চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

জেমি ডে’র হাত ধরে ফুটবলে বাংলাদেশের উত্থান

স্পোর্টস ডেস্ক

১৮ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:৩৪ পূর্বাহ্ণ

খাদের কিনারা থেকে যেন জেগে উঠছে বাংলাদেশের ফুটবল। চলতি বছরে আট ম্যাচ খেলে র‌্যাঙ্কিংয়ে যোজন যোজন দূরে থাকা দলগুলোর বিপক্ষে গত আট ম্যাচে চার জয়ের পাশাপাশি দুটিতে ড্র করেছে জামাল ভূঁইয়ারা। যে দুটি ম্যাচে হেরেছে সেখানেও দাপট দেখিয়েছে লাল-সবুজরা। যে কারণে গতকাল বাংলাদেশ সফর করা ফিফা প্রেসিডেন্টও জামাল ভুঁইয়াদের প্রশংসা করেছেন। যার হাত দরে বাংলাদেশ ফুটবলের এ উত্থান তিনি হলেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ জেমি ডে। দেশের ফুটবলের দুর্দিনে হাল ধরেছেন লন্ডনে জন্ম নেয়া ৩৯ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নগরিক। খুব বেশিদিন হয়নি জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছেন। এরমধ্যে অনেকটাই পরিবর্তন নিয়ে এসেছেন।

বিশ্লেষকরা যা বলছেন: ফুটবল বিশ্লেষকদের মতে বাংলাদেশ ফুটবল এখনো পুরোপুরি এগিয়ে না গেলেও বেশ কিছু জায়গায় অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে, যার অন্যতম হলো খেলোয়ারদের ফিটনেসের উন্নতি। সম্প্রতি প্রকাশিত বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, একটা সময় বাংলাদেশের ফুটবলের অবস্থান এমন ছিল যে পুরো ৯০ মিনিট টানা একই ছন্দে খেলে যাওয়া কঠিন হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু শেষ কয়েকটি ম্যাচে সে অবস্থানে পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিতে ১-০ ব্যবধানে হারলেও, তুলনামূলক ভালো শারীরিক সক্ষমতার আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠের ফুটবলে পুরোটা সময় টক্কর দিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ ফুটবল দলের একটা বিষয়ের অভাব সেটা হলো ধারাবাহিকতা। কাতার বা ভারতের মতো দলের বিপক্ষে শক্তির ব্যবধানটা অনেক বেশি। তবে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস এখন বেশ উঁচুতে। একটা তরুণ দল যখন মাঠে নামে তখন শারিরীক সক্ষমতা বা দক্ষতার বাইরে একটা ব্যাপার থাকে যেটা ফুটবলে বেশ প্রয়োজন। গত ১০ অক্টোবর ২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের গ্রুপ ‘ই’তে শক্তিশালী কাতারের কাছে ২-০ গোলের আক্ষেপ ভরা এক হারে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। কাতার বর্তমান এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন। বিশ্বকাপ ফুটবলের পরবর্তী আসরের আয়োজক এই দলটি এই মুহূর্তে ফিফার বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে ৬২তম স্থানে আছে। তবে অনূর্ধ্ব-২৩ পর্যায়ের একটি ম্যাচে কাতারকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল বাংলাদেশের দলটি। গোলটি করেছেন বর্তমান বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া।

ফলাফল বিশ্লেষণ: দেড় বছরের অঘোষিত নির্বাসনের পর বাংলাদেশ মোট ১৩টি আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ খেলে, যার মধ্যে ৬টিতে জয় পায়। ভুটানের সাথে দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ২-০ ব্যবধানে জয় পায়। পাকিস্তানকে হারায় ১-০ ব্যবধানে। ২০১৮ সালের পয়লা অক্টোবর লাওসকে হারায় ১-০ ব্যবধানে। এরপর ২০১৯ সালে কম্বোডিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে এবং লাওসের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রাক বাছাই ম্যাচেও জয় পায়। এই ছয়টি ম্যাচে জয় ছাড়াও বাংলাদেশ ফুটবল দল মোট ৫টি ম্যাচ হারে ও ২টি ম্যাচে ড্র করে। বাংলাদেশ যেসব দলকে হারিয়েছে অর্থাৎ, ভুটান, লাওস ও পাকিস্তান, তাদের মধ্যে ভুটানের র‌্যাঙ্কিং এখন বাংলাদেশের চেয়ে ওপরে।

লাওস বাংলাদেশের চেয়ে এক ধাপ নিচে। পাকিস্তানের অবস্থান র‌্যাঙ্কিংয়ে ২০৩।
ফিফা র‌্যাঙ্কিং: গত শতাব্দীর শেষ দশক ছিল বাংলাদেশের ফুটবলের সেরা সময়। র‌্যাঙ্কিং বলছে ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১৬ নম্বরে। যেটা ২০০০ নাগাদ ১৫১ নম্বরে আসে। এরপর বাংলাদেশ ফুটবল দল ফিফার এই তালিকায় উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে যায়। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ ছিল ১৭৪ নম্বর অবস্থানে, সেখান থেকে এক বছরের ব্যবধানে ১৪৯ নম্বরে উঠে আসে বাংলাদেশ। কিন্তু এরপর নামতে নামতে ২০০ এর কাছাকাছি পৌঁছায়, অল্পের জন্য ২০০ না ছুলেও বাংলাদেশ ১৯৭ নম্বরে নেমে আসে ২০১৭ সালে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট