চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘পারিবারিক শান্তি ভালো ক্রিকেট খেলতে সাহায্য করছে’

রোহিতের স্বপ্নভঙ্গের মাটি থেকে স্বপ্নপূরণ

স্পোর্টস ডেস্ক

১৮ জুন, ২০১৯ | ১:৩০ পূর্বাহ্ণ

জীবনে সুযোগ পেয়েও সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার যন্ত্রণা কী, রোহিত শর্মার চেয়ে ভাল কেউ জানেন না। অস্ট্রেলিয়ায় ত্রিদেশীয় ওয়ান ডে সিরিজে তাঁর স্ট্রোক নেওয়ার দক্ষতা দেখে ইয়ান চ্যাপেল পর্যন্ত উচ্ছ্বসিত ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় রোহিতের ব্যাটিং দেখে ইয়ান বলেছিলেন, ভারতীয় ক্রিকেটে রাজ করার নতুন লোক এসে গিয়েছে।
পাকিস্তানকে হারিয়ে যিনি বিলেতের পাঁচতারা হোটেলে ঢুকে গেলেন, একটা সময়ে তাঁর স্কুলের বেতন দেওয়ার মতো সচ্ছলতাটুকুও ছিল না। এমনই পরিস্থিতি হয়েছিল যে, ক্রিকেট খেলার জন্য স্কুল পাল্টানোর কথা ভাবতে গিয়ে তাঁর পরিবারকে অনেক ভাবতে হয়েছিল। কারণ, নতুন স্কুলে বেতন অনেক বেশি। তাঁর প্রতিভা দেখে শেষ পর্যন্ত স্কুল কর্তৃপক্ষ বেতন কাটছাঁট করতে রাজি হয়। না হলে রোহিত গুরুনাথ শর্মা কোথায় যে হারিয়ে যেতেন! তার পরেও রোহিত গুরুনাথ শর্মা কোথায় যে হারিয়ে যাচ্ছিলেন! ২০১১ বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন ভেস্তে গেল। তাঁর নিজের শহরে কোহালিদের কাঁধে চড়ে শচিন টেন্ডুলকারের ওয়াংখেড়ে প্রদক্ষিণ করার সময় তিনি ভারতীয় দলের ধারেকাছেও নেই। চোরাবালিতে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে তাঁর দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলার স্বপ্নই। বাড়িতে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে টিভিতে খেলা দেখতে দেখতে তিনি বলে ওঠেন, ‘আমাকেও বিশ্বকাপ খেলতে হবে। তার জন্য যা যা করার, করব আমি।’ দীনেশ লাড তাঁর ছোটবেলার কোচ। অফস্পিনার থেকে তাঁকে ব্যাটসম্যান বানানোর পিছনে দ্রোণাচার্য তিনি। এক দিন নেটে পিছন থেকে দেখেন একটি ছেলে ছোড়া বলে ব্যাটিং করছে। দেখেই বোঝেন, অসাধারণ সময়জ্ঞান। তখনই রোহিতকে বলেন, ‘অফস্পিন ছাড়, ব্যাটিং শুরু কর।’ সেই শুরু রোহিতের ব্যাটিং অভিযান। পরশু ম্যানচেস্টারে মেঘলা আকাশের নীচেও যা সূর্যকিরণের মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠল। বিরাট কোহালি যেমন নিজেকে বিশ্বের সব চেয়ে ফিট ক্রিকেটার করে তোলেন, রোহিত তা পারেননি। কিন্তু দেশের মাটিতে হওয়া বিশ্বকাপের ম্যাচ টিভিতে দেখতে দেখতে সেই যে শপথ নিলেন, পরিশ্রমে নিজেকে ডুবিয়ে দেবেন, তার পর এক মাসের মধ্যে প্রায় দশ কেজি কমিয়ে ফেললেন। রোহিতের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে স্ত্রী রীতিকার অবদানও অনস্বীকার্য। রোহিতকে নরমসরম, আত্মভোলা এক যুবক থেকে আত্মবিশ্বাসী পেশাদার করে তুলেছেন তাঁর স্ত্রী। দু’জনের বন্ধন শুরু হয়েছিল বাণিজ্য দিয়ে। রোহিতের বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত কাজ দেখাশোনা করতেন রীতিকা। সেখান থেকে গড়ে উঠে জীবনের পার্টনারশিপ। রোহিত নিজেও চলতি বিশ্বকাপে এমন স্বপ্নের ফর্ম নিয়ে বলে গেলেন, ‘আমি খুব ভাল মানসিক অবস্থানে রয়েছি। পারিবারিক দিক থেকে খুব শান্তির জগতে আছি। মেয়ে হওয়ার পরে সুখশান্তির মেজাজে আছি। সেটাই আমার সাফল্যের কারণ।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট