল কোচ ফিরোজ খান

দেবাশীষ বড়–য়া দেবু

১৫ মে, ২০১৯ | ১:৪০ পূর্বাহ্ণ

কোচ মো. ফিরোজ খানের অক্লান্ত পরিশ্রমের সাথে খেলোয়াড়দের নিষ্ঠা ও কঠোর অনুশীলনের ফলে এবারে চট্টগ্রাম প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে চ্যাম্পিয়ন হয় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ৮ বছরের খেলোয়াড়ী জীবন এবং কোচ হিসেবে ১৫ বছরে এটা তার ১০৬-তম শিরোপা। তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ২০১১ সালে কক্সবাজারে ৭ দিনের লেভেল ‘এ’ কোচিং কোর্স, ২০১২ সালে কুমিল্লায় ৭ দিনের লেভেল ‘বি’ কোচিং কোর্স, এবং ২০১৩ সালে ঢাকায় ৭ দিনের লেভেল ওয়ান কোচিং কোর্স সফলতার সাথে শেষ করেন। এনায়েত বাজারস্থ জুবলী রোডের খান বাড়ির বাসিন্দা ফিরোজ খানের বাবা আইয়ুব খান ও মাতা কুলসুমা বেগম। দুজনেই পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন। স্ত্রী কিসমত আরা বেগম (গৃহিনী) এবং যজম সন্তান আফ্রিদি ও সালমানকে নিয়ে ফিরোজ খানের সংসার। ফিরোজ খান একজন ¯েœহময়ী বাবা ও আদর্শ স্বামী। উল্লেখ্য আফ্রিদি ও সালমান দুজনেই ক্রাইস্ট চার্চ স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র। দুজনেই ইতিমধ্যে কিশোর ক্রিকেটে দৃঢ়তা দেখিয়ে আগমনী বার্তা শুনিয়েছে। দুজনেই এবারে সদ্য সমাপ্ত কোয়ালিটি স্কুল অব ক্রিকেটের টুর্নামেন্টে উদীয়মান ক্রিকেট একাডেমির হয়ে অংশ নিয়ে শিরোপার স্বাদ গ্রহণ করে। দুজনেই অল-রাউন্ডার এবং আফ্রিদি দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। সেই অনেক বছর আগের কথা। ১৩ বছর বয়সেই সি.আর.বি শিরিষতলায় বন্ধুদের সাথে খেলতে গিয়ে ক্রিকেটকে ভালোবেসে ফেলেন। স্কুল ক্রিকেট দিয়ে কাঠের বলে যাত্রা শুরু। দল ছিল সালেহ জহুর উচ্চ বিদ্যালয়। এরপর অনূর্ধ্ব-১৬ বিজয় দিবস ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। এভাবে সেঞ্চুরি কাপ, স্টার যুব ক্রিকেট, রাফি স্মৃতি সিনিয়র ক্রিকেট ও রাফি অনুর্ধ ১৮’, আন্ত: কলেজ ক্রিকেট লীগ-এ চট্টগ্রাম সরকারী সিটি কলেজ থেকে অংশগ্রহণ করে ফাইনালে ওঠেন। ২০০৩ সালে ১ম বিভাগে শতদল ক্লাবে ১ বৎসর খেলে পরের বারে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন গিয়েই চ্যাম্পিয়নের স্বাদ পাই। এতে করে সিটি কর্পোরেশনে চাকুরি দেয়া ২০ জন ক্রিকেটারের মধ্যে আমি একজন ছিলাম। ২০০৮ সালে ঢাকা পর্ব। প্রথমবারেই প্রগতি সেবা সংঘকে তৃতীয় বিভাগ থেকে দ্বিতীয় বিভাগে উন্নীত করি। এরপর ফোর এন্ড সেভেন সিসিকে তৃতীয় বিভাগে উন্নীত করি। এরপর ডাক আসে বাংলাদেশ অনূর্ধ-১৯ বাছাই পর্বে। ৬৬ জন থেকে ২০ জনে এসে বাদ পড়ি। এরপর অনূর্ধ-১৯ এর ক্যাম্প চলাকালে তৎকালীন ঢাকা মোহামেডামের কোচ দৌলতুল জামাল খান এর সাথে পরিচয়। ঢাকা মোহামেডানে ডাক আসে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে। টিমমেট ছিলেন পাকিস্তানী ব্যাটসম্যান ইজাজ আহমেদ, শ্রীলংকান ব্যাটসম্যান হাসান তিলকারত্বে, বাংলাদেশের অপি, বিদ্যুৎ, রফিক, আজহার আলী খান (তৎকালীন মোহামেডান ক্যাপ্টেন এর সাথে খেলার সৌভাগ্য হয়েছিল)। ঢাকা থেকে ফিরে এসে কোচিং’এ মনোনিবেশ করেন “উদীয়মান ক্রিকেট একাডেমি”র মাধ্যমে। ২০০৩-এ স্থাপিত এই একাডেমিকে বিভিন্ন গ্রামে প্রসার করি। ঢাকা উদীয়মান, এফ.কে ফাউন্ডেশন, কিছুদিন জে.ডি.সি উদীয়মান হয়েও কাজ করেছি। এখন চিটাগাং স্কোয়াড নামে সপ্তাহে তিনদিন সকল একাডেমির কাজ করি। আমার কোচিং ক্যারিয়ারে ১০৬ শিরোপার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দিলাম। ঢাকা শেখ রাসেলকে চ্যাম্পিয়ন করানো, ইন্ডিয়াতে ১টিতে চ্যাম্পিয়ন, আর ১টি রানার আপ, ফ্রেন্ডস ক্লাবকে ১ম বিভাগ থেকে প্রিমিয়ারে, নিমতলা লায়ন্সকে ১ম বিভাগ থেকে প্রিমিয়ারে, মুক্তিযোদ্ধাকে ২য় বিভাগ থেকে ১ম বিভাগ এবং ১ম বিভাগ থেকে প্রিমিয়ারে, কোয়ালিটিকে ১ম বিভাগ থেকে প্রিমিয়ারে, মাদারবাড়ী মুক্তকণ্ঠকে ২য় বিভাগ থেকে ১ম বিভাগে, সীতাকুন্ড উপজেলাকে ২য় বিভাগ থেকে ১ম বিভাগে উন্নীত। তার হাতে গড়া ৬০ জনেরও বেশি খেলোয়াড় চট্টগ্রাম প্রিমিয়ারে, ১০০ এর বেশি ১ম বিভাগে এবং ৫০ এর অর্ধে ঢাকা লীগে খেলছে। উদীয়মানের ক্রিকেট একাডেমীর প্রথম চেয়ারম্যান ছিলেন আলহাজ্ব আলী আব্বাস। বর্তমানে রয়েছেন মনোয়ার আহমেদ।
আমার উল্লেখযোগ্য কোচদের মধ্যে দৌলতুল জামান খান, তপন দত্ত, সাইফুল্লা চৌধুরী, নুরুল আবেদীন নোবেল, ইন্দু স্যার প্রমুখ। একাডেমির উন্নয়নের কাজে সিনিয়র ক্রিকেটার সোহেল আহমেদ, সাবেক কাউন্সিলর আলহাজ্ব এম.এ. মালেক, সমিউল্লাহ বাচ্চু, শামসুল হক, দিদারুল আলম চৌধুরী, আলম ভাই, আলহাজ্ব আলী আব্বাস, লিটু দাশ বাবলু, আবছার ভাই, মুন্না ভাই এবং প্রত্যাশা ক্লাবের ম্যানেজারসহ আরো অনেকে তাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন বলে শ্রদ্ধার সাথে উল্লেখ করেছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট