চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

মেধা নাকি নারী !

তিলক বড়ুয়া রুবেল

২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | ১২:৩৩ অপরাহ্ণ

কেন এমন হবে? না বলছিলাম শিরোনামের কথা! যখনই নারী শব্দটি উচ্চারিত হয়, তখনই প্রথাগতভাবে সামনে এসে দাঁড়ায় নমনীয় মেনে নেয়ার জন্য সর্বধা প্রস্তুত এক শরীর সর্বস্ব প্রাণী! এই ‘প্রথাগত’ শব্দটির পরিক্রমা দীর্ঘদিনের। একাধিক নারী শব্দটির সাথে উপরোক্ত শব্দগুলো সমার্থক হয়নি বহুকাল ধর যুদ্ধে পরাজিত হতে কালের বিবর্তনে যে নারী আজ প্রতীয়মান, তাকে যদি আমরা একটু ফিরে ৬০০০ খৃষ্টপূর্বাব্দে ভোলগা নদীর তীরে যে মানবগোষ্ঠি পরিবার স্থাপন করেছিল, সেই সমাজে ফিরে যেতে হবে। যেখানে নারী ছিল সৌর্য বীর্যের প্রতীক। নারীকে কেন্দ্র করে যেখানে গড়ে উঠতো পরিবার, গ্রোত্র, সমাজ। নারীর শক্তির কাছে মাথা নত করতো পুরো সমাজ ব্যবস্থা। যেখানে নারী নির্বাচন করতো উত্তরাধিকারের পিতাকে।

তো ইতিহাসের পাতায় নারী তো নারীই ছিলো। অবলা কিংবা দুর্বল ছিলো না। অন্যভাবে বলতে গেলে আমরা যেভাবে দোহাই দিই নারী সৃষ্টিগতভাবেই শারীরিকভাবে নমনীয় কিংবা দুর্বল। তা কিন্তু নয়। সেদিনের সে নারী প্রধান সমাজ ব্যবস্থায় নারী সবকিছুর নেতৃত্ব দিয়েছে এবং সে সময়ের প্রয়োজন মিটিয়েছে। সেদিন নারী শক্তিও ছিলো মেধাবীও ছিলো। তার মেধা এবং শক্তিমত্তা কোনোভাবেই প্রকৃতিপ্রদত্ত বলে দুর্বলতা প্রকাশ করেনি।

একটু চটুল করে ভাবলে বলা হয় প্রতিদ্বন্দ্বীকে সবাই পরাজিত করতে চায়-সেদিনের পুরুষ যদি সেই সমাজ ব্যবস্থাকে ভাঙ্গার চেষ্টা করে থাকে এবং সেই চেষ্টা কিংবা অপচেষ্টার সফলতা হয়তো আজকের এই অবস্থায় তবে সেই বিজয়ী পুরুষতান্ত্রিক সমাজ, পরাজিতদের পরাজিত করে ক্ষান্ত হয়নি, বরং মুখে মুখে নারীকে, নারীর শরীরে বন্দি করে মানসিকভাবে দুর্বল করে দিয়েছে। আসলে নারীকে আর কখনোই কৃতত্ব ফিরিয়ে না দেয়ায় অপকৌশলে বন্দি করে ফেলেছে এবং সেখানে বেড়ে উঠা অনেক নারীই এবং নারীর প্রধান প্রতিপক্ষ।

সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে রুপনা চাকমা কিংবা সাবিনা খাতুনদের দাপুটে জয় চারদিকে হৈ চৈ ফেলে দিচ্ছে তখন যারা নাক সিটকায় কিংবা শরীরের দোহাই দেয় তারা সেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রপাগন্ডা চালানো অপকৌশলধারী পুরুষ কিংবা গৃহপালিত নারীরাই! যাদের অবস্থান নারী নামক মানুষের বিরুদ্ধে। শুধু সাফ আসরই নয়, ক্রীড়াঙ্গনে বিভিন্ন ইভেন্টে নারীরা সাফল্য পাচ্ছে। এ থেকেই প্রতিয়মান উদ্দেশ্য আর চর্চা ঠিক থাকলে নারীরা খেলাধুলায় পিছিয়ে থাকবে না। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেকে বিমান চালনা, দেশ পরিচালনা সব ক্ষেত্রেই নারী তার মেধা শক্তির প্রমাণ রেখেছে।

অতীত কিংবা বর্তমান সব জায়গায় নারী নারীই, তবে অবলা নয় বরং মেধা, শক্তি, সম্মান শ্রদ্ধার জায়গায় ছিলো থাকবে। শুধু নিপাত যাক অপকৌশল। তাই নারী কখনোই পুরুষ হতে চাইবে না। নারী নারীই হবে। শুধু মননে, চিন্তায় প্রবাহমান ধারায় ভাবার জায়গাটুকু পরিবর্তন করতে হবে। তাতেই নারী পুরুষ স্ব-স্ব জায়গায় থেকে সুন্দর ধরণী সুন্দরতম করে তুলবে। সাথে মিলবে শ্রেষ্ঠত্বের গৌরব।

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট