চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান

মাহমুদুল হক আনসারী

২০ জুলাই, ২০১৯ | ১:১২ পূর্বাহ্ণ

সারা দেশ বন্যার পানিতে ভাসছে। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান এখন বন্যা ও জোয়ারের পানিতে ভাসছে। প্রতিদিন হাজার হাজার পরিবার বন্যা ও বৃষ্টির পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। অজোর বৃষ্টির ফলে দেশের কৃষি ক্ষেত ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গ্রামের কৃষক এখন কর্মহীনভাবে অলস সময় পার করছে। বৃষ্টির পানির ব্যাপকতায় গ্রামের জমি, কৃষি, ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনের তালিকা তৈরী করতে হবে। সারাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিষয় চিহ্নিত করে ক্ষতি নিরুপণ করে প্রকৃত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বাঁচাতে হবে। তাদের তালিকা তৈরী করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন তালিকা করে তা থানা ও জেলা প্রশাসনে পাঠাতে হবে। ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দকৃত ত্রাণ সঠিকভাবে বন্টন করতে হবে। কৃষি জমির আবাদের জন্য বীজ সার দিয়ে কৃষকের পাশে যেতে হবে। কৃষকদের ব্যাংক ঋণ মওকুফ করতে হবে। সুধী মহাজন ও গ্রামীণ ব্যাংকের মতো অসাধু আর্থিক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কৃষক ও দিনমজুর মানুষদের রক্ষা করতে হবে। সহজ শর্ত ও সুদবিহীন কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। সারাদেশের গ্রামের কৃষকদের ক্ষতি নিরুপণ করার দায়িত্ব দিতে হবে। ইতিমধ্যে শহর গ্রামের রাস্তার বেহাল দশা দেখছি। কোথাও একটি সড়কও ভালো নেই। অতিবৃষ্টির ফলে রাস্তাগুলোতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যান চলাচলে জীবন ঝুঁকি নিয়ে গণ ও পণ্য পরিবহণ চলছে। প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটার সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। শহর গ্রামের এসব সড়ক খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামতের ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তা কালভার্ট নির্মাণে কী পরিমাণ দুর্নীতি ও অর্থ লুটপাট হয়েছে তা বৃষ্টির পর রাস্তা দেখলেই বুঝা যায়। কোনো রাস্তায় বিটুমিন নেই। রাস্তার বিটুমিন উঠে গিয়ে কংকর দেখা যাচ্ছে। পরিবহণের চাপে কংকর উঠে যাচ্ছে ফলে গর্তের তৈরী হয়েছে। গাড়ী চলাচলের জন্য মারাত্মকভাবে হুমকী হচ্ছে। পথে পথে যাত্রীবাহী গাড়ী উল্টে যাচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল কলেজ যাচ্ছে। টেকসইভাবে রাস্তার সংস্কার চাই।
উন্নয়ন কর্মকা- টেকসইভাবে যেনো করা হয়। রাস্তাগুলোর সঠিক মেরামত চায় জনগণ। রাস্তার মনিটরিং এর যারা দায়িত্বে থাকেন, তারা যেনো সঠিকভাবে মনিটরিং করেন। কংকর, সিমেন্ট বিটুমিন যেনো সঠিকভাবে মনিটরিং করেন। কংকর, সিমেন্ট বিটুমিন যেনো সঠিক মাত্রায় রাস্তায় ব্যবহার করা হয় তা দেখতে হবে। ছয়মাস যেতে না যেতেই রাস্তার এ পরিণতি। জনগণ বলছে মানহীন কাজের ফলে রাস্তার এ করুণ পরিণতি। যেভাবেই হোক খুব সহসা রাস্তাসমূহের সংস্কার ও মেরামত করতে হবে। রাস্তার খুঁড়াখুঁড়ির ফলে শহরের অনেকগুলো রাস্তার এখনো কাজ সমাপ্ত করা হয়নি। এক সংস্থা রাস্তার কাজ শেষ করে গেলে অপর সংস্থা সেখানে কাজ শুরু করে এভাবে যান চলাচলের রাস্তার কোনো সঠিক ব্যবস্থাপনা নেই। প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন ও যাত্রীসাধারণ চরমভাবে ভোগান্তিতে পড়ছে। এসব উন্নয়ন কর্মকা- অবশ্যই নির্দিষ্ট সময় ও তারিখের মধ্যে শেষ করতে হবে।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয় স্থানীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই কাজের মান ঠিক রেখে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ঠিক করতে হবে। হাজার হাজার কোটি টাকার সড়কের কাজ ছয়মাস তিনমাস যেতে না যেতেই রাস্তার এসব করুণ অবস্থা দেখলে মনে হয় এখানে ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। এসব নি¤œমানের কাজ কোনো অবস্থায় মেনে নেয়া যায়না। কাজের মান ঠিক রেখে সড়কের উন্নয়ন করতে হবে। সংস্কার করতে হবে, উন্নয়ন ও কাজ সবকিছুই সঠিক মান নির্ণয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে কাজ বুঝিয়ে নিতে হবে। দুর্নীতিগ্রস্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। স্বচ্ছ ও আদর্শবান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে উন্নয়নের কাজ দিয়ে কাজের মান ঠিক রাখতে হবে। দুর্নীতির মাধ্যমে যারা সড়কের অর্থ আত্মসাৎ করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। অর্থ ও কাজ দুটোর মধ্যে স্বচ্ছতা জবাবদিহীতা থাকতে হবে। রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠে লাখ লাখ বন্যার্ত পরিবারের পাশে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

লেখক : গবেষক, প্রাবন্ধিক

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট