চট্টগ্রাম শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩

দুঃসময়টা পার করতে জানি : সৌম্য

স্পোর্টস ডেস্ক

১ জুন, ২০১৯ | ২:১৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ দলের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকারের প্রতিভা নিয়ে সন্দেহ করার কোন অবকাশ নেই। কিন্তু অধারাবাহিক পারফর্মেন্স বারবারই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে তাঁকে। যে কারণে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা পাওয়াও অনেক কঠিন হয়ে পড়েছিল তাঁর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটেও অধারাবাহিক পারফর্মেন্স সঙ্গী হয়ে ছিল সৌম্যর। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে নিজেকে খুঁজে পেলেন সৌম্য। টানা দুই ম্যাচে এক সেঞ্চুরি এবং একটি ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সকলের ধারণা মিথ্যে প্রমাণ করলেন তিনি। জানান দিলেন এখনো ফুরিয়ে যাননি সৌম্য, ফিরে এসেছেন চেনা রূপে। ডিপিএলের পারফর্মেন্সে জায়গা করে নিলেন বিশ্বকাপের স্কোয়াডে। দুঃসময়টা কিভাবে পার করতে হয় শিখে গেছেন সৌম্য।
প্রশ্ন: আপনার বিশ্বকাপ প্রস্তুতি কেমন?
সৌম্য: আমার জন্য বিশ্বকাপের প্রস্তুতির সবচেয়ে বড় মঞ্চ ছিল সদ্য শেষ হওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল)। আমি অনেক পরিশ্রম করেছি। আমি ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছি এবং পরিকল্পনা সাজিয়েছি যদি আমি থিতু হতে পারি তাহলে বড় ইনিংস খেলার চেষ্টা করব।
প্রশ্ন: ২০১৫ বিশ্বকাপে তরুণ ক্রিকেটার হিসেবে খেলেছিলেন, বিশ্বকাপের ম্যাচ ছিল আপনার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচ, সেই বিশ্বকাপে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
সৌম্য: এটা আমার জন্য রোমাঞ্চকর ছিল। কিছুদিন পূর্বেই ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম এবং আকস্মিকভাবে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ডাক পাই। সত্যিই আমার জন্য অনেক বড় টুর্নামেন্ট ছিল। সেই সময় বিশাল দর্শকের সামনে খেলা এবং চাপের মাঝে খেলা আমার জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এবার বিষয়টি ভিন্ন কিন্তু আমি সেই অনুভুতিটি আমার ভেতর রাখতে চাই কারণ এটা আমার ভেতরের উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয় এবং সামনে এগোতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন: এই বিশ্বকাপে আপনার ভূমিকা কি এবং কোথায় আপনি ব্যাট করতে পছন্দ করবেন?
সৌম্য: টপ অর্ডার এবং লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিং করা দুইটাই ভিন্ন। আমি সব জায়গায়ই আমার সেরাটা খেলার চেষ্টা করব। আমার পরিকল্পনায় আমি সংকল্পবদ্ধ থাকতে চেষ্টা করব। যদি আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাই তাহলে সেটা হবে ভিন্ন, আবার যদি আপনি একটা লক্ষ্য দিয়ে দেন তাহলে তখন বিষয়টা ভিন্ন। মূল কথা হচ্ছে আমি চেষ্টা করব দল যা চায় সেটা করার।
প্রশ্ন: যখন আপনি খেলায় কোন সমস্যার সম্মুখীন হন তখন কার শরণাপন্ন হন অথবা কোথায় যান?
সৌম্য: আমি আমার পরিবারের সাথে থাকতে চেষ্টা করি কারণ তাঁরা আমাকে বেশি অনুপ্রেরণা যোগায়। তাঁরা সবসময় ইতিবাচক কথাই বলে। আমি বিকেএসপি তে বিশু স্যারের (আখিনুর রহমান) কাছে যাই এবং তিনি আমাকে সাহায্য করেন খারাপ জিনিস থেকে বেরিয়ে আসতে।
প্রশ্ন: এখন ৩০০ রান করা খুবই সহজ, আপনি কিভাবে এর সাথে মানিয়ে নিবেন? কারণ আপনি বাংলাদেশকে ৩০০ রান এনে দেয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারবেন।
সৌম্য: প্রথমত আপনাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে যে আমি পারব ৩০০ রান তাড়া করতে। এই না যে আপনাকে প্রথম ওভার থেকেই মারতে হবে, আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে। রান করার জন্য বোলার নির্বাচন করতে হবে, তাহলে সবকিছু সহজ হয়ে যাবে। মাঝে মধ্যে একজন বোলার খুব ভালো বোলিং করেন, তাই বোলার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে।
প্রশ্ন: আপনার বোলিং কেমন চলছে? কেমন কাজ করছেন বোলিংয়ের ওপর? যদিও আপনি জোরে বল করেন না তবে ভালো বল করেন। স্পিন বোলিংয়ে চলে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা আছে?
সৌম্য: যখনই সুযোগ আসে বোলিং করার চেষ্টা করি। অধিনায়কের যখন আমাকে প্রয়োজন হবে তখনই যেন সুযোগটি লুফে নিতে পারি এর জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকি। আমি হাতেগোনা কয়েকটি ম্যাচে বোলিংয়ের সুযোগ পেয়েছি, যার ফলে আমি চাপে বোলিং করার ক্ষেত্রে উন্নতি করে পেরেছি। আমি সামনের সময়ে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত।
প্রশ্ন: ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ যাত্রাটা কেমন ছিল? দলের মনোভাব কেমন বিশ্বকাপের জন্য? এই বিশ্বকাপে নিজেদের আন্ডারডগ ভাবেন?
সৌম্য: অবশ্যই আন্ডারডগের খ্যাতি নিয়ে আমরা এবার বিশ্বকাপের মঞ্চে মাঠে নামছি না। কারণ ২০১৫ সালের পর অনেক পথ পাড়ি দিয়েছে দলটি। এটা আমাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছে যে নিজেদের যোগ্যতা মত খেলতে পারলে আমরা আমাদের দিনে যে কোন দলকে হারিয়ে দিতে পারি।
প্রশ্ন: রান তাড়ার ক্ষেত্রে আপনার অভিমত কি? কোহলি বলেছিলেন এটা নির্ভর করে কতগুলো ওভার বাকি আছে তার ওপর, বলের ওপর নয়। যা কোহলির জন্য রান তাড়া সহজ করে দেয়। আপনার কি সেইরকম চিন্তা ভাবনা?
সৌম্য: আমি মনে করি লক্ষ্যের দিকে তাকানোর চেয়ে যদি আমরা ১০ ওভার করে পরিকল্পনা করি তাহলে একটা সময় সহজ হয়ে যাবে লক্ষ্য।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট