চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মহাবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. জামাল নজরুল ইসলাম স্যার স্মরণে

ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

১৬ মার্চ, ২০২৩ | ৯:২৭ অপরাহ্ণ

এটি সর্বজনবিদিত যে, কথিত সংবাদপ্রবাহের চতুরতা-বিচক্ষণতায় সাধারণ থেকে অসাধারণ; অখ্যাত-কুখ্যাত থেকে বিখ্যাত-বিশ্বখ্যাত হওয়ার বিপুল দৃষ্টান্ত দেশে-বিদেশে অযৌক্তিক পর্যায়ে উদ্ভাসিত।

নির্লজ্জ-অসৎ-প্রতারক-জালিয়াতি ও মিথ্যাচারে পারদর্শী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কদর্য অপকৌশল অবলম্বনে নূন্যতম কোন অর্জন ছাড়াও বিশাল খ্যাতি অর্জনে উপমা তৈরি নতুন কিছু নয়। সভ্যতার ইতিহাসে শুধু যথার্থ প্রচার-প্রচারণার অভাবে অনেকক্ষেত্রে বিশাল উঁচুমার্গের বিশ্বনন্দিত অনেক গুণীব্যক্তি অধরায় থেকে যান। বহুক্ষেত্রে ছলচাতুরী-লবিং-তদবিরের অভিনব পন্থায় জ্ঞান সৃজন-উৎপাদন-বিতরণে সামান্যতম অবদান না থাকা সত্ত্বেও পদ-পদবী-পদক দখলে নেওয়ার উদাহরণ অপ্রতুল নয়। অনৈতিক প্রভাব বলয়-আর্থিক বিনিময়ে ক্রেতা-বিক্রেতার হীন আচ্ছাদনে স্বঘোষিত পন্ডিত-মহাবিদ্বান-বরেণ্য গবেষক-শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবী ইত্যাদি বিশেষণে স্বউদ্যোগে আলোকিত হওয়ার বিষয়ে সচেতন মহলের কৌতুহল অপরিসীম। নানামুখী অপদার্থ-অথর্ব-অর্বাচীন-মেধাশূন্য ব্যক্তিরা কূটচক্রের মাধ্যমে নিজেদের অনাকাঙ্খিত-অনভিপ্রেত আবিষ্কারে বহুলাংশে মিথ্যাস্বীকৃত। কালের আবর্তনে এসব নষ্ট-কদাচারের অপসংস্কৃতি দ্রুততর গতিতে পুরো সমাজ-জাতিরাষ্ট্রকে করছে কলুষিত।

কিছুক্ষেত্রে দেশীয়-আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সর্বোচ্চ সম্মানীয় অভিধায় ভূষিত পরিক্রমায় ক্ষমতাধর অপশক্তির হস্তক্ষেপে কমযোগ্যদের প্রতিষ্ঠার বিচ্যুতিও কম নয়। ব্যতিক্রম ধারণায় নোবেল পুরষ্কার বিজয়ে যোগ্যতম ব্যক্তিদের বিবেচনায় না আসা খুবই কষ্টদায়ক। প্রাসঙ্গিকতায় পরম শ্রদ্ধেয় শিক্ষক-জ্ঞানতাপস-মহান সাধক-বিজ্ঞানী-প্রকৃত গবেষক-দেশপ্রেমিক প্রফেসর ড. জামাল নজরুল ইসলাম স্যারের অনন্য সাধারণ অর্জন সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বর্জিত হওয়ার বিষয়টি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আধুনিক-বিজ্ঞানমনস্ক-ন্যায়নিষ্ঠ-সত্যবাদি বিশ্বসভার প্রেক্ষাপটে এধরনের অবিবেচক মূল্যায়ন মোটেও সমুচীন নয়।

পৃথিবী নামক এই গ্রহের পুঙ্খানুপুঙ্খ অসাধারণ গভীর বিশ্লেষণধর্মী বিশাল মহিমায় প্রতিভাত পরিপূর্ণ মহাবিজ্ঞানী প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলাম বিস্ময়কর অবস্থানে অধিষ্ঠিত। অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী-মনন-প্রগতির আলোকবর্তিকায় বাঙালি জাতিগোষ্ঠীর চিরায়িত ঐতিহ্য-কৃষ্টি-সংস্কৃতির একান্ত ধারক-বাহক-প্রচারক কেন জানি স্বপ্রণোদনায় মিথ্যার বেসাতিতে নষ্ট চরিত্রের মতো নিজেকে বিলিয়ে দেননি বলেই বিশ্বলোকচক্ষুর আড়ালেই থেকে গেছেন। আকাশচুম্বী মর্যাদায় আসীন হওয়ার পরিবর্তে মাটি ও মানুষের মমত্ববোধে পরিপূর্ণ ঋদ্ধ বিদেশে অবস্থান করার সকল লোভ লালসা-অর্থবিত্ত-সুখ স্বাচ্ছন্দসহ পার্থিব সব ভোগবাদী উপাদান অবজ্ঞা করেই দেশকে জ্ঞানউর্বর করার উদ্দেশ্যেই স্বজাত্যবোধে বলীয়ান ড. জামাল নজরুল নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন।

এজন্যই হয়তো বিশ্বস্বীকৃতি অর্জনে অন্তরায় হিসেবে দুর্ভেদ্য প্রাচীর নির্মিত হয়েছে।  বিশ্বখ্যাত পদার্থবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. জামাল নজরুল ইসলাম ১৯৩৯ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ঝিনাইদহে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা খান বাহাদুর সিরাজুল ইসলাম ছিলেন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার সাব-জজ এবং মা রাহাত আরা বেগম একজন সাহিত্য অনুরাগী-সংগীতপ্রেমী। বাবার কর্মস্থলের সুবাদে তাঁর পড়াশোনার হাতেখড়ি হয় কলকাতায়। এরপর চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে ভর্তি হন তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের মারির লরেন্স কলেজে। উক্ত কলেজ থেকে সিনিয়র কেমব্রিজ (বর্তমান ও লেভেল) এবং হায়ার সিনিয়র কেমব্রিজ (এ লেভেল) পাস করার পর আবার কলকাতায় ফিরে আসেন।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে বিএসসি সম্পন্ন করেই সুদূর ইংল্যান্ডে পাড়ি দিয়ে ভর্তি হন বিশ্বখ্যাত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৫৯ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত ও তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএসসি ও এমএসসি পাস করে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজ থেকে ১৯৬৪ সালে ‘এপ্লায়েড ম্যাথমেটিক্স এন্ড থিওরিটিক্যাল ফিজিক্স’ এর উপর পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ডক্টরাল ফেলো হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭১ সময়কালে তিনি কেমব্রিজ ইনস্টিটিউট অব থিওরিটিক্যাল অ্যাস্ট্রোনমিতে গবেষণা কর্ম চালিয়ে যান। উক্ত সময়ে তাঁর গবেষণার বন্ধু ছিলেন জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং।

১৯৭১-৭২ সালে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ক্যালটেকে ভিজিটিং অধ্যাপকের দায়িত্ব পালন করেন। যেখানে তৎকালীন পদার্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষক রিচার্ড ফাইনম্যানের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা গড়ে ওঠে। আমেরিকায় ক্যালটেক ছাড়াও তিনি কাজ করেছেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনে। ১৯৭৩ সালে আবার লন্ডলে ফিরে কিংস কলেজে ফলিত গণিতে শিক্ষকতা করেন। ১৯৭৫-১৯৭৮ পর্যন্ত কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে সায়েন্স রিসার্চ ফেলো হিসেবে এবং ১৯৭৮-১৯৮৪ সাল পর্যন্ত লন্ডনের মনে সিটি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করেছেন। শ্রদ্ধেয় জামাল স্যার খুবই স্নেহধন্য ছিলেন নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী আবদুস সালামের। সেই সুবাদে তিনি আবদুস সালাম প্রতিষ্ঠিত ইতালির ইন্টারন্যাশনাল থিওরিটিক্যাল ফিজিকস সেন্টারে রিসার্চ ফেলো হিসেবেও গবেষণা করেন।

পরিশেষে লন্ডন-আমেরিকা জীবনের ইতিটেনে ১৯৮৪ সালেই চিরতরে প্রিয়মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরে মাত্র ২ হাজার ৮ শত টাকা বেতনে যোগদান করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে। ১৯৮৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মানের গণিত ও ভৌতবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তুলেন এবং ২০০৪ সাল পর্যন্ত এর পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অধ্যাপক হিসেবে অবসরের পরও তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমেরিটাস অধ্যাপক পদে নিয়োজিত ছিলেন।

চট্টগ্রামের এক সাংস্কৃতি সংগঠনের সাক্ষাৎকারে নিজের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘১৯৫৭ সালে আমি কলকাতা থেকে অনার্স শেষ করে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজে গণিতশাস্ত্রে ট্রাইপাস করতে যাই। সাধারণত এটা ৩ বছরের কোর্স। তবে আমি দুই বছরেই শেষ করে ফেলি। ওখানে আমার সহপাঠী ছিলেন পরবর্তীতে ভারতের বিখ্যাত গণিতবিদ নারলিকার। আরেকজন ছিলেন ব্রায়ান জোসেফসন, যে তার পিএইচডি থিসিসের জন্য মাত্র ৩৩ বছর বয়সে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পায়। আমার এক বছরের সিনিয়র ছিলেন জেমস মার্লি যিনি ১৯৬৬ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পান। ১৯৯৮ সালে নোবেল পান আমার শিক্ষক জন পোপল। আমি এগুলো বলছি, সেসময় আমাদের লেখাপড়ার পরিমন্ডল কত বিশাল ছিল তা বোঝানোর জন্য। আমার পিএইচডি থিসিস ছিল পার্টিকেল ফিজিক্সের উপর। এর ৩/৪ বছর পর আমি আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি নিয়ে কাজ শুরু করি। পরবর্তীকালে এর সাথে যুক্ত হয় কসমোলজি। বলতে পারেন এই তিনটিই হচ্ছে আমার আগ্রহ ও কাজের মূল ক্ষেত্র।’

দেশে ও বিদেশে দীর্ঘ এই কর্মময় জীবনে সকলের অকুন্ঠ ভালোবাসায় হয়েছেন ঋদ্ধ। তিনি বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স স্বর্ণপদক, রাষ্ট্রীয় একুশে পদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার-সম্মাননা প্রাপ্ত হন। বিজ্ঞানে অপরিসীম দক্ষতা-অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৮২ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অত্যন্ত দুর্লভ ও সম্মানজনক ডক্টর অব সায়েন্স (ডিএসসি) ডিগ্রিতে ভূষিত হয়েছিলেন। ড. জামাল নজরুল ইসলাম তাঁর কর্মব্যস্ততার মধ্যে ৫০টির অধিক বই, গবেষণাপত্র রচনা ও সহরচনা করেছেন। এর মধ্যে বিশ্ববিখ্যাত ৩টি বই ক্যামব্রিজ ও হার্ভার্ডসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হয়। ১৯৮৩ সালে ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত তাঁর লেখা প্রথম বই ‘দ্য আল্টিমেট ফেইট অব দ্য ইউনিভার্স’ ফরাসি, জাপানি, পর্তুগিজ ও ইতালিয়ানসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। তাঁর অনন্য সাধারণ অন্য দুটি বই হচ্ছে ‘ Rotating fields in general relativity’ এবং ‘ An introduction to mathematical Cosmology’. শেষোক্ত বইটি ১৯৯২ সালে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত হওয়ার পর পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কসমোলজির শিক্ষাক্ষার্থীদের জন্য প্রধান বইয়ে পরিণত হয়।

২০০১ সালে এই বইয়ের দ্বিতীয় এবং ২০০৪ সালে অনলাইন সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর লিখিত বেশকিছু প্রবন্ধ বিভিন্ন বিশ্বখ্যাত বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞান বিষয়ক গবেষণায় অনন্য লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটিতে ধারাবাহিকভাবে ৬টি গবেষণাপত্র প্রকাশ পেয়েছিল। উল্লেখ্য গবেষণাপত্র প্রকাশে অত্যাবশ্যকীয় রয়েল সোসাইটির ফেলো সদস্যের রিকমেন্ডেশন করেছিলেন উনার রুমমেট-বন্ধু বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং ও ফ্রেড হয়েল। বাংলা ভাষায় রচিত বইয়ের মধ্যে ১৯৮৫ সালে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত কৃষ্ণবিবর, মাতৃভাষা ও বিজ্ঞান চর্চা, অন্যান্য প্রবন্ধ, শিল্প সাহিত্য ও সমাজ উল্লেখযোগ্য।

রহস্যময় এই ধরিত্রী সম্পর্কে জানার ও বোঝার অদম্য কৌতুহলী ছিলেন সর্বজনশ্রদ্ধেয় জামাল নজরুল ইসলাম স্যার। তিনি তাঁর জ্ঞানচর্চাকে শুধু বিজ্ঞানে সীমাবদ্ধ না রেখে ধর্ম-অর্থনীতি-দর্শন থেকে শুরু করে সংগীত-সাহিত্য-শিল্পকলা-ইতিহাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর বিচরণ ছিল অসাধারণ। দেশের বিজ্ঞান-প্রকৌশল-অর্থনীতিসহ প্রায় সব বিষয়েই নিবিড় বৈজ্ঞানিক গবেষণায় তিনি ছিলেন উচুমার্গে ভাস্বর। তিনি চট্টগ্রাম তথা দেশের খ্যাতিমান সদারঙ্গ উচ্চাঙ্গ সংগীত পরিষদের আমৃত্যু প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। না ফেরার দেশে ফিরে যাওয়ার পর শত অযোগ্যতা সত্ত্বেও আমাকে দীর্ঘসময় স্যারের উল্লেখ্য দায়িত্ব বহন করতে হয়েছিল।

তিনি খুব ভালো পিয়ানো, বেহালা, এসরাজ বাজাতেন এবং অত্যন্ত চমৎকার গানে সুধীমহলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমিতে তাঁর সংগীতানুষ্ঠানও হয়েছে। ২০১৩ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকার থিয়েটার ইনস্টিটিউটে সদারঙ্গ উচ্চাঙ্গ সংগীত পরিষদ আয়োজিত ৭৪তম জন্মবার্ষিকী আলোচনাসভা ও সংগীত অনুষ্ঠানে তিনি জীবনের শেষ ভাষণ ও সংগীত পরিবেশন করেন। চিত্র অঙ্কনে অতিশয় আগ্রহী জামাল স্যার তাঁর চিত্রকর্মে সৃজনশীলতার অনবদ্য প্রকাশ ঘটিয়েছেন। নিজের আঁকা সুকুমার চিত্র ব্যক্তিগত গ্রন্থাগারে শোভা পাচ্ছে। ধরিত্রীর চিরন্তন বিধি অনুসরণে ২০১৩ সালের ১৬ মার্চ শেষ গন্তব্যের ঠিকানায় পৌঁছে গেছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের দায়িত্ব পালনকালে তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইনস্টিটিউট তারই নামাকরণে অলঙ্কিত করা হয়েছে। ইনস্টিটিউটের অবকাঠামো-লাইব্রেরী-জাদুঘর-যাবতীয় শোভাবর্ধনসহ নানাবিধ সুযোগ সুবিধায় আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা কেন্দ্রে পরিণত করার উদ্যোগ ছিল অকৃত্রিম-আন্তরিক শ্রদ্ধা-ভালোবাসার নিবেদন। প্রয়াণ দিবসে পরম শ্রদ্ধেয় স্যার ও তাঁর প্রিয় সহধর্মীনিসহ তারই তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন গবেষণায় কর্মরত প্রয়াত অনুসারীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। বিশ্ববিবেক শ্রদ্ধেয় স্যারকে মরনোত্তর নোবেল পুরষ্কার প্রদানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক- বাঙালি জাতির পক্ষ থেকে এই প্রত্যাশাটুকু ব্যক্ত করছি।

লেখক: ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

পূর্বকোণ/সাফা

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট