চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার গুনাহ পুড়িয়ে শেষ করে দেবেন

নাসির উদ্দিন

১৯ এপ্রিল, ২০২১ | ১২:৪৫ অপরাহ্ণ

আরবী ১২টি মাসের মধ্যে রমজান ছাড়া অন্য কোন মাসের নাম আল্লাহপাক কোরআনে উল্লেখ করেননি। শুধুমাত্র রমজান মাসের নাম উল্লেখ করায় বোঝা যায় এটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ মাস। এটি কোরআনুল করিমের মাস। এই মাসেরই লাইলাতুল কদরের রাতে আল্লাহ কোরআন নাজিল করেছেন সমগ্র মানবজাতির হেদায়েতের জন্য। ৪টি জিনিসের কথা আল্লাহ কোরআনে উল্লেখ করেছেন।

এক. কোরআন মজিদ- সমস্ত মানবজাতির হেদায়েতের কিতাব।
দুই. বায়তুল্লাহ-সমগ্র মানবজাতির কল্যাণের ঘর।
তিন. হযরত মুহাম্মদ (সা:)-বিশ্ববাসীর হেদায়াতের পথ প্রদর্শক।
চার. শেষ নবীর উম্মত অন্যদের চাইতে শ্রেষ্ঠ উম্মত।

নবীজি এরশাদ ফরমান: রমজান মহিমান্বিত, রহমত, ক্ষমা, মুক্তির মাস। এই মাসে এমন একটি রজনী আছে যা হাজার মাসের চাইতে উত্তম। সেটি হল-লাইলাতুল কদর।
আল্লাহপাক কোরআনে ফরমান: “ ইন্না আনজালনা হুম ফি লাইলাতুল কদর” আমি কোরআনকে লাইলাতুল কদরের রাতে নাজিল করেছি। এই মাস ও রাত্রি দামি হওয়ার কারণ, এই মাসের সম্পর্ক কোরআনের সাথে। কোরআনের সাথে সম্পর্কিত সবকিছুই দামি। সবচাইতে দামি জায়গা মক্কা-মদীনা। কারণ এ দুটি জায়গায় আল্লাহ কোরআন নাজিল করেছেন। জীবরাঈল (আ:) ফেরেশতাদের নেতা। তিনি কোরআনের ওহী নিয়ে আসেন। শেষ নবীর উম্মতের উপর কোরআন নাজিল করায় তারাও দামি। এমনকি যে কাগজের মধ্যে কোরআন লেখা হয় তাও দামি হয়ে যায়। সঠিক আমল করলে কোরআনে হাফেজরাও দুনিয়া-আখেরাতে দামি হবেন।
পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন: তোমাদের উপর সিয়াম সাধনা ফরজ করা হলো। তোমাদের আগে যে সব উম্মত ছিল তাদের উপরও ফরজ ছিল। কেন ফরজ করলেন? ‘ লা আল্লাকুম তাত্তাকুন’ যেন তাকওয়া এবং মোত্তাকী অর্জন করতে পার। আল্লার ভয়ে মানুষ যাবতীয় পানাহার এবং হারাম থেকে বিরত থাকবে।
নবীজি বলেন: রোজা ঢাল স্বরূপ। যুদ্ধের ময়দানে ঢাল যেমন নিজেকে রক্ষা করে, তেমনি সঠিকভাবে রোজা রাখলে শয়তান, নফসের ধোকা থেকে নিজেকে হেফাজত করবে।
খলিফা ওমর (রা: ) এর সময়ের ঘটনা। এক গোয়ালা পরিবার দুধ বিক্রি করে জীবনধারণ করতো। মেয়ে একদিন দুধ কম পাওয়ার কথা জানালো মাকে। মা তা শুনে মেয়েকে বললেন, পানি মিশিয়ে দিতে। মেয়ে পাল্টা মাকে বললেন, এটা জানতে পারলে খলিফা ওমর কঠিন শাস্তি দেবেন। মা বললেন, ওমর জানবেন কিভাবে? কন্যা তখন বললেন, খলিফা ওমর না দেখুক, আল্লাহতো সবকিছু দেখছেন। কেয়ামতের দিন জিজ্ঞাসিত হলে তখন কি জবাব দেব।
বাস্তবে মা মেয়েকে পরীক্ষা করছিলেন, মন্দ কাজে উৎসাহিত করছিলেন না। সবকিছু তাদের ঘরের বাইরে থেকে শুনেন খলিফা ওমর । পরে তিনি গোয়ালিনীর কন্যাকে পুত্রবধূ করেন। ওই কন্যার মাঝে তাকওয়া বা আল্লাহ ভীতি থাকার কারণে মন্দ কাজ করতে পারেননি।
এখন চলছে পবিত্র রমজানুল করিমের মাস। রমদান, রমদুন শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ পুড়িয়ে ফেলা। রোজা বা সিয়াম সাধনার মধ্যমে আল্লাহ বান্দা-বান্দির গুনাহ পুড়িয়ে শেষ করে দেবেন।
আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে রমজান মাসের রোজা সঠিকভাবে পালনের তৌফিক দান করুন।

লেখক:  ব্যুরো চিফ, চট্টগ্রাম, বাংলাভিশন।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট