চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অভাবনীয় প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশ স্ট্রাইকারের

স্বপ্নের ঘোরে সাদ

স্পোর্টস ডেস্ক

১৭ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:০৩ পূর্বাহ্ণ

ফিরে আসা বোধহয় একেই বলে! বছর খানেক আগে এক পথ দুর্ঘটনায় মোহাম্মদ সাদউদ্দিনের ফুটবল জীবনে নেমে এসেছিল অন্ধকার। বল পায়ে আর মাঠে নামতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন সবাই। পরশু তাঁর বিষাক্ত ‘ছোবল’ ভারতের জালে আঁছড়ে পড়তেই নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণ। বিশাল স্টেডিয়ামে একটা পিন পড়লেও তখন যেন তার শব্দ পাওয়া যেত। পদ্মাপাড়ে তখন অন্য ছবি। সেখানে সাদউদ্দিনকে নিয়ে তখন আবেগের প্রবল সুনামি। দেশের সবুজ জার্সিতে প্রথম গোল কওে যেন জাতীয় নায়ক হয়ে গিয়েছেন আবাহনী ক্রীড়াচক্রের এই ফুটবলার। কলকাতার বারুদে ঠাসা ভারত-বাংলাদেশ বিশ্বকাপের যোগ্যতা পর্বেও ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করার যন্ত্রণায় সুনীল ছেল্ফীর ভক্তদেও হৃদয় যখন ক্ষতবিক্ষত, সাদউদ্দিনের মনে তখন অদ্ভুত এক প্রশান্তি। গতকালও যেন ঘোরের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশের গোলদাতা। ভারতের একটি দৈনিককে সাদ বলেন, ‘বছর খানেক আগে এক পথ দুর্ঘটনায় আমার ফুটবল জীবনে নেমে এসেছিল প্রশ্নচিহ্ন। বাঁ পায়ে প্রচ- চোট লেগেছিল। মাঠের বাইরে বসে অনেকগুলো ম্যাচ আমাকে দেখতে হয়েছিল। একজন ফুটবলারের মাঠের বাইরে বসে থাকা যে কতটা যান্ত্রণার, তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। চোট সারিয়ে ফেরার পরে কত মানুষ কত রকমের কথা বলেছে। কঠিন সময়ে দাঁতে দাঁত চেপে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আমাকে ফিরে আসতেই হবে। নিজেকে প্রমাণ করতেই হবে। কলকাতায় এসে এ রকম একটা ম্যাচে গোল করতে পেওে আমার খুব ভাল লাগছে।’

সাদউদ্দিন আরও বললেন, ‘প্রতিটি ম্যাচেই আমাদের কিছু পরিকল্পনা থাকে। ভারতের বিরুদ্ধেও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করেই আমরা খেলতে নেমেছিলাম। তবে খারাপ লাগছে শেষ মুহূর্তে আমরা গোল হজম করে বসায়। না হলে ম্যাচটা জিতেই আমরা কলকাতা ছাড়তাম। তবে আমরা হোমওয়ার্ক করেই খেলতে নেমেচিলাম। ভারত-কাতার ম্যাচ আমি দেখেছি। গুরপ্রীতভাই ওদেও ২৮টা শট বাঁচিয়েছিল। ওই রকম একজন গোলকিপারকে গোল করার অনুভূতিটাই অন্যরকম। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমি বল ফলো করে গিয়েছি।’ ভারতের মাঠে তাদেও বিপক্ষে এক পয়েন্ট ছিনিয়ে আনাও কম সাফল্য মনে করছেন না সাদ উদ্দিন। বলেন, ‘ভারত আমাদের চেয়ে র‌্যাংকিংয়ে বেশ এগিয়ে। তাদেও বিপক্ষে এক পয়েন্ট পাওয়াটাও বড় সাফল্য। তবে আমরা যদি তিন পয়েন্ট পেতাম তাহলে অনেক ভালো লাগতো। কিন্তু তারপরেও কোনো আক্ষেপ নেই। পয়েন্ট নিয়ে দেশে ফিরে আসতে পারছি, এটাই বড় কথা।’ বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলে খেলে গত বছর ঢাকার সাফে সাদের অভিষেক। আর এই প্রথম জাতীয় দলের হয়ে প্রথম গোল। ৮০ হাজার দর্শকের সামনে এমন গোলের স্মৃতি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে সাদ জানালেন, ‘এতো দর্শকের সামনে আগে খেলিনি। তবে কোনো চাপ নেইনি। কোচ বলেছে ম্যাচটি উপভোগ করতে। নিজের সেরাটুকু দিতে। সবাই মিলে সেটাই করেছি। আর আমার জাতীয় দলের ক্যারিয়ারে এই প্রথম গোল প্রাপ্তি। কলকাতার এই মাঠে এতো দর্শকের সামনে গোলটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট