চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী : নৈকষ্য চট্টলমানস

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ৩:৪৮ অপরাহ্ণ

সাধারণ থেকে অসাধারণ ব্যক্তিত্বে নিজেকে উন্নীত করার এক জ্ঞানস্ফীত পাঠশালা সর্বজনশ্রদ্ধেয় দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী। ত্রৈকালিক অভিযাত্রায় প্রণিধানযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহের সমন্বয় ঘটিয়ে রচনা করেছেন জীবন-দর্শনের তৌর্যত্রিক পাণ্ডুলিপি। বহুমাত্রিক গুনের অধিকারী এই কৃতিমানব চট্টগ্রামকে শুধু দেশে নয়; আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও উদ্ভাসিত করেছেন অনন্য উচ্চতায়। তাঁর প্রয়াণদিবসের শোকগাঁথা নান্দীপাঠে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘অশেষ’ কবিতার কয়েকটি পংক্তি উপস্থাপন করতে চাই- ‘আবার আহবান? যতকিছু ছিল কাজ সাঙ্গ তো করেছি আজ দীর্ঘ দিনমান।/ জাগায়ে মাধবীবন চলে গেছে বহুক্ষণ প্রত্যুষ নবীন,/ প্রখর পিপাসা হানি পুষ্পের শিশির টানি গেছে মধ্যদিন,/ মাঠের পশ্চিমশেষে অপরাহ্ন ম্লান হেসে, হল অবসান,/ পরপারে উত্তরিতে পা দিয়েছি তরণীতে- তবুও আহবান?’ উল্লেখ্য পংক্তিসমূহের অনুধাবনে স্বল্পপরিসরে এটুকুই নিবেদন করতে চাই; চট্টলদরদী খ্যাত এই মহান ব্যক্তির তিরোধান কোনভাবেই চট্টগ্রামবাসীর হৃদয় থেকে নির্বাসিত করার নয়।
দৃশ্যমান কর্মযজ্ঞের প্রতিস্থাপন তাঁকে প্রতিদিনই চট্টগ্রামবাসীর প্রাণস্পন্দনে অত্যুজ্জ্বল করে তোলে। অনুপম অনুপ্রেরণা ও তেজোদীপ্ত মহিমায় আত্মপ্রত্যয়ী-আত্মসংযমী-আত্মত্যাগী হওয়ার অপার সম্ভাবনার দ্বার-উম্মোচক সকলের সর্বাধিক প্রিয় চাচা ইউসুফ চৌধুরী। খ্যাতিশীর্ষ দেশ ও বিশ্বের মহামানবদের পরিপূর্ণ অনুসরণে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন এক অনুকরণীয় প্রতিষ্ঠানে। উপমহাদেশের ইতিহাসে খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবী-শিক্ষাবিদ-সাংবাদিক-সুশীল ও সাধারণ মানুষের হৃদয় জয় করার মোহময় শক্তিময়তায় ঋদ্ধ ইউসুফ চাচা পূর্ণাঙ্গ সার্থক হয়েছিলেন স্বকীয় সত্ত্বার নিগূঢ় অবগাহনে। এটি সর্বজনবিদিত যে, প্রাগৈতিহাসিক নব্যপ্রস্তরযুগের উপকরণ আচ্ছাদনে চট্টগ্রামের সুপ্রাচীন সমাজ-ইতিহাস বিশ্বস্বীকৃত। খ্রিস্টপূর্ব সময়কাল থেকে ‘আর্যীকরণ’ প্রক্রিয়ায় চট্টগ্রামও বিভিন্ন ধর্মীয় সংস্কৃতির প্রসারে সমুদয় প্রভাবিত ছিল।
খ্যাতিমান ইতিহাসবিদ ড. নলিনীকান্ত ভট্টশালীর মতানুসারে; খ্রিস্টের জন্মসন সূচনার প্রথম শতকে গ্রিক ভৌগোলিক প্লিনি রচিত ‘পেরিপ্লাসে’ ‘ক্রিস’ সম্বোধিত স্থানটি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের সাথে অভিন্ন জ্ঞাপিত চিত্র। ল্যাসেনের মতে ‘পেন্টাপোলিস’ হচ্ছে চট্টগামেরই চিরায়ত আদি নাম। আরাকানের প্রসিদ্ধ চন্দ্রবংশীয় অন্যতম রাজা সু-লা-তাইং-সন্দয়া ৯৫৩ সালে প্রাচীন বাংলা শাসন করার লক্ষ্যে অভিযান পরিচালনা করলেও অজ্ঞাত কারণে উত্তরদিকে অগ্রসর না হওয়ার বিষয়টিকে ধারণ করার জন্য একটি স্মারকস্তম্ভ নির্মাণ করেন। এর শিলালিপিতে খোদিত ‘চেৎ-ত-গৌঙ্গ’ বা বাংলা প্রতিশব্দ ‘যুদ্ধ করা অনুচিত’। আরাকান রাজবংশাবলির পুঁথিতে বর্ণিত ‘চেত্তগৌং’ থেকেই চাটিগ্রাম-চাটগাঁ-চট্টগ্রাম-চিটাগং ইত্যাদির জন্মসূত্র বিরচিত। এই উপমহাদেশের বহু রাজনৈতিক-সামাজিক আন্দোলন-সংগ্রামে চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামবাসীর সাহসীক প্রকর্ষ ভূমিকা বিশ্বসভ্যতায় সমাদৃত। সিপাহীবিদ্রোহ, বঙ্গদেশ থেকে চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার বিরোধিতা, স্বদেশী-অসহযোগ-খেলাফত আন্দোলন-ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন-যুববিদ্রোহ-৪৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত মুক্তির মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ স্বাধীনতাসংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের নির্ভীক সঞ্চলন যুগান্তকারী অবদান হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত।
পরম শ্রদ্ধাভাজন প্রয়াত যাত্রামোহন সেন, শেখ এ চাটগাম কাজেম আলী, মনিরুজ্জমান ইসলামাবাদী, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত, মাস্টার দা সূর্যসেন, লোকনাথ বল, আব্দুল হক দোভাষ, রফিউদ্দিন সিদ্দিকী, সিরাজুল হক, ডা. এমএ হাশেম, খানবাহাদুর বদি আহমদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার আনোয়ারুল আজিম, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত, পূর্ণেন্দু দস্তিদার, অধ্যাপক আবুল কাশেম, আবদুস সাত্তার, পূর্ণেন্দু কানুনগো, শহীদ শেখ মুজাফ্ফর আহমদ, আহমেদুর রহমান আজমী, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল খালেক, মাহবুব আলম চৌধুরী, অনঙ্গ সেন, এমএ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরী, অধ্যাপক মোহাম্মদ খালেদ, এমএ হান্নান, এমএ মান্নান, বেলাল মুহাম্মদ, আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, মৌলভী সৈয়দসহ চট্টগ্রামের বহুমুখী কৃতিমানবের সাথে নিষিক্ত মর্যাদার আসনে প্রমূর্ত প্রিয় মোহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী। (প্রাসঙ্গিকতায় বিপুলসংখ্যক কৃতিমানবের নাম নিবন্ধ সঙ্কুচনের কারণে উল্লেখ করতে পারিনি বলে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।)
স্বল্পপরিসরে হলেও উক্ত উপস্থাপনায় বাংলাদেশ তথা ভারতবর্ষে গণমাধ্যম বা সংবাদপত্রের প্রকাশ-প্রচার পটভূমিতে কী অসহনীয় যন্ত্রণা-দমন-পীড়ন-নিবর্তনের কঠিন বিষয়সমূহ বিধৃত করা না হলে নিবন্ধটি পরিপূর্ণতা পাবেনা। উল্লেখ্য যে, ভারততত্ত্ব-ভাস্কর শ্রী রমেশ চন্দ্র মজুমদারের ‘বাংলাদেশের ইতিহাস’ গ্রন্থটি এর সাবলীল ও সম্যক ধারণায় যথার্থ উপযোগী অবদানে পরিপুষ্ট। James Augustus Hicky সম্পাদিত Bangla Gazette ছিল বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র যার ভাষা ছিল ইংরেজি। ১৭৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই পত্রিকার আরেক নাম ছিল Calcutta General Advertiser. দুইপাতার এই ক্ষুদ্র পত্রিকার বিপুল অংশ ভরা থাকত বিজ্ঞাপনে এবং উচ্চপদস্থ রাজপুরুষদের কুৎসা রচনায় ভরপুর থাকত বাকী অংশ। সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে এই পত্রিকা নিয়ন্ত্রণের জন্য যে ব্যবস্থাটি গ্রহণ করা হয়, তা হলো সাধারণ ডাকের মাধ্যমে এই সংবাদপত্রটি পাঠানোর বন্ধের আয়োজন। এর প্রতিবাদে James Hicky মুদ্রাযন্ত্রের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য যে জোরালো ভূমিকা পালন করেছিলেন, তা অবিস্মরণীয়।
মত প্রকাশের স্বাধীনতা ‘ইংরেজ জাতির জন্মগত অধিকার ও সুশাসনের একটি প্রধান অঙ্গ’ এই আদর্শ প্রচারে জনাব Hicky সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ স্বৈরতন্ত্রের পরিচায়ক দাবী করেন। এর চল্লিশ বছর পর বাঙালির পক্ষে রামমোহন রায়ও এই স্বাধীনতার দাবীতে সোচ্চার ছিলেন। ১৭৮১ সনে বড় লাট James Hicky‘র বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে তাঁকে শুধু কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেননি, তাঁর প্রকাশিত পত্রিকার প্রকাশও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ১৭৮০ সাল থেকে ১৭৯৩ সাল পর্যন্ত ইন্ডিয়া গেজেট, কলিকাতা গেজেট, এবং হরকরাসহ আরো তিনটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়; যাতে বিদেশ ও ভারতীয় সংবাদ পরিবেশিত হলেও এই সব পত্রিকার মূখ্য পাঠক ছিল ইংরেজরা। মজার বিষয় হচ্ছে, এইসব পত্রিকায় প্রায় ইংরেজ শাসনের কঠোর সমালোচনা থাকত যার ফলস্বরূপ সম্পাদকবৃন্দ সীমাহীন কষ্ট ও লাঞ্ছনার শিকার হতেন। Bengal Journal ও Indian World পত্রিকার আমেরিকাবাসী আইরিশ সম্পাদক William Duane এই ধরনের বহু লাঞ্ছনা সহ্য করে ভারতবর্ষ থেকে নির্বাসিত হতে বাধ্য হয়েছিলন।
গণমাধ্যম্যের গুনগত উৎকর্ষতা, বস্তুনিষ্ঠ-সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনা, সাহিত্য-শিল্পকলা, ঐতিহ্য-কৃষ্টি-সংস্কৃতির সার্বিক বিষয়ে সমসাময়িক পদচারণায় আকর্ষণীয় আঙ্গিক ও কলবরে ব্যাপৃত দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট শিল্পপতি, মাটি ও মানুষের প্রতি গভীর মমত্ববোধ, অসাম্প্রদায়িক মানবিক ও দেশপ্রেমিক ইউসুফ চাচার জীবনের আড়ালে বহু ঘটনা এখনোও অনাবিষ্কৃত। ১৯২১ সালের ১৯ সেপ্টম্বর চট্টগ্রামের বিখ্যাত রাউজানের ঢেউয়া হাজিপাড়া নামক অজপাড়াগাঁয়ে জন্ম নেয়া এই মহান ব্যক্তিটি অবিচল নিষ্ঠা-অক্লান্ত পরিশ্রম-সময়ানুবর্তিতা ও নিবিড় অধ্যাবসায়ের বীজাঙ্কুর চেতনায় নিজের অবস্থানকে জ্যোতির্ময় আলোবর্তিকায় সমাসীন করতে পেরেছিলেন। মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে উচ্চ-মাধ্যমিকে অধ্যয়নরত প্রয়াত ইউসুফ চাচা জীবনে প্রথম কর্মবীর হতে পেরেছেন রাউজানের ফকিরহাটে ‘ছাত্রবন্ধু লাইব্রেরি’র মাধ্যমে বইয়ের ব্যবসা শুরু করে। সেই ব্যবসায় সফল না হয়ে চট্টগ্রাম নগরের জুবিলী রোডে ‘অরিয়েন্ট স্টোর’ নামে স্টেশনারি দোকান প্রতিষ্ঠা করেন। সমবায় সমিতি ভবনের পাশে এই দোকান তাঁর জীবনে মোড় ঘুরানোর মাইলফলক স্বরূপ রাজসিক স্থাপনা।
১৯৪৯ সালের শেষ পর্যায়ে ‘ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব পাকিস্তান’র এজেন্সি গ্রহণ এবং সংবাদপত্র ও বই বিপণন ব্যবসায় মনোযোগী হন। পরবর্তীতে তিনি ‘নিউজ উইক’, ‘রিডার্স ডাইজেস্ট’, ‘উইকলি টাইম্স’, ‘দ্য ডেইলি ডন’ পত্রিকাসমূহের এজেন্সি প্রাপ্ত হন। ‘নিউজফ্রন্ট’ নামক পুস্তকপ্রতিষ্ঠান, ১৯৬১ সালে প্যাকেজিং শিল্পের উদ্যোগ, ১৯৮৪ সালে সিগনেটবক্স স্থাপনের আরাধ্য অভিজ্ঞতায় ১৯৮৬ সালে দৈনিক পূর্বকোণ প্রকাশনা ছিল তাঁর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণের বিজয়বাহন। অত্যধিক তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়; তিনি ‘নিউজফ্রন্ট’ থেকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘জীবন নির্ভর’ নাটক এবং অধ্যাপক আবুল ফজলের ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ বই প্রকাশ করেন। চট্টগ্রাম তথা দেশের কৃষি-সংস্কৃতি সৃজনে তাঁর কার্যকর অবদান সর্বত্রই প্রশংসিত। ১৯৯২ সাল থেকে ডেইরি ও পোল্ট্রি শিল্প আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে চট্টগ্রামের প্রায় তিনশত খামার এবং প্রথম গবাদি পশুর মেলার প্রধান উদ্যোক্তা খ্যাতিতে চির ভাস্বর হয়ে আছেন।
কবি নজরুলের আগমনস্থল নিজ বাড়িতে নজরুল মেলার আয়োজন ও নজরুল পাঠাগার স্থাপন করে নজরুল স্মৃতি রক্ষার জন্য কর্মযোগী মানুষ হিসেবে পরিখ্যাত অধ্যায় নির্মাণ করেছেন। চট্টগ্রামের বিআইটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর, ভেটেরিনারী কলেজ স্থাপন এবং তা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের আন্দোলন-সংগ্রামে তাঁর অনবদ্য জোরালো ভূমিকা পালনের জন্য ‘চট্টলদরদী’ উপাধিতে ভূষিত হন। বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি হিসেবে চট্টগ্রামবাসীর সার্বিক দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার, পানি সঙ্কটসহ নানা সমস্যা চিহ্নিতকরণে তিনি ছিলেন অগ্রগণ্য। এসব সমস্যা থেকে উত্তরণে কর্মউদ্যোগ গ্রহণ, হালদা নদীতে মৎস্য প্রজননের উপযোগী সংস্কার এবং উন্নয়ন, কর্ণফুলী নদীকে দখল-পরিবেশ দূষণ মুক্ত করে পরিকল্পিত নগরী প্রতিষ্ঠার উপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণে জনগণকে সচেতন ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং যুগোপযোগী মনন ও সৃজনশীল আধুনিকায়নে জোরালো কণ্ঠস্বর ছিলেন।
এমন আরো বহু বিষয় রয়েছে; তার বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য বিশদ গবেষণা-বিশ্লেষণের প্রয়োজন। কিঞ্চিৎ আবিষ্কৃত এবং যথার্থ অর্থে সরকারি বা বেসরকারি স্বীকৃতি বা পদকপ্রাপ্ত না হলেও; এই ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্বের জীবন ও সমাজ দর্শন চট্টগ্রামের তরুণ প্রজন্মকে নতুন পথের সন্ধান দিবে- এটিই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। নৈকষ্য চট্টলমানস ইউসুফ চৌধুরী পবিত্র মক্কা নগরীতে ওমরাহ পালনকালে অন্তিমযাত্রার সারথি হয়ে ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের মতে আল্লাহর নৈকট্য লাভে পুণ্যতার মার্গশীর্ষে নিজেকে অধিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। নিবন্ধের শেষ করতে চাই জাতীয় কবি নজরুলের ‘তুমি কি গিয়াছ ভুলে’ কবিতার কয়েকটি চরণ নিবেদনে – ‘তুমি কি গিয়াছ ভুলে?/ তোমার চরণ-স্মরণ-চিহ্ন আজো মোর নদীকূলে/ মুছিল না প্রিয়, মুছিল না তার বুকে যে লিখিলে লেখা,/ মাঝে বহে ¯্রােত, দু’কূল জুড়িয়া চরণ-স্মরণ-রেখা!/ বন্যার ঢল, জোয়ার, উজান আসে যায় ফিরে ফিরে/ ও চরণরেখা মুছিল না মোর বালুচরে নদীতীরে!/ উর্ধ্বে ধূসর সান্ধ্য আকাশে ক্ষীণ চন্দ্রের লেখা,/ নিম্নে আমার শূন্য বালুচরে তোমার চরণরেখা।’ আজকের দিনে এই কৃতিমানবের পূত-পবিত্র স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী শিক্ষাবিদ, সমাজবিজ্ঞানী; সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট