চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

চন্দনাইশের বাজারে মৌসুমী তাল ৃ

মো. দেলোয়ার হোসেন হ চন্দনাইশ

১৯ মে, ২০১৯ | ১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

বছরের অন্যতম মৌসুমী ফল তালের ডাব। আগে তেমন একটা দেখা না গেলেও এখন চন্দনাইশের বিভিন্ন হাট-বাজার, গ্রামে-গঞ্জে, দোকানের সামনে, পাড়ায়-মহল্লায় বিক্রি হচ্ছে মৌসুমী ফল তালের ডাব। সারা দেশে গরমে অতিষ্ট জনজীবন। একটু শীতলতার জন্য হাহাকার সবদিকে। তাই যে যেদিকে শীতলতার একটু পরশ পায়, সে শীতলতার পরম স্বাদ উপভোগ করে নেয়। জনজীবন যখন গরমে অতিষ্ট ঠিক তখনি সকলের মাঝে তৃপ্তির ফল হিসেবে বাজারে এসেছে সুমিষ্ট তাল। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে উপজেলার সব জায়গায় এখন তালের শাঁস খাওয়ার ধুম পড়েছে।
‘তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে, সব গাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে’-কবির সে কবিতার মত সড়কের দু’পাশে কিংবা বিলের আঁইলে সারি সারি আগের মত খুব একটা চোখে পড়ে না। তাল গাছে কানা বগীর ছা ও বাবুই পাখির বাসাও আগের মত নাই বললেই চলে। তবে একপায়ে দাঁড়িয়ে থাকা সেই তাল গাছের কদর এখনো রয়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি তালশাস ও পাকা তালের কদর রয়েছে প্রচুর। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও চন্দনাইশে এ তালশাসের চাহিদা বেড়েই চলেছে দিন দিন। মৌসুমী ফল হিসেবে তালশাস গ্রামীণ অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে।
প্রতি বছর মে-জুন মাসে তালের সরব চোখে পড়ার মতো। এক শ্রেণির মৌসুমী ব্যবসায়ীর মাধ্যমে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। ভৌগোলিকভাবে পাহাড়-নদীতে ঘেরা চন্দনাইশের এ জনপদ সমৃদ্ধতার কারণে প্রচুর মৌসুমী ফল আম, কাঁঠাল, জাম, লেবু, আনারস ও পেয়ারার সুখ্যাতি রয়েছে। চন্দনাইশের পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত পেয়ারা ও লেবুর সুখ্যাতি সারাদেশে। জ্যৈষ্ঠ মাসের আগেই উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় আম ও লিচুর চাষও হয়েছে প্রচুর। সেই সাথে আম ও কাঁঠালের উৎপাদনও হয়েছে ভাল। তার পাশাপাশি সমতল এলাকায় চন্দনাইশের বিভিন্ন এলাকায় এ মৌসুমী ফল তালের ডাব কেটে বিক্রি করে অনেকেই চালাচ্ছে তাদের সংসার। কয়েক হাত বদলি হয়ে তালের ডাব যায় ক্রেতাদের হাতে। সাইজ অনুযায়ী ৫ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি তালের ডাব অনেকেই আগ্রহ করে খেতে দেখা যায়। প্রতিদিন রাস্তার পার্শ্বে বিভিন্ন এলাকায় এ গ্রীষ্মকালীন ফল তালের ডাব খেয়ে অনেকেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে দেখা যায়। মধুফলের মৌসুমেই তালের ডাব অনেকটা সাধারণ মানুষের কাছে এ গরমের দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিক্রেতারাও সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তালের ডাব খেলে তেমন কোন ক্ষতি হয় না। তাই তাল পাকার আগে বিক্রি করছে গাছের মালিক। এ ব্যাপারে কয়েকজন গাছের মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাল পাকতে লাগে ৪ থেকে ৫ মাস। আর তখন একই দামে পাকা তাল বিক্রি করা যায়। ফলে গাছের মালিক আগেই কাঁচা তালের ডাব বিক্রি করে সেই টাকা হাত করে নিচ্ছে। পরে গাছের পাতা বিক্রি করে হাতপাখা তৈরির কারিগরদের কাছে। সব মিলিয়ে তালের ডাব সাধারণ মানুষের কাছে সুস্বাদু ফল হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট