চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

রোজা : জানা-অজানা যাকাত কী ও কেন?

১৯ মে, ২০১৯ | ৩:০৭ পূর্বাহ্ণ

বর্তমান প্রেক্ষাপটে অর্থনীতিতে যাকাতের বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব পায়। যদিও যাকাতের লেনদেন বছরের যেকোনো সময় হতে পারে কিন্তু অঘোষিতভাবে রমজান মাসেই দাতা ও গ্রহীতাগণের মধ্যে সিংহভাগ লেনদেন হয়ে থাকে। যাকাত মহান আল্লাহ প্রদত্ত অর্থনীতির মৌলিক এক অনুষঙ্গ। আমাদের সমাজে যাকাতকে দান হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও প্রকৃতপক্ষে এটি ধনীর সম্পদে গরীবের অধিকার তথা তাদের জন্য নির্ধারিত অংশ। নামাজ, রোজার মত যাকাতের বিধান শুধু এ উম্মতের জন্য নয়, বরং সকল নবী ও রাসুলের শরিয়াতে ফরজ ছিল। আভিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে যাকাতের অর্থ পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা ও বৃদ্ধি। শরিয়াতের দৃষ্টিতে জীবনযাত্রার অপরিহার্য প্রয়োজন পূরণের পর সুনির্দিষ্ট পরিমাণে পূর্ণ এক বছর যাবত সঞ্চিত সম্পদের শরীয়ত নির্ধারিত অংশ, শরীয়ত নির্ধারিত খাতে কোনো প্রকার বিনিময় ছাড়া মালিকানা হস্তান্তরকে যাকাত বলে। যাকাতের মূল উদ্দেশ্য এর অর্থের মধ্যে নিহিত রয়েছে। যাকাত বিভিন্নভাবে এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও সমাজকে পবিত্র করে। কেননা এর মাধ্যমে যাকাতদাতার অন্তর কৃপণতাসহ অন্যান্য মানবিক ত্রুটি থেকে পবিত্র হয়, যাকাতগ্রহীতার মন ধনী সমাজের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ ও তাদের ওপর অসন্তোষ থেকে মুক্ত হয়। অন্যদিকে সমাজ দারিদ্র্যমুক্ত হয়ে নানা ধরনের অর্থনৈতিক ত্রুটি ও বিশৃঙ্খলা থেকে পরিচ্ছন্ন হয়। আবার বৃদ্ধি পাওয়া অর্থ গ্রহণ করলে দেখা যায়, যাকাত সমাজের অসচ্ছল শ্রেণির মানুষের সম্পদ বৃদ্ধি করে এবং যাকাতদাতার সম্পদে বরকত বৃদ্ধি পায়। তথাপি যাকাতদাতার সম্পদ থেকে যাকাত দেয়ার কারণে যে পরিমাণগত ঘাটতি দেখা দেয় তা পূরণে সচেষ্ট হয় এবং তার সম্পদ বৃদ্ধি করতে পরিশ্রম করে, ফলে তার সম্পদ বেড়ে যায়। এক কথায় বলতে গেলে, যাকাত দিলে যাকাতদাতার মন ও আত্মা পবিত্র হয়, তার ধনসম্পদ বৃদ্ধি পায়, পরিচ্ছন্ন হয় এবং প্রকৃতপক্ষে পরিমাণে বেশি হয়। ক্রমবৃদ্ধি ও পবিত্রতা কেবল ধন-সম্পদের মধ্যেই সাধিত হয় না। যাকাতদানকারীর মন-মানসিকতা ও ধ্যান-ধারণা পর্যন্ত তা বিস্তার লাভ করে। সম্ভবত এদিকে লক্ষ্য রেখেই আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, “তাদের মালামাল থেকে সদকা-যাকাত গ্রহণ কর। যাতে এর মাধ্যমে তাদেরকে পবিত্র ও পরিছন্ন করতে পার”। (সূরা তওবা- ১০৩)

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট