চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মসজিদে নববি, মদিনা

১৫ মে, ২০১৯ | ২:৩৫ পূর্বাহ্ণ

মসজিদে নববি বা আল মাসজিদুন-নাবি অর্থাৎ মহানবীর মসজিদ। ৬২২ খ্রিস্টাব্দে হযরত মুহাম্মদ (সা.) নিজে এ মসজিদের নির্মাণকাজে অংশ নিয়েছিলেন। মসজিদের পাশেই ছিল রাসুল (সা.)-এর বাসস্থান। এ মসজিদের এক অংশে রয়েছে রাসুলের (সা.) রওজা মোবারক। সঙ্গে রয়েছে ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (রা.) ও দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমরের (রা.) রওজা মোবারকও। মসজিদটির অবস্থান সৌদি আরবের মদিনা শহরের কেন্দ্রস্থলে। গুরুত্বের দিক দিয়ে দেখলে মসজিদুল হারামের পর এই মসজিদের স্থান। অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান হওয়ার কারণে হাজিগণ হজের আগে বা পরে মদিনায় অবস্থান করেন।
সবুজ গম্বুজ : মসজিদের দক্ষিণপূর্ব দিকে অবস্থিত সবুজ গম্বুজ একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এটি ছিল আয়েশা বিনতে আবু বকরের (রা.) বাড়ি। ১৮৩৭ সালে প্রথম এই মসজিদের গম্বুজটিতে সবুজ রং করা হয়।
নির্মাণ : রাসুল (সা.) হিজরতের পর এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। খেজুর গাছের খুঁটি দিয়ে ছাদের কাঠামো ধরে রাখা হয়। ছাদ তৈরি করা হয় খেজুর পাতার আস্তরণ দিয়ে। সে সময় মসজিদটির উচ্চতা ছিল ৩.৬০ মিটার। দরজা ছিল তিনটি। দক্ষিণে বাব-আল-রহমত, পশ্চিম দিকে বাব-আল জিবরিল এবং পূর্বদিকে বাব-আল-নিসা।
সংস্কার ও সম্প্রসারণ : এই মসজিদটিও বহুবার সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে। খায়বারের যুদ্ধের পর মসজিদ সম্প্রসারণ করা হয়। প্রথম খলিফা হযরত আবু বকরের (রা.) শাসনামলে মসজিদের আকার অপরিবর্তিত থাকলেও দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রা.) মসজিদ সম্প্রসারণ করেন। এরপরে উমাইয়া, আব্বাসীয় ও উসমানীয় যুগেও করা হয় সংস্কার। সৌদি আরব প্রতিষ্ঠার পরও মসজিদের বেশ কয়েক দফা সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হয়। মসজিদটিতে বর্তমানে ৬ লাখ মুসল্লি এক সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন। তবে হজের সময় সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ লাখে।
স্থাপনা : রওজায়ে জান্নাত বা রিয়াদুল জান্নাত। মসজিদের মধ্যেই ছোট কিন্তু বিশেষ এলাকা। এটি মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা থেকে তার মিম্বর পর্যন্ত বিস্তৃত। এই জায়গা বেহেশতের বাগান নামেও পরিচিত।
রওজা মসজিদের সঙ্গে অবস্থিত। এখানে মুহাম্মদ (সা.) এবং প্রথম দুই খলিফার কবর রয়েছে। জানা যায় এর পাশে একটি কবরের জন্য খালি জায়গা রয়েছে। ইসলাম ধর্মমত অনুযায়ী ঈসা (আ.) পৃথিবীতে আবার ফিরে আসবেন এবং মারা যাওয়ার পর তাকে এখানে দাফন করা হবে।
এই মসজিদে তিনটি মিহরাব রয়েছে। এর মধ্যে একটি মুহাম্মদ (সা.)-এর সময় নির্মিত হয়। বাকিগুলো পরবর্তী সময়ে নির্মিত। রয়েছে মিম্বর। মুহাম্মদ (সা.) কর্তৃক মূল মিম্বরটি খেজুর গাছের কাঠ দিয়ে নির্মিত হয়েছিল। পরে এর স্থলে অন্য মিম্বর বসানো হয়।

তারাবির নামাজ কয় রাকাত? এ নিয়ে বিতর্ক সম্পর্কে কোরআন-হাদিসের ফায়সালা কী?
পবিত্র রমজান মাসে নারী-পুরুষের উভয়ের জন্য তারাবির নামাজ আদায় করা সুন্নাহ। নবী করীম (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবপ্রাপ্তির আশায় রমজানের রাত্রিতে নামাজ (তারাবি) আদায় করবে তার অতীতের সকল গোনাহ মাফ হয়ে যাবে।
তারাবির নামাজ কত রাকাত এ নিয়ে ফকিহদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ কেউ হযরত আয়েশার (রা.) হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে তারাবির নামাজ ৮ রাকাত বলেছেন। তবে হানাফী ও হাম্বলী মাজহাবসহ অধিক সংখ্যক ফকিহগণ তারাবি নামাজ ২০ রাকাতের ব্যাপারে মতামত দিয়েছেন। তাঁরা নির্ভরযোগ্য হাদিসের পাশাপাশি তারাবি নামাজের ২০ রাকাত ও জামাতের সাথে মসজিদে নববীতে হযরত উমরের (রা.) উদ্যোগকে দলিল হিসাবে পেশ করেন। উল্লেখ্য হযরত উমর (রা.) প্রসিদ্ধ সাহাবী হযরত উবাই বিন কা’বের ইমামতিতে ২০ রাকাত তারাবিহ নামাজ জামায়াতের সাথে পড়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেন যা পরবর্তীতে হযরত উসমান, হযরত আলী থেকে অদ্যাবধি পবিত্র হারামাইন শরিফে চলমান রয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট