শিশিরভেজা ভোরের আলো ফোঁটার সাথে সাথেই পাখির কলকাকলি। পাখির ডাকে ঘুম ভাঙে বর্ডার গার্ড ব্যাটেলিয়ন সদস্যসহ আশপাশ এলাকার মানুষের।
সাত সকালেই খাবারের সন্ধানে নীল আকাশে ডানা মেলে উড়তে শুরু করে সাদা বকের দল, কালো রংঙের পানকৌড়ি নানা জাতের শালিকসহ নাম না জানা অনেক অতিথি পাখি। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও অতিথি পাখির অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ৩ বিজিবি লোগাং জোন সদর দপ্তর। শীতের শুরুতেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অতিথি হয়ে এখানে আসে কয়েক হাজার নানা প্রজাতির সাদা বক। আকাশে ডানা মেলে ভাসতে ভাসতে ছুটে আসা এসব বক বিজিবি এলাকার গাছ-গাছালিকে বানিয়ে তুলেছে নিজ আবাসভূমি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে হাজারো অতিথি বকের সমাগম। সাথে রয়েছে কিছু কালো রংয়ের পানকৌড়ি ও বিভিন্ন প্রজাতির শালিক।
এসব অতিথিদের ডাক ওয়া-ওয়ার শব্দ মন মাতিয়ে তোলে। ৬-৭টি বড় বড় গাছের পাতায় পাতায় সাদা বকের অবস্থান যেন মুহূর্তেই মন কেড়ে নেয়। বিকেল ৪টার পর থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে বকের পাল উড়ে আসার দৃশ্য যেন আরো দৃষ্টিনন্দন। এই অতিথিদের উড়ে আসার অপরূপ ও মনমাতানো দৃশ্য একবার দেখলে মনে দাগ কাটবে যে কারোরই।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, সাত সকালেই এসব অতিথিরা এলাকার বিভিন্ন খালে-বিলে বেরিয়ে পড়ে খাবারের সন্ধানে। কিন্তু শালিকের কলকাকলিতে দিনভর মুখরিত থাকে বিজিবি সদর দপ্তর। শালিকের দল অবাধেই নির্ভয়ে বিচরণ করে বেড়ায় দপ্তরের এপার থেকে ওপার। আর বিকাল ৫টার পর থেকেই ফিরতে শুরু করে আপনালয়ে। সন্ধ্যা যতই ঘনিয়ে আসে সবুজ রংয়ের গাছগুলো ততই সাদাবর্ণ ধারণ করতে থাকে। একপর্যায়ে দূর থেকে গাছগুলোকে সাদা ফুলের থোকার মতো দেখায়।
এই অপরূপ সুন্দরের প্রাণবন্ত দৃশ্য বিজিবির প্রতিটি সদস্য উপভোগ করে মনপ্রাণ দিয়ে।
পানছড়ি এলাকার পুরনো বয়স্কদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, পানছড়ির বিভিন্ন এলাকার কিছু কিছু বাঁশ-ঝাড়ে অতিথি বকসহ নানা প্রজাতির পাখির আগমন ঘটতো। কিন্তু চোরাই শিকারিদের অত্যাচারে অতিথি পাখির আগমন এখন নেই বললেই চলে। ৩ বিজিবির মতো শতভাগ নিরাপদ জায়গা পেয়েই তারা অভয়াশ্রম গড়ে তুলেছে। নিরাপদ বলেই প্রতিবছর সাদা বকের সাথে নানান প্রজাতির পাখি অতিথি হয়ে ৩ বিজিবিতে অবস্থান করে পানছড়ির সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।
৩ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল রুবায়েত আলম জানান, বিকেলে নীল আকাশে ডানা মেলে উড়তে উড়তে অতিথিদের ফিরে আসার দৃশ্যটি বেশ উপভোগ্য। নিরাপদে বিচরণ করতে বিজিবির প্রতিটি সদস্য তাদের প্রতি আন্তরিক।