চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

বায়ুদূষণ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী ?

ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

২২ মার্চ, ২০২৩ | ৭:২৩ অপরাহ্ণ

মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে দেওয়া বাণীতে বলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ অর্জনে সরকার প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

 

সমুদ্র প্রতিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ, সমুদ্রসম্পদ আহরণ, টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ, সামুদ্রিক এবং উপকূলীয় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ-ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে উন্নয়নের মূলধারায় অন্তর্ভূক্ত করার লক্ষ্যে সরকার ব্লু-ইকোনমি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, যা ইতিবাচক। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, দ্রুত নগরায়ণ এবং সম্পদের অতি ব্যবহারের ফলে প্রকৃতি-পরিবেশ আজ অনেকটাই বিপর্যস্ত। মানবসৃষ্ট কারণে পরিবেশ দূষণ মোকাবিলায় দূষণকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতা বৃদ্ধির পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। পরিবেশ দূষণের কারণে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলছে।

 

বস্তুত নানারকম দূষণের কারণে বদলে যাচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। ফলে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হচ্ছে মানুষ।’ সাম্প্রতিক কালে বায়ুদূষণ বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বে পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে প্রতিভাত। ঢাকা-চট্টগ্রাম-কুমিল্লাসহ দেশের প্রায় প্রতিটি নগর-শহর-জনপদে মাত্রাতিরিক্ত বায়ুদূষণ চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি করছে। রাজধানী ঢাকা বিশ্বের দূষিত নগরগুলোর অন্যতম এবং প্রতিনিয়ত তালিকার শীর্ষ অবস্থানে বিরাজমান রয়েছে।

 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ারের প্রতিবেদন অনুসারে, মেঘলা আকাশ-গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি সত্ত্বেও চলতি মাসের ১৯ তারিখ বায়ুদূষণে বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান প্রথম। উল্লেখ্য দিনে সকাল নয়টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ১৯৯ নিয়ে ঢাকার বাতাসের মান ছিল অস্বাস্থ্যকর অবস্থায়। ঢাকার পাশাপাশি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি ১৮২ স্কোর নিয়ে বিশ্বে বায়ুদূষণের দ্বিতীয় স্থানে, ১৭২ স্কোর নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার ইনচিয়ন তৃতীয় স্থানে, ১৭১ স্কোর নিয়ে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন চতুর্থ এবং ১৭০ স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের করাচি আছে পঞ্চম স্থানে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক (৯ দিন) দুর্যোগপূর্ণ বায়ুর মধ্যে দিনানিপাত করেছে রাজধানীবাসী যা গত ৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ফেব্রুয়ারির ২৮ দিনের মধ্যে ১০ দিন ছিল অস্বাস্থ্যকর, খুবই অস্বাস্থ্যকর ১৫ ও দুর্যোগপূর্ণ ছিল ৩ দিন। এ ধারা এখনো অব্যাহত আছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

 

উল্লেখ্য যে, আইকিউ এয়ার দূষিত বাতাসের শহরের তালিকা প্রকাশ করে থাকে। প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বায়ু কতটুকু নির্মল বা দূষিত কি না সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের কোনো ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলে তা অবহিত করে। একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো, ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি, ১০১ থেকে ১৫০ সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর, ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত। একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১ এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ বলে গণ্য করা হয়।

 

১০ মার্চ ২০২৩ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এনার্জি কর্তৃক সাসটেইনেবল এনার্জি উইক-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত ‘সাসটেইনেবল এনার্জি পলিসি অ্যান্ড আওয়ার লাইভলিহুড’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সম্মানিত মেয়র রাজধানীর বায়ুদূষণের ৮০ ভাগ কারণ জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকায় ধুলার জ্বালা সহ্য করা যায় না। কিন্তু লেড, ম্যাগনেসিয়ামসহ বিভিন্ন ধরনের যে বিষাক্ত পদার্থ আমরা প্রতিনিয়ত নিচ্ছি, সেটা কেউ খেয়াল করছেন না। বাংলাদেশে যে জ্বালানি তেল আসে সেটা নিম্নমানের। যে ডিজেল আমরা ব্যবহার করি, তা কতটা বিপজ্জনক- প্রতিদিন বায়ু দূষণের মাত্রায় সর্বোচ্চ স্থানে থাকার পরও আমাদের সে উপলব্ধি হচ্ছে না। উপলবিদ্ধতে আসছে শুধু ধুলাবালি।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের বায়ুমান গবেষণা কেন্দ্রের হিসাবে, ধুলা ও ধোঁয়া ঢাকার বায়ুদূষণের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ভূমিকা রাখে। এ ধুলার বড় উৎস হচ্ছে অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে নির্মাণ কাজ ও পুরোনো যানবাহনের দূষিত বায়ু। আর ৪০ শতাংশ দূষণের উৎস খড়-কাঠ-তুষের মতো জৈববস্তুর ধোঁয়া ও সূক্ষ্ম বস্তুকণা।

 

ঢাকার পাশাপাশি কুমিল্লা-চট্টগ্রামেও বায়ুদূষণ বেড়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনবার সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে উঠেছিল কুমিল্লা শহর। পরিবেশবিদদের মতানুসারে, কুমিল্লায় অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, ট্রাক্টরে মাটি ও ইট পরিবহন, যানবাহনের ধোঁয়া, ইটভাটা ও ঘনবসতি বেশি হওয়া বায়ুদূষণের তালিকার শীর্ষে নাম থাকার বড় কারণ। ১৮ মার্চ ২০২৩ গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনা দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার মোড় থেকে টাইগারপাস মোড় এবং অক্সিজেন-মুরাদপুর সড়কে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অগণিত যাত্রীসাধারণ ও পথচারীদের ধুলোবালিতে নাকাল হতে হচ্ছে। ফ্লাইওভার ও ওয়াসার পাইপ লাইনের জন্য খোঁড়াখুঁড়িতে মুরাদপুর-অক্সিজেন সড়ক ধুলোর স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে।

 

এছাড়াও জলাবদ্ধতার কাজের জন্য ড্রেন থেকে তোলা কাদামাটি শুকিয়ে পুরো সড়ক ধুলোয় ধূসর আকার ধারণ করেছে। এর মধ্য দিয়ে যাতয়াতের সময় যাত্রী ও পথচারীদের শ্বাস নেয়াই দুরূহ হয়ে পড়ছে। পাশাপাশি যানবাহনের কালো ধোঁয়া ও শব্দ নগর জীবন বিষিয়ে তুলছে বলে নগরবাসীর বিপুল অভিযোগ রয়েছে। ফলশ্রুতিতে নারী-শিশু-বয়স্কসহ সকল স্তরের মানুষ নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। ২০২২ সালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৫৪টি জেলারই বায়ুর মান আদর্শ মাত্রার চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। আদর্শ মাত্রার মধ্যে আছে মাত্র ১০টি জেলার বায়ুর মান। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট প্রকাশিত সর্বশেষ এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্সে বলা হয়েছে যে, বায়ুদূষণের কারণে সারা বাংলাদেশে মানুষের গড় আয়ু কমেছে প্রায় পাঁচ বছর চার মাস এবং ঢাকায় কমেছে প্রায় সাত বছর সাত মাস।

 

১৩১টি দেশ-ভূখন্ড-অঞ্চলের ৭ হাজার ৩০০টির বেশি এলাকার ৩০ হাজারের অধিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষকের তথ্যের ভিত্তিতে ১৪ মার্চ প্রকাশিত আইকিউ এয়ারের অন্য প্রতিবেদন মতে, ২০২২ সালের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর বৈশ্বিক তালিকায় বাংলাদেশের স্থান পঞ্চম। ২০২১ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল তালিকার শীর্ষে। এবার শীর্ষ স্থানে রয়েছে আফ্রিকার দেশ চাদ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে বাংলাদেশে প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে পিএম-২.৫ এর মাত্রা ছিল ৬৫ দশমিক ৮ মাইক্রোগ্রাম এবং ২০২১ সালে এ মাত্রা ছিল ৭৬ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম। অর্থাৎ ২০২২ সালে বাংলাদেশের বায়ুর মান ২০২১ সালের তুলনায় কিছুটা উন্নতি পরিলক্ষিত। তালিকায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা চাদ-ইরাক-পাকিস্তানের বায়ুতে গড়ে পিএম-২.৫ এর পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৮৯ দশমিক ৭, ৮০ দশমিক ১ ও ৭০ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম এবং চতুর্থ স্থানে থাকা বাহরাইনের বায়ুতে ২০২১ সালে দূষণের মাত্রা ছিল ৬৬ দশমিক ৬ মাইক্রোগ্রাম। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষের বসবাসকৃত এলাকার বায়ুতে পিএম-২.৫ এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত মাত্রার চেয়ে অন্তত সাত গুন বেশি। বিশ্বব্যাপী ১০ জনের মধ্যে ১ জন এমন এলাকায় বসবাস করছে, যেখানে বায়ুদূষণ স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি তৈরি করছে।

 

১৫ মার্চ ২০২৩ গণমাধ্যম সূত্রমতে, থাইল্যান্ডে বায়ুদূষণের কারণে চলতি মাসেই প্রায় দুই লাখ মানুষ নানা সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। রাজধানী ব্যাংককসহ সারা দেশে ঘন কুয়াশা সদৃশ আবহাওয়া বিরাজ করছে। শিল্পক্ষেত্রের নির্গমন, কৃষিজ উপাদান পোড়ানো ও যানবাহনের ধোঁয়ার বিপজ্জনক মিশ্রণের কারণে ভয়াবহ এ দূষণের সূত্রপাত বলে দেশটির জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে বলা হয়েছে, ব্যাংককের প্রায় ৫০টি জেলায় বাতাসে পিএম-২.৫ এর পরিমাণ অনিরাপদ। এ পরিস্থিতিতে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুদের বাড়ির ভেতরে থাকার এবং কেউ বাইরে গেলে দূষণরোধী উন্নতমানের এন-৯৫ মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংককের নার্সারি স্কুলে শিশুদের সুরক্ষার জন্য বায়ু পরিশোধনকারী ‘নো ডাস্ট রুম’ স্থাপন ছাড়াও যানবাহনের কালো ধোঁয়া নিরীক্ষণের জন্য চেকপয়েন্ট বসানো হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন মতে, বায়ুদূষণের ক্রমবর্ধমান মাত্রা থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য পরিসেবার উপর ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছে।

 

বায়ুদূষণের কারণে চলতি বছরের শুরু থেকে ১৩ লাখেরও বেশি মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্যবিষয়ক পরিচালক মারিয়া নেইরা বলেন, বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ১০০ ভাগই এখন এমন বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ করা বায়ু মানের চেয়েও খারাপ। প্রতি বছরই দূষিত বায়ুর কারণে বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে। তিনি আরও জানান যে, মহামারি থেকে বাঁচার পরও বায়ুদূষণের কারণে বছরে এখনও ৭০ লাখ প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যু ঘটছে।

 

২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর বায়ুদূষণের বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিস্থিতি উত্তরণে শুকনো মৌসুমে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পানি ছিটানো শুরু করে। গবেষকদের মতে, ব্যস্ততম সড়কে পানি ছিটানোর আগের চেয়ে পানি ছিটানোর পর সাময়িকভাবে ধুলাবালু কিছুটা প্রশমিত হয়ে বায়ুতে বস্তুকণার পরিমাণ তুলনামূলক কম দেখা গেলেও তা আশানুরূপ নয়। বায়ুদূষণের অন্য উপাদান তথা ইটভাটা, যানবাহনের কালো ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণে তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। ফেব্রুয়ারি ২০২৩ মাসে পরিচালিত স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বায়ুমন্ডলীয় অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) গবেষণার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, পানি ছিটানোর আগে ও পরে প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে ক্ষুদ্র বস্তুকণার পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৫৯ ও ১০৬ মাইক্রোগ্রাম। একইভাবে পানি ছিটানোর আগে বায়ুমান সূচক ছিল ‘সতর্কতামূলক’ এবং পানি ছিটানোর পর সূচক হয়েছে ‘মধ্যম’। প্রায় আড়াই ঘন্টা পর বায়ুদূষণ আবার পূর্বাবস্থায় ফিরে যায়।

 

৩১ জানুয়ারি ২০২৩ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এডিপি সভায় বায়ুদূষণ রোধে বিশেষ অভিযান পরিচালনার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে সম্মানিত মন্ত্রী বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তরে বর্তমানে কর্মরত তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে বায়ুদূষণকারী প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনের বিরুদ্ধে নগরীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে হবে। অভিযানের সংখ্যা-পরিধি বৃদ্ধির জন্য জরুরিভিত্তিতে আরও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদায়নের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য পাঠানোর জন্য জননিরাপত্তা বিভাগের কাছে অনুরোধ করা হবে। দেশের বায়ুদূষণের এ পরিস্থিতি কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়। তাই বায়ুদুষণ রোধে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয়ের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করে কার্যকর আইনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ-বাস্তবায়ন করতে হবে।’

 

কোন ধরনের বাচনিক প্রতিশ্রুতিতে দেশবাসী আশ্বস্ত হতে প্রস্তুত নয়। প্রায়োগিক কর্মকৌশল অবলম্বনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপণ বায়ুদূষণ সমস্যাকে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে দেবে। বায়ুদুষণ প্রতিরোধে সরকারি-বেসরকারি সকল সেবাখাত-আবাসন-নগরায়ন-শিল্পায়নসহ সংশ্লিষ্ট মহল বিষটি কঠোরভাবে আমলে নিতে ব্যর্থ হলে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কালো ধুলা ও ধোঁয়ায় প্রচন্ড ধোঁয়াশা হয়ে পড়বে। জনগণের স্বাস্থ্যের বিপর্যস্ততায় আলোকিত স্বদেশ গভীর অন্ধকারে নিপতিত হবে – নিঃসন্দেহে এটুকু ধারণা কোনভাবেই অমুলক নয়।

লেখক: ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

 

পূর্বকোণ/সাফা/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট