চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

স্বস্তির পরশে আতঙ্ক হাওয়া

স্পোর্টস ডেস্ক

১৭ জুন, ২০১৯ | ২:১৮ পূর্বাহ্ণ

উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম হাতে আঘাত পেয়েছেন। যদিও বাংলাদেশ দল থেকে জানানো হয়েছে সেখানে কোন ফ্রাকচার নেই। তারপরও ভক্তরা আছেন দু:শ্চিন্তায়। মিডল অর্ডারে ভরসার অন্যতম প্রতিক মুশি আজ খেলতে পারবেনতো? মুশিকে নিয়ে শংকা বা আতংক থাকলেও স্বস্তির হাওয়া ছড়িয়ে দিয়েছে বিশ্ব সেরা অল-রাউন্ডার। নেটে নকিং-টকিং নয়, নিয়মিত নেট করেছেনতিনি। টনটনের দৈনন্দিন জীবনে শহুরে ঝাঁজ নেই। তবে এখানকার নেট বোলাররা যেভাবে ব্যাটসম্যানের কানের পাশ দিয়ে শাঁইশাঁই বল নিয়ে যাচ্ছিলেন, তা দেখে মুগ্ধ একটু আগেই প্রথম দফায় ব্যাটিং করে আসা সৌম্য সরকার, ‘এখানকার নেট বোলাররা দারুণ!’ কিন্তু সেই তাঁদেরই একজন, রেনল্ট হুমড়ি খেয়ে পড়তেই থমকে পড়ে নেট এবং পাশেই ফুটবল খেলে গা গরমে ব্যস্ত প্রস্তুতি পর্বের দ্বিতীয় ব্যাচ। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের ড্রাইভের বল সোজা গিয়ে আঘাত হানে নেট বোলারের বাঁ কানের নিচে। আজকাল বল মাথার আশপাশে লাগলেই ডিপ্রেশনে চলে যায় পক্ষ-বিপক্ষ সবাই। নেট থামিয়ে সেখান থেকেই চিৎকার শোনা যাচ্ছে, ‘তিহান, জলদি আসো!’ বাংলাদেশ দলের ফিজিও তিহান চন্দ্রমোহন নেটে লুটিয়ে পড়া রেনল্টের কাছে যেতে যেতে আইসিসির মেডিক্যাল টিমের সদস্যও হাজির। কিছুক্ষণ শুশ্রুষার পর নেট বোলারটি হেঁটেই ফিরেছেন মেডিক্যাল রুমে। স্বস্তিও ফেরে। তবে স্থানীয় আরেক নেট বোলার দেখি হতাশায় গজগজ করছেন, ‘এই ছেলেটাকে আগে কখনো দেখিনি। কেন যে এই পর্যায়ে বোলিং করতে আসে!’ পাশ থেকে শুনে মাশরাফি বিন মর্তুজা সেই ছেলেটিকে পাল্টা পরামর্শ দেন, ‘খবরদার, ক্রিস গেইলের নেটে বোলিং করতে যেও না!’ এই গেইলের বিপক্ষে সোমবার হয়তো বোলিং করতে হবে মাশরাফিকে। ছোট মাঠে স্বঘোষিত ‘ইউনিভার্স বসে’র মিস হিটগুলোও গ্যালারি উঁচিয়ে বাইরে গিয়ে পড়তে পারে। তবে গেইলরা সাউদাম্পটনে ম্যাচ খেলে গতকালই মাত্র টনটনে পৌঁছেছে। তাই আর প্র্যাকটিসে আসেনি। তবে দ্বিতীয় দফায় ব্যাটিংয়ে নামা সৌম্যর তুলে তুলে মারা দেখে মনে হলো ‘গেইল চলে এলেন নাকি!’ নাহ, সেই দানবীয় শক্তি তো কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানেরই নেই। তবে পেস কিংবা স্পিনে সৌম্যর একটার পর একটা তুলে মারা শট সীমানাদড়ির বাইরে গিয়েই পড়ছিল।
সেটা দেখে বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হবেই যে, মাঠের আকৃতির সুবিধা তো বাংলাদেশও পাবে। কার্ডিফে নিশ্চিত ক্যাচগুলো এ মাঠে ছক্কার হাতছানির প্রতিশ্রুতি দেবে। এর পরও পাওয়ার হিটিংয়ে ক্যারিবীয়রা নিঃসন্দেহে এগিয়ে। গেইলের সামর্থ্যরে বিস্তারিত না বললেও চলে। তবে শুরুতে তাঁর সঙ্গী এভিন লুইস নিজের দিনে গেইলের সমান বিধ্বংসী। দুজনেই বাঁহাতি। তাই আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের বোলিং শুরুর ছকে অফস্পিন থাকার সম্ভাবনা প্রবল। মেহেদী হাসান মিরাজ আছেন। হঠাৎ দেখা গেল মাহমুদউল্লাহও স্পট বোলিং করছেন! রাউন্ড আর্ম নয়, কাঁধের চোটের কারণে সাইড আর্মে কয়েকটি বল করেই অবশ্য সরে গেছেন তিনি। তাতে অন্তত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে মাহমুদের হাতে বল ওঠার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। অবশ্য এতে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। বাঁহাতি লুইসের বিপক্ষে মানসিক লড়াইয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে আমি মনে হয় দুইবার আউট করেছিলাম ওকে’, বলার সময় স্বভাবতই মুস্তাফিজুর রহমানের চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক। তবে ওই সিরিজে লুইসের উইকেট আরো বেশি, তিনবার নিয়েছিলেন মাশরাফি। তবে টনটনের মেঘলা আকাশ থেকে যে চোখ সরানো যাচ্ছে না! প্র্যাকটিসের ফাঁকে মাশরাফিই বলছিলেন, ‘এই ম্যাচটিও বৃষ্টিতে বাতিল হলে আমরা শেষ!’ এমনিতেই শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে পূর্বপরিকল্পিত পূর্ণ পয়েন্ট পাওয়া হয়নি। তার আগে নিউজিল্যান্ড ম্যাচটিও ফসকে গেছে মুঠো থেকে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট