৩১ মে, ২০১৯ | ১:৫৫ পূর্বাহ্ণ
অধ্যক্ষ এম সোলাইমান কাসেমী
মানবজীবনে রমজানের রোজার গুরুত্ব অপরিসীম। রমজানের রোজা এমন একটি ইবাদত তথা দ্বীনি প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া, যা মানুষকে সংযমের সু-কঠিন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে খাঁটি সোনায় পরিণত করতে চায়। একটি সীমিত সময়ের পার্থিব জীবনকে অসীম-অনন্ত জীবনের চিরন্তন ধারা স্রােতে বিলীন করে দিয়ে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উপযোগী করতে চায়। এ কারণেই রোজা শুধু পানাহার ও প্রবৃত্তির অবৈধ চাহিদা বর্জনের আনুষ্ঠানিকতা সমন্বিত একটি প্রক্রিয়া নয়। বরং তা একদিকে যেমন শারীরিক ও আতিœক পরিশুদ্ধির কৌশল, অন্যদিকে মহান আল্লাহর প্রতি আত্নসমর্পণের এক চূড়ান্ত উদাহরণ।
রোজা পালনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে হযরত সালমান ফারসী (রা) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে প্রিয়নবী (সা) ইরশাদ করেন : ‘হে লোক সকল! একটি মহান বরকতময় মাস তোমাদের দ্বারে উপস্থিত। এ মাসে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাত রয়েছে, যে রাতের ইবাদত এক হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। আল্লাহ্পাক এ মাসে রোজা ফরজ করেছেন। এ মাসের রাতগুলোতে ইবাদত করা অত্যন্ত সাওয়াবের কাজ। এ মাসে যে একটি নফল ইবাদত করে তার বিনিময় হিসেবে আল্লাহতায়ালা অন্য মাসের একটি ফরজের সমপরিমাণ সাওয়াব দান করবেন। আর এ মাসের একটি ফরজ অন্য মাসের সত্তরটি ফরজের সমতুল্য। এ মাস সবর ও ধৈর্যের মাস। আর ধৈর্যের প্রতিদান হলো জান্নাত।
এ মাস পরস্পরের সহানুভূতি ও সদ্ব্যবহার করার মাস। এ মাসে মু’মিনের রিজিক বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। এ মাসের প্রথম দশদিন রহমতের, দ্বিতীয় দশদিন মাগফিরাতের আর তৃতীয় দশদিন হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের। যে ব্যক্তি পবিত্র এ মাসে তার অধীনস্থ লোকদের প্রতি সদয় ব্যবহার করে তাহলে তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। এভাবে পবিত্র মাহে রমজানের তাৎপর্যের কথা কুরআন-হাদীসে ব্যাপকভাবে বর্ণিত হয়েছে, যা এ সংক্ষিপ্ত পরিসরে লিখে শেষ করা দুষ্কর। তাই আসুন, আমরা মাহে রমজানকে সামনে রেখে আত্নশুদ্ধি অর্জন করি এবং বিগত দিনের কৃত সকল পাপ-পঙ্কিকলতা মার্জনার জন্যে আল্লাহর দরবারে তাওবা করে মাগফিরাত কামনা করি, পরকালীন জীবনের অনাবিল শান্তি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে ধন্য হই। মহান আল্লাহপাক আমাদের সকলকে আমল করার তাওফিক দান করুন।