চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

টাইগারদের হতাশার প্রথম দিনটিতে ৩টি রেকর্ড

দেবাশীষ বড়–য়া দেবু

৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:০৫ পূর্বাহ্ণ

রহমত শাহ’র সেঞ্চুরি, তাইজুলের দ্রুততম ১০০ উইকেট
চট্টগ্রাম টেস্ট/১ম দিন
আফগানিস্তান: ২৭১/৫/৯৬ ওভার

সাগরিকায় টাইগারদের হতাশায় কাটানো প্রথম দিনটাতে ৩টি রেকর্ডের সৃষ্টি হলো। যার মধ্যে একটি রেকর্ড কোনদিনও ভাঙ্গার মতো নয়, অপর ২টি যে কোন সময় সম্ভব হতে পারে। এই যেমন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একমাত্র টেস্টের প্রথম দিন শেষে সংগৃহীত ৫ উইকেটে ২৭১ রানে মধ্যে আফগানিস্তানের হয়ে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান হয়ে রেকর্ডের পাতায় নাম স্থায়ী করে ফেলেছেন ১০২ রান করা রহমত শাহ। ২৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান এমনই একটা রেকর্ড গড়লেন যা তার কাছ থেকে কখনোই কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। নিজেদের তৃতীয় টেস্টেই প্রথম সেঞ্চুরিয়ানকে খুজে পেল আফগানিস্তান। অপর ২টি রেকর্ডের মধ্যে বাংলাদেশের তাইজুল ইসলাম ২৫ ম্যাচে ১০০ টেস্ট উইকেট নিয়ে সাকিব আল হাসানের ২৮ ম্যাচে এ কৃতিত্বকে পেছনে ফেললেন। এতে মো. রফিক প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৩৩ ম্যাচে ১০০ উইকেট নিয়েছিলেন। এই রেকর্ডটি যে কোন বাংলাদেশি ভেঙ্গে ফেলতে পারে। এছাড়া গতকাল চট্টগ্রাম টেস্টে টস করার সাথে সাথেই ২০ বছর ৩৫০ দিনে বিশে^ সবচেয়ে কমবয়সী অধিনায়ক হিসেবে নিজের নাম রেকর্ড বুকে তুলেছেন। এতোদিন এ রেকর্ডটি ছিল ২০০৪ সালে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে
। ৯ম পৃষ্ঠার ৫ম ক.­

জিম্বাবুয়ের টাটেন্ডা টাইবুর ২০ বছর ৩৫৮ দিনের দখলে। তাইজুলের মতো এ রেকর্ডটিও কোন একদিন ভেঙ্গে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম টেস্ট শুরু হওয়ার আগে সফরকারি আফগানিস্তান দলকে নিয়ে যেমনটা ভাবা হয়েছিলো, মাঠে ঠিক তার উল্টোটাকে যেন হলো। টেস্টে নবীন হলেও প্রতিরোধ আর ধৈর্যের পরীক্ষায় যেন অনেকটাই পরিণত হয়ে উঠতে যাওয়া আফগানিস্তানকে গতকাল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে খুজে পাওয়া গেল। সিরিজের একমাত্র টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশি বোলারদের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাড়ানোর পাশাপাশি মোটামুটি বেশ স্বস্থির সাথেই ৯৬ ওভারে ৫ উইকেটে ২৭১ রান সংগ্রহ করেছে। এতে আফগানদের ইতিহাসে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে রহমত শাহ ১০২ রান করে আউট হন। ৮৮ রানে অপরাজিত থাকা আসগর আফগান দেশের হয়ে দ্বিতীয় সেঞ্চুরিয়ান হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। আফসার জাজাই রানে অপরাজিত আছেন। এছাড়া ইব্রাহীম জারদার ২১ ও হাসমতউল্লাহ শহীদি ১৪ রান করে আউট হয়েছেন। বাংলাদেশের দুই সফল বোলার চট্টগ্রামের ছেলে নঈম হাসান ৪৩ ও রেকর্ডম্যান তাইজুল ইসলাম ৭৩ রানে ২টি করে উইকেট নেন। এছাড়া ৯ রানে ১ উইকেট পান মাহামুদউল্লাহ।

চট্টগ্রাম টেস্টে বিশেষজ্ঞ কোনো পেসার ছাড়াই খেলতে নামে বাংলাদেশ। তবে টাইগারদের স্পিন আক্রমণে ভড়কে না গিয়ে নিজেদের সেরাটাই দিয়েছে আফগানিস্তান। সাগরিকার এই স্পিন স্বর্গে ৫ স্পিনার নিয়েও আফগানিস্তানকে কাঁপন ধরাতে পারেনি বাংলাদেশ। উল্টো রহমত শাহ (১০২) ও আসগর আফগান (অপ:৮৮)-র ব্যাটে ভর করে প্রথমদিনটা সফরকারিরা বেশ স্বস্থিতেই কাটিয়েছে।

বাংলাদেশের স্পিনাররা শুরুটা ভালো করলেও সেটাকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি। ১৩ তম ওভারেই আফগান শিবিরে আঘাত হেনে কম টেস্টে ১০০ উইকেটের রেকর্ড গড়েন তাইজুল। ইহসানউল্লাহ (৯)- কে সরাসরি বোল্ড করে তিনি বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য পাইয়ে দেন। দলীয় ৪৮ রানে আবারো আঘাত হানেন তাইজুল। এবারে তিনি মাহামুদউল্লাহ’র সহায়তায় (ক্যাচ) সাজঘরে পাঠান ২১ রান করা ইব্রাহিম জারদানকে। এরপর লাঞ্চের আগে বৈচিত্রের জন্য মাহামুদউল্লাহকে দিয়ে বল করিয়েই সাফল্য পান টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান। দলীয় ৭৭ রানে হাসমতউল্লাহ শহীদি (১৪) মাহামুদউল্লাহ বলে সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দেন। এতে করে ৩ উইকেটে ৭৭ রানে লাঞ্চ ব্রেকে যায় আফগানিস্তান। দ্বিতীয় সেশনে এসে খুব একটা ভুল পথে পা বাড়াননি রহমত শাহ ও নতুন ব্যাটসম্যান আসগর আফগান। দারুণ ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন দলকে। অস্বস্থির কোর রেশ ছিল না তাদের খেলায়। প্রাথমিক বিপর্যয় কাটিয়ে সচল রাখেন রানের চাকা। এদিকে দলীয় ১৯ রানের মাথায় ক্রিজে আসা আফগান ব্যাটসম্যান রহমত শাহ ১৯৭ রান পর্যন্ত উইকেটেই কাটিয়ে দেন, গড়েন একটার পর একটা জুটি। সেই সঙ্গে তুলে নেন দুুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ১২০ রানের অসাধারণ এই পার্টনারশিপটা ভেঙ্গেছেন চট্টগ্রামেরই ছেলে তরুণ স্পিনার নাইম হাসান। একই ওভারে একই রানে (১৯৭) মোহাম্মদ নবীকে বোল্ড করলে খেলায় ফিরে আসে বাংলাদেশ। কিন্তু সেই জোড়া ছোবলের পর আবার হতাশায় নিমজ্জিত হয় বাংলাদেশ। শেষ দিকে আসগর ও আফসার জাজাই আবারো দলের হাল ধরেন এবং অপরাজিত ৭৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ২৭১ রানে খেলা শেষ করেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট