চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

কঠিন হলেও সিরিজ জয়ই স্বপ্ন টাইগারদের

বাংলাদেশ-ভারত শেষ টি-টোয়েন্টি আজ

হুমায়ুন কবির কিরণ

১০ নভেম্বর, ২০১৯ | ৩:১০ পূর্বাহ্ণ

আইসিসি কর্তৃক সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞার সাথে তার ক’দিন আগেই দেশে ক্রিকেটারদের আন্দোলনের সূত্র ধরে মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল ভারত সফরে উড়াল দিয়েছিল বিধ্বস্ত অবস্থায়। দিল্লিতে ধুলোর ঝড়ের সাথে লড়াই করে স্বাগতিক ভারতকে তাদের মাটিতে হারিয়ে সফরের প্রথম ম্যাচে জয় পায় টাইগাররা। তাতে বিধ্বস্ত অবস্থা উধাও হয়ে টাইগার শিবিরে বয়ে আসে স্বস্তি। রাজকোটে অপেক্ষায় ছিল ইতিহাস, ভারতকে তাদের মাটিতে উপমহাদেশের কোন দেশ হিসাবে প্রথমবারের মতো সিরিজ হারানো। কিন্তু হলো তার উল্টো। এক রোহিত ঝড়েই ল-ভ- বাংলাদেশ স্বাগতিকদের উপহার দেয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে সমতা। যে কারণে আজ সিরিজের শেষ ম্যাচটি ফাইনাল। নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট এসোসিয়েশন মাঠে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু হতে যাওয়া ম্যাচটি জিততে পারলে ইতিহাস রচিত হবে, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা পারবেন তো-স্টার স্পোর্টস কিংবা জিটিভির সৌজন্যে পুরো জাতির নজর থাকবে আজ সন্ধ্যায় ভারতের নাগপুরে। নিজেদের মাটিতে কখনো টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারেনি ভারত। তবে

দেশের মাটিতে ভারতকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারানোর পথ তৈরি করেছে বাংলাদেশ। জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করে টাইগাররা। দিল্লীতে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে জয় পায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। এরপর আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মার বিধ্বংসী ব্যাটিং-এ বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দীর্ঘায়িত হয়। ৬টি করে চার-ছক্কায় ৪৩ বলে ৮৫ রান করেন রোহিত। সিরিজে সমতা ফেরায় ভারত। কিন্তু তারপরও সিরিজ জয়ের আশা ছাড়েনি বাংলাদেশ। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের করে নেয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় ম্যাচে আমরা ভালো অবস্থায় ছিলাম। কিন্তু ব্যাটিং-এ আমরা কিছু ভুল করেছি। তবে বিশ্বাস করি, আমরা ভারতকে চাপে রাখতে পারি এবং যেকোন দিনই তাদের হারাতে পারি’। চলতি সিরিজেই ভারতকে এই ফরম্যাটে প্রথমবারের মত হারানোর নজির গড়ে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত ১০ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। এরমধ্যে ৯টিতে জিতেছে ভারত। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে আজ দু’টি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশ থেকে বাদ পড়ছেন মোসাদ্দেক হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান। গ্রোয়েন ইনজুরিতে পড়েছেন মোসাদ্দেক। তার জায়গায় খেলবেন মোহাম্মদ মিথুন। আর দু’ম্যাচে মাত্র ৪ ওভার বল করেছেন ফিজ। তার পরিবর্তে প্রায় একবছর পর টি-টোয়েন্টি খেলতে নামবেন আরেক বাঁ-হাতি আবু হায়দার।

নাগপুরের উইকেটও আশা দেখাচ্ছে। এখানকার উইকেট স্পিন সহায়ক হয়। রান ওঠে বেশ কম। আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ কোন পরাশক্তি নয়। ছোট লক্ষ্য হলে, উইকেট বোলিং সহায়ক হলে দলের জয়ের সম্ভবনা বেড়ে যায়। বাংলাদেশ দলে বড় হার্ড হিটার না থাকায় দুইশ’র আশপাশে রান করা বা ওই রান তাড়া করে জেতা কঠিন। কোচ জানান, অবশ্যই এটাকে তিনি এবং তার দল বড় সুযোগ হিসেবে দেখছে। সুযোগটাও তারা নিতে চান। বলেন, কম রানের উইকেট হলে আমাদের ক্রিকেটাররা সহজে লড়াই করতে পারে। কোচের কথায় যুক্তি আছে। কঠিন উইকেট হোক কিংবা সহজ বাংলাদেশের রানের চাকা যেন ১৫০ এর ঘরেই বাধা। দিল্লীর কঠিন উইকেটে দেড়শ ছোঁয়া রান তাড়া করে জিতেছে বাংলাদেশ। আবার রাজকোটের ব্যাটিং স্বর্গে দেড়শর আশে-পাশেই থেমেছে। নাগপুরে সর্বশেষ চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের একটিতেও প্রথমে ব্যাট করা দল দেড়শ রান করতে পারেনি। ভারতের কঠিন উইকেটগুলোর একটি ধরা হয় নাগপুরের উইকেটকে। এখানে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারত প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৪৪ রান তোলে। জবাবে নামা ইংল্যান্ড ৫ রানে হারে। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেনে আফগানিস্তান ১২৭ রান তুলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬ রানে জেতে। নাগপুরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেনের অন্য ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ১২২ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয় তুলে নেয় ৩ উইকেটে। সুপার টেনেরই অন্য এক ম্যাচে নিউজিল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে তোলে ১২৬ রান। ভারত মাত্র ৭৯ রানে অলআউট হয়ে যায়। আজ বাংলাদেশ দল কী করে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায় ভক্তরা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট