চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নূর-এ জান্নাত রুমি শিক্ষা প্রসারে আন্তরিকতা যার পুঁজি

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা

৮ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৪:৪৫ পূর্বাহ্ণ

একজন মানুষ মহৎ হয়ে ওঠেন তার কর্মগুণে। পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা তাদের কর্ম, ধ্যান-জ্ঞান, অর্জন সবকিছু উৎসর্গ করেন দেশের স্বার্থে, মানুষের কল্যাণে। আন্তরিকতা যার পুঁজি। নিঃস্বার্থভাবে করেন মানুষের উপকার, দেশের কল্যাণ। তারা কর্তব্য কাজে ফাঁকি না দিয়ে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন আন্তরিকতা দিয়ে।

এমনই একজন হলেন লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-এ জান্নাত রুমি। এই কর্মবীর শৈল্পিক মানুষটি ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ লামা উপজেলায় যোগদান করেই শিক্ষাকে সার্বজনীন, গুণগত ও মানসম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে প্রাথমিক শিক্ষার ওপর কাজ শুরু করেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন- প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই শিশুর মেধা বিকাশের বুনিয়াদ গঠন হয়। তাই রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কখনো বাঁশের সাঁকো বেয়ে, কখনো ক্ষেতের আলপথ দিয়ে হেঁটে, কখনো ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে তিনি ছুটে চলেন ভৌগোলিকভাবে পাহাড়-সমতলে অবস্থিত গ্রাম্য প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে। এমন কিছু বিদ্যালয়ে তিনি গিয়েছেন, যেখানে আগে কখনো কোন ইউএনও’র পায়ের চিহ্ন পড়েনি।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ ও ঝরেপড়া রোধকল্পে বিদ্যালয় পরিদর্শন, অভিভাবক সমাবেশ, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ,

মিড ডে মিল উপকরণ (টিফিন বক্স) বিতরণ, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ (কলম, খাতা, জ্যামিতি বক্স), পোশাক বিতরণ, জার্সি ও ক্রীড়াসামগ্রী বিতরণ, পরিষ্কার ও নিরাপদ পানি ব্যবস্থার জন্য পানির ফিল্টার বিতরণ, শ্রেণিকক্ষ ও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ বিদ্যালয়কে আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে ফুলবাগান করা, শ্রেণিকক্ষে ঝুড়ি স্থাপন, পরিচ্ছন্ন দল গঠন, বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বেঞ্চ সরবরাহসহ নানাবিধ প্রশংসনীয় ও শিক্ষাবান্ধব উদ্যোগ শিক্ষকদের মাধ্যমে গ্রহণ করেছেন।

এই কারণে লামা উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী বিদ্যালয়মুখী হয়েছে। এতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর উপস্থিতির হার বৃদ্ধি পেয়েছে, ঝরেপড়াও রোধ হয়েছে বলে অভিভাবক, শিক্ষক ও এলাকার গণ্যমান্য সচেতন ব্যক্তিরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। লামার আজিজনগর ইউনিয়নের ইমলামপুর বি. আলম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরুল আবচার বলেন, বর্তমান ইউএনও’র অক্লান্ত প্রচেষ্টায় আমাদের বিদ্যালয়ে এক কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে তিন তলাবিশিষ্ট নতুন ভবন হচ্ছে। তিনি প্রায়সময় এসে আমাদের বিদ্যালয় পরিদর্শন করে স্কুলের শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তপন কুমার চৌধুরী বলেন, একজন নারী হয়েও তিনি যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, তা প্রশংসনীয়। প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারে তার যে ভূমিকা তা কখনো ভুলার নয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট