চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সাগরিকায় পার্থক্য গড়ে দেবে ব্যাটিং

চট্টগ্রামে ‘সুদিন’ ফেরাতে চান সাকিব

স্পোর্টস ডেস্ক

৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:৫৭ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের মধ্যকার একমাত্র টেস্টে দুই দলের স্পিনাররাই থাকবেন পাদ প্রদীপের আলোয়। সাগরিকার স্পিন স্বর্গে ঘূর্ণি যাদু চালিয়ে নাকাল করতে চাইবেন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানকে। সাকিব, তাইজুল, মিরাজরা যেমন অফস্পিন বিষ ঢেলে আফগান ব্যাটসম্যানদের নীল করতে চাইবেন, তেমনি লেগ স্পিন বিষে টাইগার বধের উৎসব করতে চাইবে আফগানরা। ঠিক এমন একটি কন্ডিশনে জয়ের প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে ব্যাটিং। ঘূর্ণি যাদুর পিচে যে দল যত বেশি ধৈর্য্যশীল ব্যাটিং করবে জয়ের তিলক অঙ্কিত হবে তাদের কপালেই। গতকাল জহুর আহেমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে একথা বলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তিনি জানালেন, ‘দেখুন, দেশে আমরা ভালোই বোলিং করেছি।

আমাদের স্পিনাররা যখনই সুযোগ পেয়েছে তাদের পছন্দ মতো উইকেট পেয়েছে। তারা সবসময় ভালো করেছে। কিন্তু এটাও ঠিক ওদের দলেও মানসম্মত স্পিনার আছে। আমার কাছে মনে হয় এখানে পার্থক্যটা গড়ে দিতে পারে দুই দলের ব্যাটিংটাই।’ বলার অপেক্ষাই রাখছে না বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হওয়া টাইগার-আফগান টেস্টে এগিয়ে থাকবে টাইগাররাই। কারণটিও পানির মতো পরিষ্কার। সাদা পোশাকে সাকিবরা যেখানে ১৯ বছরের অভিজ্ঞতায় পুষ্ট সেখানে রশিদ খানরা শুরুই করেছে মাত্র তিন বছর হলো। স্বাগতিক দলে পাঁচ সদস্য আছেন সাদা পোশাকে যারা নুন্যতম ১০ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন। সেই বিবেচনায় সফরকারীরা একবারেই সদ্যজাত! খেলেছে মাত্র দুটি টেস্ট। র‌্যাংকিংয়ে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ।

১৯ বছরের অভিজ্ঞতার মিশেলে থাকছে হোম কন্ডিশনের বাড়তি সুবিধাও। যা শতভাগ আদায় করে নিয়ে ক্রিকেটে সবসময়ের শক্তিধর অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর অভিজ্ঞতা সাকিবদের আছে। নিজেদের মাটিতে টিম বাংলাদেশ কতটা পারঙ্গম গোটা ক্রিকেট বিশ্বই তা অবাক চোখে দেখেছে। সেই দলটিই যখন সাদা পোশাকে সদ্য জন্ম নেওয়া একটি দলের বিপক্ষে খেলবে নিশ্চই চাপে থাকবে। কেননা রশিদ খানদের হারানোর কিছু নেই। কিন্তু সাকিবরা হেরে গেলেই যে মহাবিপদ! তবে, কোনো বিবেচনাতেই আফগানদের পিছিয়ে রাখতে সম্মত নন টাইগার দলপতি সাকিব, ‘র‌্যাংকিংটা খুব বেশি ম্যাটার করে বলে আমার কাছে মনে হয় না। এর একটা বড় কারণ হলো ওরা এত ভালো ক্রিকেট খেলছে স্বাভাবিকভাবেই হয়তো ফরম্যাটটা আলাদা হওয়ায় আমরা ভিন্নভাবে ভাবছি। কিন্তু ওদের দলে তো ওরকম প্লেয়ার আছে যারা ম্যাচ জেতাতে সক্ষম।’

এদিকে চট্টগ্রাম টেস্ট জয় দিয়ে ক্রিকেটে সুদিন ফেরানোর আশা সাকিববের। তার মতে তিনিসহ পুরো দেশের ক্রিকেট অস্থিরতায় ভুগছে। একটা জয়ের জন্য ছটফট করছে পুরো বাংলাদেশ দল। নিজেদের সেরা দল নিয়ে বিশ্বকাপে গিয়েও ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করেছে বাংলাদেশ। স্বপ্নের ডানা মেলে যেখানে উড়ার কথা, সেখানে পুরো দল ব্যর্থ। ব্যর্থতা ঝেরে ফেলার সুযোগ এসেছিল শ্রীলংকা সফরে। এমন অস্থিরতা থেকে সুদিন ফেরাতে দরকার একটি জয়। টেস্ট অধিনায়ক সাকিব মনে করেন, একটি জয়ে অনেক কিছু স্বাভাবিক হতে পারে। সেজন্য চট্টগ্রাম টেস্ট বেছে নিয়েছেন সাকিব। যে কোনো ব্যবধানে ম্যাচটি জিততে মুখিয়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। টেস্টের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেছেন, ‘শেষ কিছুদিন আমাদের ক্রিকেটে ভালো সময় কাটেনি। সবদিক থেকে। সেটা ‘এ’ দল বলেন, একাডেমি দল বলেন। অনুর্ধ্ব-১৯ দল ইংল্যান্ডে একটা ফাইনালে গিয়েছিল। এ ছাড়া কোথাও আমাদের ভালো কোনো সাফল্য নেই। সেদিক থেকে বললে এই ম্যাচটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি এ ম্যাচটি ভালোভাবে জিততে পারি অনেক কিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।’ জয়ের ব্যবধানে সাকিবের আগ্রহ নেই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সাকিব জয় চান সেটাই শেষ কথা, ‘জয়টা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এক রানে জিতলেও জয়, ১০০ রানে জিতলেও জয়। ১ উইকেট বা ১০ উইকেটে জিতলেও জয়। জয়টা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’

ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে জয়ের ফানুস উড়াতে চান সাকিব। জয়ের ক্ষুধায় মগ্ন সাকিব আফগানদের হারিয়ে নতুন শুরু করতে চান। অধিনায়কের বিশ্বাস, পুরো দল এক হয়ে খেললে চট্টগ্রামে বিজয়ের পতাকা উড়াতে পারবে বাংলাদেশ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট