চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

আমার কফি ও চা পান এবং কিছু পরিসংখ্যান

৯ ডিসেম্বর, ২০২২ | ১:২৮ অপরাহ্ণ

আমার কফি পানের অভ্যাসের সূচনা চার দশক আগে ১৯৮৩ সালে। শুরু থেকেই আমার প্রিয় ব্ল্যাক কফি। নো সুগার, নো মিল্ক। নিউইয়র্কে আমার পরিচিত সবাই জানে আমি ব্ল্যাক কফি ছাড়া পান করি না। এর কোনো ব্যতিক্রম কখনোই হয় না। এমন নয় যে আমি চা পান করি না, অবশ্যই চা পান করি। অতি গরম চা। দুধ চা হলে চিনি থাকতেই হবে, কিন্তু র-টি, যা বাঙালিরা ‘রং চা’ বলে, তা পান করি চিনি ছাড়া। এরও ব্যতিক্রম নেই। তবে গ্রিন টি হলে স্বাভাবিক চা সযত্নে পরিহার করি। চা ও কফি পান না করলে আমার দিন কাটে না, এমন নয়। দিনের পর দিন চা ও কফি পান না করেও কাটিয়ে দেই। কোনো কিছুকে অভ্যাস বা বদভ্যাসে পরিণত হতে দেই না।

 

পানীয়ের মধ্যে পৃথিবীতে জনপ্রিয় পানীয় হচ্ছে চা ও কফি। কিন্তু কোনটি অধিক জনপ্রিয় তা নিয়ে বিতর্ক প্রচুর। এ বিতর্কের অবসান ঘটানোর জন্য বিভিন্ন সংস্থা জরিপ চালিয়েছে, কিন্তু আদৌ কি এর অবসান ঘটেছে? হেলথলাইন পরিচালিত জরিপের প্রেক্ষিতে দেখা যেতে পারে যে দুটির মধ্যে কোন পানীয় অধিক জনপ্রিয়।

 

বিশ্বব্যাপী চা দ্বিতীয় জনপ্রিয় পানীয় হিসেবে বিবেচিত। ২০২১ সালে বিশ্বে চা পান করা হয়েছে ২৯৭ বিলিয়ন লিটার। ২০২০ সালে বিশ্বে চায়ের পাইকারি দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ এবং সেই বছর চীন চা বিক্রয় করে রাজস্ব আয় করেছে ৭৮.৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পান করা চায়ের ৭৫% থেকে ৮০% ছিল আইসড টি বাব রফ সহযোগে চান পান, এবং আমেরিকানরা ৮৯ বিলিয়ন কাপ চা পান করেছে।

 

কফির ওপর যে পরিসংখ্যানগুলো দেখা যায়, বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশ কফি উৎপান করে, এবং মোট উৎপাদিত কফির ৪৪% উৎপাদিত হয় ব্রাজিলে। ২০১৯ এর চেয়ে ২০২০ সালে কফি সেবন ৩% হ্রাস পেয়েছে। ২০২০ সালে নেদারল্যান্ডসে কফি পানের পরিমাণ ছিল মাথাপিছু ৮.৩ কিলোগ্রাম, যা বিশ্বে সর্বাধিক। মাথাপিছু কফি পানের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ২৫তম। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে কফিশপ বা ক্যাফের সংখ্যা ছিল ৩৭,০০০ এর অধিক। যুক্তরাষ্ট্রে কফি-সেবীরা দৈনিক গড়ে ২ থেকে ৩ কাপ কফি পান করেছেন। ৫৯% আমেরিকান দৈনিক অন্তত এক কাপ কফি পান করেন।

 

যুক্তরাষ্ট্রে স্টারবাকস সবচেয়ে জনপ্রিয় কফিশপ। ফিনল্যান্ডের লোকজন কফি পানের শীর্ষে। তরুণদের চেয়ে প্রবীণরা বেশি কফি পান করেন। বিশ্বে উৎপাদিত চা এর ৪০% পান করেন চীন ও জাপানের বাসিন্দারা। যুক্তরাজ্যের ৩৩% মানুষ প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ কাপ চা পান করেন। চা অন্যতম প্রাচীন পানীয়। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে চা পান শুরু হয়েছে প্রায় ২৭০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে এবং বিশ্বে এক হাজারের বেশি ভিন্ন ভিন্ন ধরনের চা রয়েছে।

 

এবার চা ও কফির ওপর কিছু পরিসংখ্যান উল্লেখ করছি :

চা ও কফির মধ্যে কোনটিতে ক্যাফেইনের পরিমাণ বেশি, এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ। চায়ের পাতায় ক্যাফেইনের মাত্রা কফি বিনের চেয়ে বেশি। কিন্তু প্রস্তুত প্রক্রিয়ার সঙ্গে এর ভিন্নতা আসে। এক কাপ কফি তৈরিতে যে পরিমাণ বিন ব্যবহার করা হয় তাতে প্রস্তুত কফিতে ক্যাফেইনের পরিমাণ চা এর চেয়ে বেড়ে যায়। গ্রিন টি এর চেয়ে ব্ল্যাক টি এর মধ্যে ক্যাফেইনের পরিমাণ বেশি থাকে। কফিতে ক্যাফেইনের পরিমাণ বেশি হওয়া সত্ত্বেও এতে চায়ের চেয়ে অধিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা দেহের জন্য ভালো এবং বেশ কিছু ব্যাধির সঙ্গে লড়তে পারে।

 

লেখক : আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু, নিউইয়র্ক

পূর্বকোণ/আর

 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট