চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

বয়ঃসন্ধিতে ত্বকের বাড়তি যত্ন

অনলাইন ডেস্ক

১২ জুন, ২০২১ | ২:১৭ অপরাহ্ণ

ষোলো-সতেরোর বয়সটা কিছুটা বেপয়োরা। এসময় ছেলেমেয়েদের শারীরিক ও মানসিক উভয়দিকেই পরিবর্তন শুরু হয়।  বয়ঃসন্ধিতে শরীরে নানা ধরনের হরমোনাল পরিবর্তন হয়, যার প্রভাবে ত্বকের কোমলতা কমে যায়, ত্বক নির্জীব দেখায়। তবে, শারীরিক সমস্যা থেকে ত্বকে কোনো সমস্যা হলে, বাহ্যিক যত্নের মাধ্যমে নিরাময় করা সাময়িকভাবে সম্ভব হলেও তার রেশ রয়ে যায় পরেও। সেজন্য কিছু সচেতনতার প্রয়োজন। এই বয়সে ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদানকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। 

 

১.অ্যাকনে, পিম্পল মূলত হরমোনাল ইমব্যালান্সের জন্য হলেও মুখ ধুলো-ময়লা বা জীবাণুর সংস্পর্শে এলে তা ইনফেকশনে পরিণত হতে পারে। তাই মুখে বারবার হাত দেওয়ার অভ্যাসটা ত্যাগ করতে হবে। হাতে লেগে থাকা ময়লা থেকে স্কিন ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কাটা সবচেয়ে বেশি।

২.অনেকেরই এই বাজে অভ্যাসটা আছে, অ্যাকনে হলেই তা খুঁটে ফেলা। এতে মুখে দাগ বা ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। বয়ঃসন্ধিতে এই বদঅভ্যাসটা বদলাতেই হবে। অ্যাকনে হলে কোনো এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল লোশন, মেডিকেটেড সোপ বা নানা ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করতে পারেন। এর বাইরে মুখে কিছু না লাগানোই উত্তম।

৩.নিমপাতা ও চন্দন ব্রণ কমাতে অব্যর্থ। নিমপাতা ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিয়ে তারপর ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর এই ফোটানো পানি ছেঁকে হালকা ঠাণ্ডা করে নিয়ে মুখ ধোয়ায় ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া টাটকা চন্দনবাটা পরিষ্কার ত্বকে অ্যাকনের বা ব্রণের উপর লাগিয়ে বেশ খানিকক্ষণ বা সারারাত রেখে দিন। পরদিন নিমপাতা ফোটানো পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৪.সামান্য হলুদগুঁড়া ও দারুচিনিগুঁড়া একটি বাটিতে নিয়ে তাতে অল্প পরিমাণে মধু ও পাতিলেবুর রস মিশিয়ে নিন। এটি ব্রণের উপর লাগাতে পারেন। অথবা এককোয়া রসুন খোসা ছাড়িয়ে পরিষ্কার করে মাথার অংশ কেটে অ্যাকনে বা ব্রণের উপর ঘষুন। হালকা জ্বালাভাব হতে পারে, তাতে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। তবে ব্রণে যদি ক্ষত সৃষ্টি করে, সেক্ষেত্রে রসুন বা দারুচিনি ব্যবহার না করাই ভালো।

৫.ব্রণ শুকিয়ে গেলে কমলালেবুর খোসা গুঁড়া করে তা দিয়ে হালকা হাতে স্ক্রাবিং করুন। এতটাই মৃদুভাবে ঘষবেন যাতে ত্বকে প্রেশার না পড়ে। এর ফলে ত্বকে অ্যাকনের বা ব্রণের দাগ বসবে না।

৬.রেডনেস মূলত ইনফ্ল্যামেশনের চিহ্ন। রেডনেস কমাতে সবচেয়ে উপকারী পুদিনাপাতা এবং অ্যালোভেরা জেলের মিশ্রণ। পুদিনাপাতার রস অ্যালোভেরা জেলে মিশিয়ে সরাসরি রেডনেসের উপর ব্যবহার করতে পারেন। আরেকটা উপায় আছে, সেটা হলো এই মিশ্রণ জমিয়ে বরফ করে তা মুখে ঘষুন, উপকার পাবেন। এছাড়া ঠাণ্ডা গ্রিন টি ব্যাগ, শসার রস ইত্যাদিও ত্বক ঠাণ্ডা রাখতে এবং ইনফ্ল্যামেশন কমাতে সাহায্য করে।

৭.ত্বকে অতিরিক্ত ফেশিয়াল হেয়ার দেখা দিলে, বেসন, দুধ, নারকেল তেল আর দারুচিনি গুঁড়ার মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। ফেসপ্যাকের মতো লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তারপর শুকিয়ে গেলে হেয়ারগ্রোথের বিপরীতে ঘষুন।

৮.এই বয়সে অনেকসময় ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যায়। জেল্লা কমে গিয়ে অনেকের মুখে কালচে ছোপ পড়ে। এসব হলো হরমোনাল সমস্যা। কমলালেবুরর খোসা ছাড়াও টোমাটো ও পাকা পেঁপে এই ধরনের সমস্যা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

৯.বয়ঃসন্ধিতে মেকআপের প্রতি প্রায় সবারই আকর্ষণ থাকে। বিশেষ অনুষ্ঠান ছাড়া মেকআপ করবেন না। আর অনুষ্ঠান থাকলেও মেকআপ প্রডাক্ট ব্যবহারে কিছু লিমিট রাখা ভালো।

১০.কোন বয়সে কোনটা মানানসই বা কোনটা প্রয়োজন, সেটা মাথায় রাখতে হবে। এই বয়সে ত্বকের একটু-আধটু ইমপারফেকসনস সেভাবে চোখে পড়ে না। অতিরিক্ত মেকআপ করলে দৃষ্টিকটু লাগবে। বিবি বা সিসি ক্রিম, ফেস পাউডার, কাজল, লাইনার, ব্লাশ এবং কালার্ড লিপবাম বা লিপগ্লস ব্যবহার করা যেতে পারে। ফাউন্ডেশন, শ্যাডো এসব তুলে রাখুন পরের বয়সগুলোর জন্য।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট