চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের পাশের ইনডোর

ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া থেকে আসছে এস্টোটার্ফ

হুমায়ুন কবির কিরণ

১ ডিসেম্বর, ২০২১ | ১২:৫২ অপরাহ্ণ

স্পিন উইকেট বানিয়ে প্রতিপক্ষকে কাবু করে জয়, এই হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের চিরায়ত দর্শন। গতকাল শেষ হওয়া চট্টগ্রাম টেস্টে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেট স্পোর্টিং হলেও তাকে ব্যাটিং বান্ধবই মনে করছেন টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক। তবে এই উইকেটেই সাফল্য পেয়েছেন পাকিস্তানের পেসাররা। টাইগার পেসাররা পাবেন কিভাবে, দেশের ভিতরে ঘাসের উইকেটে তাদের যে অনুশীলনটাও হয় না। মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটের উইকেট কিংবা বাংলাদেশ ক্রিকেটে যে উইকেট চর্চা তাতে ক্রিকেটারদের স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে না পারার হতাশা দীর্ঘদিনের। বিশ্ব পরিমণ্ডলেও টাইগারদের ফ্লাট উইকেটে খেলার নিরন্তর সমালোচনা হয়। সদ্য সমাপ্ত টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ যে মুখ থুবড়ে পড়েছে সেটাও নিয়মিত স্পিন/মন্থর উইকেটে খেলার কারণেই, অন্তত সমালোচকরা সেটাই মানছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কবে এই জায়গায় মানসিকতা পাল্টাবে সেটা সময়ই বলে দিবে। তবে আপাতত. চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জাইকার অর্থায়নে যে ইনডোরের কাজ চলছে তাতে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের এস্টোটার্ফই বসতে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া থেকে দুটি গ্রিন টার্ফ (ঘাসের আদলে) ইতিমধ্যেই চলে এসেছে। ইংল্যান্ডের দুটি ইউনি টার্ফ (কার্পেট/ম্যাট আদলে) কয়েকদিনের মধ্যেই চলে আসবে বলে জানা গেছে। অস্ট্রেলিয়ার দুটি টার্ফ ইনডোরে বসে গেলে অনুশীলনে দারুণ আনন্দ পাবেন উঠতি পেসাররা। কারণ ঘরের মাঠে ঘাসের উইকেট দেখতেই পান না বোলাররা। যে কারণে সফরে গিয়ে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায় বেকায়দায় পড়তে হয় ব্যাটসম্যানদের। কয়েকমাসের মধ্যেই ব্যবহারের উপযোগী হয়ে উঠবে ইনডোর স্টেডিয়ামটি। এটি বিসিবি বা এনএসসি করছে না, তৈরি করে দিচ্ছে সিডিএ এবং জাপানি প্রতিষ্ঠান জাইকা। সিডিএর উন্নয়ন প্রকল্প সাগরিকা-পোর্ট কানেক্টিং রোডের ফ্লাইওভারের কারণে স্টেডিয়ামের পুরাতন ইনডোর ভাঙা পড়া ও জায়গা ব্যবহারের ক্ষতিপূরণ হিসেবে নতুন ইনডোরটি তৈরি করে দিচ্ছে তারা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও ভেন্যু ম্যানেজার ফজলে বারী খান রুবেল বলেন, ‘ইনডোরে চারটি উইকেট থাকছে। দুটি করে চারটি উইকেট আসছে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড থেকে। ইনডোরের কাজ প্রায় শেষের পথে। টাইলস, গ্লাস ও টার্ফ বসানোর কাজগুলো বাকি আছে। দু’মাসের মধ্যেই অনুশীলনের উপযোগী হবে ইনডোরটি।
অনেকে এই উইকেটগুলোকে ড্রপ ইন পিচ বললেও ফজলে বারী খান রুবেল জানালেন, আসলে তা নয়, এগুলো মূলত টার্ফই, বলা হয় এস্টোটার্ফ বা আর্টিফিসিয়াল টার্ফ। হকি স্টেডিয়ামে কিংবা ফুটবল মাঠে যে টার্ফ বসানো হয় সেরকম। ক্রিকেটের জন্য টার্ফ ক্রিকেট উপযোগী করেই তৈরি করা হয়। শুধু ইনডোরেই নয় অনেকসময় আউটডোরেও এমন উইকেট বসানো হয় রক্ষণাবেক্ষণে সুবিধার জন্য। ইনডোরে এই এস্টোটার্ফ বসে গেলে উঠতি ক্রিকেটাররা দারুণভাবে উপকৃত হবে। একইসাথে প্রয়োজনে যারাই ব্যবহার করবে তারাই এর সুফল পাবে। তবে সারা দেশেই যেখানে মন্থর উইকেট সেখানে চট্টগ্রামের ইনডোরে ঘাসের উইকেট হোক সেটা কৃত্রিম, তাতে অনুশীলন করে দেশে প্রতিযোগিতামুলক খেলায় কি সুফল আসবে? কারণ সেখানেও যে ঘাসের উইকেট থাকতে হবে। এ্যাওয়ে কোন সফরের আগে প্রয়োজনে এই ইনডোর ব্যবহারে দারুণ লাভবান হতে পারে ক্রিকেটাররা। এমনও হতে পারে, চট্টগ্রামের এই ইনডোরের মাধ্যমেই সূচিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে দিন পরিবর্তন।

 

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট