চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কৃষককের মাথায় হাত!

২০ মে, ২০১৯ | ১:৪৪ পূর্বাহ্ণ

‘ক্ষেতে ক্ষেতে পুইড়া মরি রে ভাই,
পাছায় জোটে না ত্যানা।
বৌ-এর পৈছা বিকায় তবু
ছেইলা পায় না দানা।’

বেগম রোকেয়ার এ কথা যেন সবকালের সব কৃষকদের জন্যই যথোপযুক্ত। কৃষকদের নিষ্পেষিত জীবন যেন কোনো কালেই শেষ হওয়ার নয়। এত এত আধুনিকতার ছোঁয়া, দেশের উন্নয়ন- কিন্তু সেই অভাবী কৃষক অভাবীই রয়ে গেল।
এ বছর আবহাওয়া ও বিভিন্ন প্রতিকূলতার পরও বোরো চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনে যে কৃষকের সাফল্যের হাসি থাকার কথা, সে কৃষকের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ। প্রতিমণ ধান উৎপাদন করতে যেখানে কৃষকের উৎপাদন হয়েছে ৭০০-৭৫০ টাকা, সেখানে প্রতি মণ ধানের দাম ৪০০-৪৫০ টাকা। এতে করে কৃষকের লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচও উঠছে না। এতে করে ঋণ করে চাষ করা কৃষকদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। আমাদের দেশের অর্থনীতির অধিকাংশটাই কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কৃষিনির্ভর এ দেশে কৃষকদের দুর্দশা পুরো দেশের অর্থনীতির জন্য এক অশনিসংকেত। ধানের বাজারে এখন ক্রেতা নেই। তা ছাড়া ধানের সরকারি সংগ্রহ অভিযান ও শুরু হয়নি। এতে করে স্থানীয় আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছে- যা কৃষকের পেটে লাথি মারার মতো অবস্থা। সরকার কর্তৃক ধানের দাম নির্ধারণে দেরি হওয়া ও ধানের এ কম দামের জন্য অনেকাংশে দায়ী। তা ছাড়া কৃষক যদি ধান এখন বিক্রি না করে কিছুদিন পরও বিক্রি করত, তাহলে কিছুটা লাভের মুখ দেখতো। কিন্তু পাওনাদারদের তাগাদা, সুদের বোঝা, দিনমজুরের অগ্নিমূল্য, সংসারের খরচ- এসব কারণে ধান না বিক্রি করে কৃষকের সামনে আর কোনো পথ নেই। ধানের এ কম দামে অনেক জায়গায় ক্ষোভ থেকে কৃষকের প্রতিবাদী আচরণও দেখা গেছে। দেশের অনেক অঞ্চলে কৃষক পাকা ধানের জমিতে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনেও ধান ছিটিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। কিন্তু এখনো ধানের দাম বাড়ানোর কোনো কার্যকারী পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও কৃষিবান্ধব সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখে গেছেন। তার সুযোগ্য কন্যা বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। আশা করছি, এ ক্ষেত্রেও সরকার তার সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে কৃষকদের এ সমস্যার বাস্তবিক সমাধান দেবে।

মোজাম্মেল হক
শিক্ষার্থী।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট