চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

যেখানে নিউইয়র্কের চেয়ে ঢাকা বিমানবন্দর এগিয়ে!

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | ২:৩৪ অপরাহ্ণ

অনেকে অভিযোগ করে থাকেন- আমাদের আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর আছে, কিন্তু সার্ভিসটা খুবই বাজে। আসলেই কি আমাদের সার্ভিস খুবই বাজে, নাকি এরচেয়েও বাজে সার্ভিসের বিদেশি বিমানবন্দর রয়েছে? সে বিষয়ে আজ আমার এক অভিজ্ঞতা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি।

দেখুন, দুটো দেশের বিমানবন্দরের সার্ভিসের তুলনা না করলেই নয়। আজ আমার বাবা-মা বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্ক আসলেন। ৮০-ঊর্ধ্ব বাবা ছিলেন কিছুটা অসুস্থ। তিনি যখন এয়ারপোর্টে নামলেন, তখনকার অভিজ্ঞতাটুকু আমাকে অবাক করে দিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এখানে ৬ ডলার দিয়ে লাগেজ ক্যারি করার ট্রলি কিনতে হয়, যেটি আমার একেবারেই পছন্দ নয়। আবার, কারও কাছে ক্রেডিট কার্ড না থাকলে তিনি ট্রলিও পাবেন না। অর্থাৎ ক্যাশ টাকা দিয়েই আপনাকে ট্রলি কিনতে হবে। আর টাকা নেই তো ট্রলিও নেই। যা আমি খুব কম দেশেই দেখেছি!

 

যেহেতু উনারা (বাবা-মা) বয়স্ক মানুষ, সেহেতু তাঁদের জন্য হুইল চেয়ার লাগবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো- পুরো বিমানের জন্য মাত্র দুটো হুইল চেয়ার ছিলো! ফলে বিমান নামার পরে আরও দেড়ঘণ্টা হুইল চেয়ারের অপেক্ষায় সিরিয়ালে থাকতে হলো। এই বিমানবন্দরের ভোগান্তি এখানেই শেষ নয়!

এখানে বড় বড় লাগেজ উঠানোর জন্য বিন্দুমাত্র সাহায্যের হাত নেই। আপনি যত বয়স্কই হন না কেন, আপনাকে নিজের লাগেজ নিজেকে ক্যারি করতে হবে। কী একটা অবস্থা, বলুন তো! বয়স্ক বা অসুস্থদের সাহায্য করার কোন সুযোগ নেই!

 

অন্যদিকে, বাংলাদেশে যখন বিমান নামে তখন ১০/১২ জন ট্রলিম্যান অপেক্ষা করে। এখানে ইমিগ্রেশনের পরে লাগেজ ক্যারি করার জন্য শত শত ট্রলি বিনে পয়সায় আপনার জন্য অপেক্ষা করে। এদিকে আপনি ভারী লাগেজ ক্যারি করাতে চাইলে আপনার জন্য শত শত মানুষ অপেক্ষা করবে। এক্ষেত্রে শুধু ৫ ডলার কিংবা ২০০ টাকা দিলে হাসিমুখে তারা আপনাকে সেবা দিবে।

হ্যাঁ, মানছি! বাংলাদেশে বিমান বন্দরগুলো পুরনো, চকচকে নয়। যার কারণে দেখতে হয়তো ভালো লাগবে না। কিন্তু আপনি যদি তুলনা করেন তাহলে বিমানবন্দর দুটোর মধ্যে একটি জনবান্ধব ও ভালোবাসাপূর্ণ এবং অন্যটি হচ্ছে শুধুই মেশিন!

 

লাগেজ আসলো কি না আসলো কিংবা অন্যগল্পে আমি যেতে চাই না। তবে পশ্চিমারা যে মেশিন বা ব্যবসা ছাড়া কিছু বোঝে না এটা এই উদাহরণ থেকে আমি বলে দিতে পারি। ভালোবাসায় ঘেরা পুরনো বন্দরই আমার কাছে বেশি প্রিয়। আমি এ ব্যাপারে অবশ্যই বাংলাদেশের পক্ষে।

লেখক : নিউইয়র্ক প্রবাসী চিকিৎসক

 

পূর্বকোণ/এএস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট