চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

চিম্বুক পাহাড়ে নানা ধরনের ফল বাগান

ড্রাগন ফল চাষে লাখপতি তৈয় ¤্রাে

মিনারুল হক , বান্দরবান

৪ আগস্ট, ২০১৯ | ১:২৫ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়কে বলা হয়ে থাকে পাহাড়ের খাদ্য ভা-ার। জুম, ধান থেকে শুরু করে নানান ধরনের ফল-সবজি এমন কিছু নেই যা এখানে উৎপন্ন হয় না।
পাহাড়ি উর্বর মাটি, সেইসাথে মৌসুমের প্রচুর বৃষ্টি এই পাহাড়ে বাড়িয়েছে কৃষি উৎপাদন। তবে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে জুম চাষ কমেছে ওই এলাকায়। জুমের পাহাড়ে এখন শোভা পাচ্ছে নানা ধরনের ফলজ বাগান। আম, লিচু, কাঠাল, আনারস, পেপে, কলা, কমলা মাল্টা থেকে শুরু করে নানান ধরনের ফল । এবার চিম্বুক পাহাড়ে উৎপাদিত হচ্ছে জনপ্রিয় ড্রাগন ফল। চিম্বুক পাহাড়ের ৯ মাইল এলাকার কাছে বসন্ত পাড়ার চাষি তৈয় ¤্রাে প্রথম ড্রাগন ফলের বাগান করেন। তৈয় ¤্রাে ঐ এলাকায় বেশ জনপ্রিয় চাষি। তাকে ‘কৃষকের ডাক্তার’ও বলা হয়। তিনি অন্যান্য ফলের সাথে ড্রাগন বাগান করে লাভবান। তার ফল শুধু এলাকায় নয়, চলে যাচ্ছে ঢাকা চট্টগ্রামের বাজারে। বিদেশি ফল ড্রাগন ফলছে এখন বান্দরবানের পাহাড়েও। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে পাহাড়ি মাটিতে ড্রাগনের আশানুরূপ ফলন মিলছে। সরেজমিনে তয়ো ¤্রাে’র ড্রাগন বাগানে গিয়ে দেখা যায়, জায়গাটি খাড়া এবং পাহাড়ি ঢালবিশিষ্ট। সেখানে ৫০ শতকের জমিতে ৭০টি খুঁটিতে ড্রাগনের গাছ রয়েছে। এগুলো লাগানো হয়েছে দুই বছর আগে। হর্টিকালচার অফিসের কর্মকর্তাদের পরামর্শে ঠিকভাবে যত্ন নিয়েছেন তিনি। এর ফলে এক বছরের মাথায় বেশ ভাল ফলনও পেয়েছেন।
তয়ো ¤্রাে বলেন, বিদেশি ফল হিসেবে আশানুরূপ ফলন পাওয়া নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। কিন্তু ৭০ খুঁটিতে ৩০০ চারা থেকে ১৫ মণ ড্রাগন ফল পাওয়া গেছে। বিক্রি করে লাভ হয়েছে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। তয়ো ¤্রাে’র মতে, তাঁর ড্রাগন চাষের সাফল্য দেখে অনেকেই এখন ড্রাগনের চাষের দিকে ঝুঁকছেন, তবে সেগুলো সীমিত পরিসরে। বিদেশি নতুন ফল হওয়ায় এগুলোর পরিচর্যায় ঘাটতি রয়েছে। এ ব্যাপারে হর্টিকালচার কেন্দ্র থেকে সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ জানায়, ড্রাগন মূলত এক বছরের ফল। চারা লাগানোর এক বছরে মাথায় ফল ধরে। অন্য কোন চারা বা গাছে ড্রাগনের মতো ফল আসে না।
ড্রাগন ফলের চাষ একটি লাভজনক জীবিকা হয়ে উঠেছে। এর পুষ্টিগুণও বেশি। প্রতি কেজি ২০০-৩০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। ড্রাগন ফল-চাষে সাফল্য পেয়ে আরও উৎসাহিত হলেন তয়ো ¤্রাে। সিদ্ধান্ত নিলেন বিদেশি এই ফলের চাষ আরও প্রসারিত করার। ২০১৭ সাল থেকে নিজের উদ্যোগে এক একরের জায়গায় ৪১০টি খুঁটি লাগান তিনি। হর্টিকালচার কেন্দ্র থেকে দেয়া হয়েছে আরও ৫০টি খুঁটি। এতে মোট চারার সংখ্যা রয়েছে ১৮৪০টি। খরচ করতে হয়েছে ৪ লাখ টাকা। তয়ো ¤্রাে বলেন, নতুনভাবে করা এ-বাগান থেকে চলতি বছরে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
হর্টিকালচার কেন্দ্রের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে বান্দরবানে কয়েকটি উপজেলায় ৪০টি বাগানে ড্রাগন ফলের চারা দেয়া হয়েছে। তিনি আশা করছেন, দুই বছরের মধ্যে ড্রাগন ফলের ভাল বাজার সৃষ্টি হবে। যে-কোন কৃষক ড্রাগন ফল চাষ করার পর দুই বছরের মধ্যে উৎপাদন খরচ তুলে ফেলতে পারেন। এরপর থেকে সামান্য যতেœই বাড়তি লাভ করা সম্ভব।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট