চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

শতভাগ বিদ্যুতায়ন দেশের অর্থনীতির ভিতকে আরো শক্তিশালী করবে

রেজাউল করিম খোকন

২৪ মার্চ, ২০২২ | ৭:৪২ অপরাহ্ণ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাইলফলকে বাংলাদেশ, নতুন আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছে দেশ। এর মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম শতভাগ বিদ্যুতায়নের দেশ হিসেবে ঘোষণা দিতে পারল।

২০২১ সালের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশের দিকে যেতে এটা করা জরুরি ছিল। দেশের প্রত্যন্ত দুর্গম গ্রাম যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থাও বেশ কঠিন, তেমন গ্রামেও পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। প্রায় সব ধরনের নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত বহু পরিবার আজ বিদ্যুৎ সংযোগ এর বদৌলতে তাদের জীবনটাকে নতুনভাবে সাজানোর পরিকল্পনা করছে। চারপাশ পানিতে পরিবেষ্টিত বিস্তীর্ণ বিলের মধ্যে বসবাসকারী মানুষের ঘরেও জ্বলছে বিদ্যুতের আলো। সৌর বিদ্যুৎ সুবিধায় তাদের ঘরে জ্বলছে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত বৈদ্যুতিক বালব। শুধু বিলের মধ্যে নয়, দুর্গম পাহাড়ে, বিচ্ছিন্ন সব চরে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগের সুবিধা। গ্রিড-সুবিধা না থাকায় এসব এলাকায় কোথায় কোথায়ও নদী পারাপার লাইন এবং কোথাও সাগর নদীর তলদেশ দিয়ে টানা হয়েছে সাবমেরিন ক্যাবল।

কোথাও আবার সেটাও করা হয়নি অবকাঠামোগত কিংবা প্রযুক্তিগত প্রতিকুলতার কারণে। তাই সেখানে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সৌর বিদ্যুৎ (সোলার হোম সিস্টেম)-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর এভাবেই দেশের প্রতিটি জনপদে পৌঁছানো হয়েছে বিদ্যুৎ সুবিধা। বর্তমানে দেশের মোট ৪৯২টি উপজেলার মধ্যে ৪৬২টিতে বিদ্যুৎ সেবা দিচ্ছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। অনেক উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহের গ্রিড না থাকলেও তেমন দুর্গম প্রত্যন্ত গ্রামে তারা বিদ্যুৎ সংযোগ এর ব্যবস্থা করেছেন। হাজার হাজার পরিবার এভাবেই বিদ্যুৎ সংযোগ এর আওতায় চলে এসেছেন।

এজন্য নদী পারাপার লাইন তৈরি করতে হয়েছে, সাবমেরিন ক্যাবল টানতে হয়েছে। বিদ্যুৎ অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। দেশের কৃষি, শিল্প, সেবাখাতসহ দৈনন্দিন জীবনে বিদ্যুতের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সূচকের ঊর্ধ্বগতি নিশ্চিত করতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের যোগান একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত। বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে বিদ্যুৎ মূল চালিকা শক্তি। দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ক্রমাগত বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মোট উৎপাদনের পরিমাণও বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ বিতরণে অর্থাৎ গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বৃদ্ধি, নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ সিস্টেম আপগ্রেডেশন, প্রি-পেইড মিটারসহ স্মার্ট মিটার, স্মার্ট গ্রিড স্থাপন প্রভৃতি কর্মসূচি অন্যতম। এ ক্ষেত্রে প্রথম পর্যায়ে গ্রামের আনাচে-কানাচে, ছোট-বড়, নদী-খাল-বিল, মাঠঘাট, গাছপালা, বন-বাদাড়ের মধ্য দিয়ে লাইন নির্মাণ করে দ্রুত সংযোগ প্রদান অত্যন্ত দুরূহ এই কাজ করেছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও তার ৮০টি  পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে দেশের সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এর আগে ২০১৬ সালে ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ’ শীর্ষক কর্মসূচি শুরু হয়। বাড়ি বাড়ি ভ্যান নিয়ে গিয়ে বিদ্যুৎ-সংযোগ দিতে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড চালু করে আলোর ফেরিওয়ালা’ কর্মসূচি। এভাবে লক্ষ লক্ষ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সব মিলে বেঁধে দেওয়া সময় ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই শতভাগ বিদ্যুতায়ান নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত সময়ের মধ্যেই দেশের শতভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। দুর্গম পাহাড়ে কিংবা পানি পরিবেষ্টিত বিচ্ছিন্ন হাওড় ও দ্বীপ অঞ্চলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুর্গম চর এলাকায় বিদ্যুৎ সুবিধায় জেগে উঠেছে নতুন সম্ভাবনা। কৃষি, শিল্প ব্যবসা-বাণিজ্য, জীবনযাপন, শিক্ষাব্যবস্থা সবকিছুতেই নতুন জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকায় আগে আলোর অভাবে রাতে ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে পারতোনা, অথচ বর্তমানে বৈদ্যুতিক আলোয় উদ্ভাসিত এসব দুর্গম এলাকার ছেলেমেয়েরা রাতে লেখাপড়ার করার সুযোগ পাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, কুটির শিল্পসহ জীবনযাপনেও এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। কয়েকবছর আগেও যে জীবনের কথা তারা কল্পনা করতে পারতোনা, তা এখন বাস্তব হয়ে ধরা দিয়েছে ঐসব এলাকার মানুষের কাছে। আর এভাবেই বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে অগ্রগতির নানা ধাপ অতিক্রম করে সমৃদ্ধি ও সাফল্যের দিকে।

বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসার পর থেকে দুর্গম প্রত্যন্ত গ্রামের জনপদগুলো জেগে উঠেছে নতুন ভাবে। আধুনিক জীবনধারার সাথে যুক্ত হচ্ছে এসব এলাকার মানুষ। যেখানে মানুষ  ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম ব্যবহারের কথা কল্পনা করতে পারতোনা এখন বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসার পর থেকে নানা গৃহস্থালি বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার শুরু করেছে তারা। ফলে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এর শো-রুম  খুলে বসছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে ইলেকট্রনিক সামগ্রীর নতুন বাজার সম্প্রসারিত হয়েছে দেশজুড়ে। বিভিন্ন ধরনের  অনলাইন সেবার আওতায় আসার মাধ্যমে সেখানকার জীবনযাত্রার মানে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। গ্রামের মধ্যে বরফকল, রাইসমিল ক্ষুদ্র শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে।

যেখানে  গ্রামের নারী পুরুষদের জন্য নতুন বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মৎস্যজীবীরা আগে সাগর কিংবা নদী থেকে মাছ ধরে তা সংরক্ষণের  সুযোগ না পেয়ে চরম ক্ষতির সন্মুখীন হতেন এখন স্থানীয়ভাবে বরফকল চালু হওয়ায় মাছ সংরক্ষণের জন্য অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হচ্ছে না। গ্রামের হাটবাজারে ক্ষুদ্র  ক্ষুদ্র ব্যবসার বিস্তৃতি ঘটেছে। এর ফলে গ্রামীন  অর্থনীতিতে নতুন করে গতির সঞ্চার হয়েছে। এভাবেই দেশের অর্থনীতিতে একধরনের  স্বাচ্ছন্দ্য গতির সঞ্চার হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। বিদ্যুৎশক্তি কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা অর্জন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে দীর্ঘ মেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের সঙ্গে বিদ্যুৎশক্তির কতটা প্রয়োজন, এই সমীকরণটি বর্তমান সরকার বুঝতে পেরেই বিদ্যুৎ খাতে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে।

যুগ যুগ ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ দ্বীপ সন্দ্বীপ। সেখানকার অধিবাসীরা কোনোদিন বিদ্যুৎ সংযোগ পাবেন ভাবতে পারতেন না। কারণ, সাগর পরিবেষ্টিত ঐ দ্বীপে বৈদ্যুতিক লাইন টেনে বিদ্যুৎ নেওয়ার কথা ভাবা হলেও কঠিন এ কাজটি করা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ সময়ে বিভিন্ন সরকারের আমলে এই দ্বীপে বিদ্যুৎ সংযোগের নানা প্রতিশ্রুতির কথা শোনা গেলেও তা প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে। বাস্তবে রূপলাভ দেওয়া সম্ভব হয়নি। দীর্ঘদিনের সেই অসম্ভব কাজটি সম্ভব হয়েছে ইতোমধ্যেই।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়নবোর্ড ২০১৮ সালে সাগরের তলদেশে ১৬ কিলোমিটার সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন শুরু করে ২০২০ সালের নভেম্বরে সন্দ্বীপে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে। এর ফলে চারদিকে অথৈ সাগর পরিবেষ্টিত এই দ্বীপের জনজীবনে নতুন প্রাণের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।অর্থনীতিতে বিপুল সম্ভাবনা সৃষ্টি এবং দারুণ গতি আনতে বিদ্যুৎ সুবিধা শক্তিশালী অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে সব সময়েই, সব দেশেই, সব জনপদে। আমাদের বাংলাদেশে কিছুদিন আগেও গ্রামের মানুষের একমাত্র জীবিকা ছিল কৃষি। কৃষির বাইরে অন্য কোনো পেশা বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিলনা তাদের। সেখানে বর্তমানে ছোট বড় সব ধরনের ধানকল থেকে শুরু করে গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে কৃষি জমিতে সেচের ব্যবস্থাকরণ, হাঁস মুরগির খামার, যন্ত্রচালিত যানবাহনে বিদ্যুৎতের ব্যবহার হচ্ছে। গ্রামে গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা, ইউনিয়ন পরিষদে তথ্যসেবা কেন্দ্র, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া পাঠদানে সুবিধা নিশ্চিত হচ্ছে।বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থায় বেসরকারি উদ্যোক্তারা যুক্ত হওয়ায় এ খাতে একটি বিরাট ক্ষেত্র তৈরি  হয়েছে।

সরকারি-বেসরকারি অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এখাতে দক্ষ ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠেছে। কাজের মধ্যে  তুলনা করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এতে জবাবদিহিতা বেড়েছে। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্ব দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ছিল ২৭, বর্তমানে তা বেড়ে ১৪৮টি হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ৪ হাজার ৯৪২ থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫ হাজার ৫১৪ মেগাওয়াট। উৎপাদন বেড়েছে পাঁচগুণ। একই সময়ে সঞ্চালন লাইন বেড়েছে ৫ হাজার ২১৩ কিলোমিটার, বিতরণ লাইন বেড়েছে ৩ লাখ ৬১ হাজার কিলোমিটার। নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ হয়েছে ৩ কোটি ১৩ লাখ। এর মধ্যে সেচ সংযোগ দ্বিগুণ হয়েছে। যা দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে জোরালো ভূমিকা রাখছে নিঃসন্দেহে।

অতি সম্প্রতি চালু হওয়া পায়রার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নতুনভাবে যুক্ত হচ্ছে। ফলে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণও বেড়ে গেল নতুন করে। গত ১১ বছরে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলেও বিদ্যুৎ খাতের ঘাটতি মেটানো যাচ্ছেনা। সরকার এ খাতে গত বছর ২০২১ সালে ১১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতায়নে সরকারের বিরাট সাফল্য দেশবাসীকে আনন্দিত ও আশাবাদি করেছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধার বিস্তৃতি অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের এগিয়ে চলাকে আরও বেগবান করবে। দফায় দফায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনে যেভাবে চাপ সৃষ্টি করে অসহনীয় অবস্থার সৃষ্টি করে ঠিক তেমনিভাবে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি শিল্প কলকারখানায় উৎপাদন ব্যয় কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়, উৎপাদিত পণ্যের দামও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। ফলে বাজারেও পণ্যমূল্য বৃদ্ধির প্রকোপ দেখা যায়। যার চাপ বহন করতে হয় সাধারণ জনগণকে।

সহনীয় দামে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারাটা বড় একটি চ্যালেঞ্জ সন্দেহ নেই। শতভাগ বিদ্যুতায়নের পরও দেশের সব মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে কিনা সেটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। দেশের অর্থনীতির গতিকে সচল এবং বেগবান রাখতে হলে বিদ্যুৎ একটি অন্যতম শক্তিশালী নিয়ামক এটা অস্বীকার করা উপায় নেই। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত কল্পে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হলেও অনেক সময় অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, অপরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে সাধারণ জনগণকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকা-ে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। যে কারণে জ্বালানি সাশ্রয়ী উৎপাদন ব্যবস্থায় সহনীয় মূল্যে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

পরিকল্পনা ও সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিতরণের কাজটিও করতে হবে দক্ষভাবে। এক্ষেত্রে গাফিলতি কিংবা খামখেয়ালির কোনো সুযোগ নেই। বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হলেও মানুষের  আয়ের সঙ্গে  সংগতি রেখে বিদ্যুতের মূল্য ধরে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।কোনোভাবেই যেন সরবরাহ ব্যাহত না হয়, সে দিকটি খেয়াল রাখতে হবে। দেশের সব মানুষের জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা প্রাপ্তির বিষয়টি অনেকটা নির্ভর করে তাদের আর্থিক সক্ষমতার উপর। যে কারণে সাধারণ মানুষের ক্রয় সক্ষমতা বাড়াতে  সরকারকে নানামুখি উদ্যোগ গ্রহণের ব্যাপারটি এখানে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

লেখক: রেজাউল করিম খোকন, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার ও কলাম লেখক

পূর্বকোণ/সাফা

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট