চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মেয়র কাপে অবৈধ ফুটবলার খেলানোর অপচেষ্টা

দেবাশীষ বড়–য়া দেবু

১০ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:৪২ পূর্বাহ্ণ

এ যেন অশুদ্ধ এক প্রতিযোগিতা। ‘কিভাবে অবৈধ খেলোয়াড়কে বৈধ করা যায়’ এটাই ক্লাব কর্মকর্তাদের কাছে রীতিমতো গবেষনায় বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। আসন্ন মেয়র আন্ত: ওয়ার্ড কাপ ফুটবলকে নিয়েই এমনটা হচ্ছে। এই যেমন ধরুণ, ফুটবলারটি আপনার এলাকার নয়। কিন্তু আপনি দায়িত্ব নিয়েছেন, তাকে আপনার এলাকার বাসিন্দা হিসেবে প্রমান করার। তাকে আপনি আপনার এলাকা সম্পর্কে একটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করছেন। এই যেমন কোথায় কি আছে, এলাকা কমিশনারের নাম কী, এলাকার কলেজ, স্কুলের নাম ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে যারা যাচাই বাছাই করেন, তারাও কিন্তু কম ধুরন্ধর নন। ধরুণ, সালাম নামের (ছদ্মনাম) কোন এক ফুটবলারকে যে কোন একটি ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবে কোন একজন প্রমান করতে চাইছে। ধরে নিলাম, বাগমনিরাম, চান্দগাঁও বা লালখান বাজার ওয়ার্ডের হয়ে খেলতে চায়। তাকে আপনি এলাকার সব নামধাম শিখিয়ে দিলেন। সেও শিখে নিলো। কিন্তু যদি তাকে বলা হয়, আপনি লালখান বাজার থেকে কিভাবে নিউ মার্কেট যাবেন। সে যদি চালাক হয়, বলবে টেক্সী বা রিক্সা নিয়ে। সেটা হয়তো সবাইই বলবে। কিন্তু যদি জিজ্ঞেস করা হয়, বাসে করে যেতে চাইলে কোত্থেকে উঠবেন বা কতো নম্বর বাস যায়। বা তাকে জিজ্ঞেস করা হলো হোটেল রেডিসন ব্লু থেকে স্টেডিয়ামের দূরত্ব কতো ?

নিয়মানুসারে এবারের মেয়র কাপের জন্য এক একটি দলে ২০ জন করে স্থানীয় এবং কোটা হিসেবে বাইরে থেকে ১০ জন নেয়া যাবে। কোটার জন্য চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলা এবং বৃহত্তর চট্টগ্রামের জেলাগুলো থেকে নেয়া যাবে। তবে এক ম্যাচে কোটার খেলোয়াড় হিসেবে ৪ জনের বেশি খেলানো যাবে না।

এখানে কোটার খেলোয়াড়কেও স্থানীয় হিসেবে চালিয়ে নেয়ার জোর প্রচেস্টা চলছে। বয়স কম দেখিয়ে, ভোটার কার্ড না হয়নি বলে নকল মা অথবা বাবার ভোটার আইডি কার্ড দিয়েই চালিয়ে নেয়ার চেস্টা চলছে। এই অর্থে নকল যে, সেই খেলোয়াড়টিতো ঐ এলাকার নয়। কিন্তু ঐ এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করা কাউকে বাবা বা মা বানিয়ে নেয়ার অপচেস্টা চালানো হচ্ছে। সেখানে কেউ কেউ উৎরে যায়, আবার কেউ কেউ ফেসেও গেছেন। এখানে আরেক ধরণের চেস্টাও চালানো হয়ে থাকে। এই যেমন কেউ টিকে গেল, কিন্তু ছবি দেবার সময়ে সে অন্যজনের ছবি দেয়ার একটা অপচেস্টা চালাতে পারে।

যোগাযোগ করা হলে বাছাই কমিটির সাথে সংশ্লিস্ট চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি এস এম শহীদুল ইসলাম বলেন, কোন খেলোয়াড়ের যদি নিজস্ব আইডি কার্র্ড থাকে তাহলে কোন সমস্যা হয় না। না থাকলে, সেক্ষেত্রে এস এস সি’র ছবিসম্বলিত রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও মা বাবার আইডি কার্ড চেক করা হয়। তাকে আরো জিজ্ঞেস করা হয় স্কুলের প্রধান এবং ক্রীড়া শিক্ষকের নাম। এতে যারা পড়াশুনা করেনা, তাদেরকে স্ব স্ব ওয়ার্ডের কমিশনার লিখে দেয় এবং তাদের মা বাবার আইডি কার্ড পরীক্ষা করা হয়। এখানে যারা নকল মা বাবা বানানোর চেষ্টা করেন, তাদেরকে ফোন করে জিজ্ঞেস করা হয় এই নামে আপনার কোন ছেলে আছে নাকি। দেখা যায়, ছেলেকে জিজ্ঞেস করলো বাবা কি করেন, ছেলে বললো, ব্যবসা। কিন্তু বাবাব বললো, সরকারি চাকুরে। এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে প্রসঙ্গ এস এম শহীদুল ইসলাম বলেন, কোটার খেলেয়াড় প্রমান করতে আমাদের বেশ সমস্যায় পড়তে হতে পারে। কেননা, ম্যাচের আগের দিন পর্যন্ত কোটার ফুটবলারর রেজিস্ট্রেশন করার বিধান রাখা হয়েছে। সেখানে, কেউ যদি বাইরের খেলোয়াড় এনে বলে কক্সবাজার, বান্দরবান বা খাগড়াছড়ি’র। সেক্ষেত্রে এতো কম সময়ের মধ্যে সেটা প্রমান করাটা দুরহ হয়ে উঠতে পারে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট